শেষের পাতা
বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার
২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগ দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শান্তি কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে বলেন, শান্তিরক্ষী মিশনে আরও বেশি নারীর অংশগ্রহণকে আমি উৎসাহিত করি। বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী মিশনে সৈন্য সরবরাহকারী শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে একটি হিসেবে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। যেখানে ৫ হাজার ৬৭৭ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ১১টি সক্রিয় মিশনের ১০টিতে কাজ করছে। এ সময় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জানান, নারীদের শান্তিরক্ষায় সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে জাতিসংঘের নীতিমালা রয়েছে। আমরা নারীদের নির্দিষ্ট ভূমিকায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। এ সময় জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের (পিসিআরএস) পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুত পাঁচটি ইউনিটের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ প্রয়োজন অনুযায়ী আরও সৈন্য ও পুলিশ পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সদর দপ্তর এবং মাঠপর্যায়ে বাংলাদেশি নেতৃত্ব বৃদ্ধির পক্ষে মত দেন। জাতিসংঘ প্রতিনিধি বলেন, এ ব্যাপারেও তারা বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে। প্রধান উপদেষ্টা জানান, শান্তিরক্ষী নিয়োগে জাতিসংঘের যাচাই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ কঠোরভাবে মেনে চলে এবং প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতায় জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আরও সহযোগিতাকে স্বাগত জানায়, যাতে মানবাধিকার প্রতিপালন আরও জোরদার হয়। প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আগামী ১৩ থেকে ১৪ই মে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে। মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষ, সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা, বেসামরিক নাগরিক হতাহত এবং নাফ নদসংলগ্ন এলাকায় জীবিকা বিঘ্নিত হওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি সতর্ক করেন, এই অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা আরও অবনতি হয়ে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান জানান। প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে বলেন, তার এই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নতুন করে আশা যুগিয়েছে।