ঢাকা, ৯ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রথম পাতা

ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের নেপথ্যে

স্টাফ রিপোর্টার
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার
mzamin

ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনভর থেমে থেমে 
সংঘর্ষ চলতে থাকে। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের কারণে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

সরজমিন দেখা যায়, পৌনে বারোটার দিকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুরু হলে দুপুর ১টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। দুইটার দিকে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের দিক থেকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের সামনে এসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুপুর সোয়া দুইটার দিকে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের তাদের কলেজের সামনে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়। এদিকে টিচার্স কলেজের সামনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করেন। সংঘর্ষের এ ঘটনায় সায়েন্স ল্যাব মোড়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এরই মধ্যে দুপুরের পরে সিটি কলেজের নামফলক আবারও খুলে নেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।

কিছুক্ষণ শান্ত থাকার পর, দুপুর দুইটার দিকে আবারও দুইপক্ষ লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিআইপি নামে একটি বাসে ভাঙচুর চালান এবং পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে পুলিশ তাদের কলেজের ভেতরে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও তাদের কয়েকজনকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ দিকে সংঘর্ষ এড়াতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সিটি কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের প্রধান ফটকে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে এবং নামফলক উপড়ে ফেলে। এ সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ঘটনার একপর্যায়ে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিটি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে, এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যামপাসের ভেতরে পাঠিয়ে দেয়। এরপর ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা আবার কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। 

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সোমবার সাইন্সল্যাবে এলাকায় তাদের এক সহপাঠীকে মারধর করে কয়েকজন অজ্ঞাত যুবক। তাদের দাবি, ওই হামলাকারীদের একজন ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এই হামলা হয়েছে বলে তারা জানান। আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সকালে দলবদ্ধভাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের সামনে জড়ো হন।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসিন উদ্দিন বলেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবার, যখন সিভিল ড্রেসে কয়েকজন যুবক ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীকে মারধর করে। সকাল ১১টার দিকে সেই ঘটনার জের ধরেই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজে গিয়ে হামলা চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করায় কয়েকজন সদস্য আহত হন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এ এলাকায় ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে ইগোর কারণে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। 

ডিএমপি রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, সোমবার ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীর ওপর কয়েকজন যুবক হামলা চালায়। এতে ওই শিক্ষার্থী ফুটওভার ব্রিজ থেকে পড়ে যায় এবং মারাত্মক আহত হন। আমরা আগেই অনুমান করছিলাম পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, তাই উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। হঠাৎ করেই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আজকের ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তিনি বলেন, এমন ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সে জন্য উভয় কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চলছে। পুনরায় এমন সংঘর্ষ যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
 

পাঠকের মতামত

এখনকার শতকরা ৯৯ জন ছাত্রের জন্য ছাত্র রাজনীতির উদ্দেশ্য শুধু ক্ষমতার অপব্যবহার আর চাঁদাবাজি। রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ব্যবহার করে দুর্নীতিগ্রস্ত করে। এরা কোনদিন দেশের মঙ্গল বয়ে আনবেনা। তাহলে এই অপরাজনীতির দরকার কি ?

Citizen
২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:১৯ অপরাহ্ন

যখন ঢাকা কলেজ এই খানে স্থানান্তরিত হয় তখন সিটি,আইডিয়াল কলেজ ও এই এলাকায় এতো বানিজ্যিক ও আনাসন গড়ে উঠেনি।তাই সময়ের প্রয়োজন ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতায় আগামী দিনগুলোর কথা বিবেচনা করে বিজিবির সদর দপ্তর ঢাকা থেকে সরিয়ে সেই স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো সিরিয়ে নিন।কারন বিজিবি"র একটি বাহিনী রাজধানীর এমন জনবহুল এলাকায় থাকতে পারে না।যা পিলখানা হত্যাকান্ডের মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে।কারন জনবহুল এলাকা বলে সেনা অভিযান চালানো যায়নি।

ইকবাল কবির
২৪ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮:১৮ পূর্বাহ্ন

ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক।

Tanvir
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১:৫৪ অপরাহ্ন

অবিলম্বে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেছ অনিরদিরস কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হোক। যতদিন মারামারি চলবে ততদিন বন্ধ থাকবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনির আরও কঠিন হতে হবে। এদেরকে এই ভাবে জামাই আদর দিয়ে মারামারি, কাটাকটি, ভাংচুর কোন দিন বন্ধ করা যাবে না।

Muhammad Hussain
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

এই দুই কলেজ কে ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। সব ছাত্র লীগের কাজ।

Ahmed
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৯:১২ পূর্বাহ্ন

ছাত্র রাজনিতি নিসিদ্ধ করা উচিৎ

Rubayet
২৩ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status