দেশ বিদেশ
মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ভেনেজুয়েলার গ্যাং গ্রুপের প্রত্যাবর্তন স্থগিত করলো
মানবজমিন ডেস্ক
২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবারভেনেজুয়েলার কথিত একটি গ্যাং গ্রুপকে প্রত্যাবর্তন স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওইসব ব্যক্তিকে অষ্টাদশ শতাব্দীর যুদ্ধকালীন আইনের অধীনে টেক্সাসের উত্তরে একটি বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে নাগরিক অধিকার বিষয়ক একটি গ্রুপ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাতে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, ওইসব ব্যক্তিকে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য, ভেনেজুয়েলার অভিযুক্ত গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের এল সালভাদরের কুখ্যাত বিশাল এক কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি ১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমি অ্যাক্ট-এর আশ্রয় নিয়েছেন। এই আইনের অধীনে দেশি হোক বা শত্রু রাষ্ট্রের নাগরিক যে-ই হোক না কেন তাকে আটক ও ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে প্রেসিডেন্টকে। এক্ষেত্রে নিয়মিত আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া প্রেসিডেন্ট আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। ওদিকে এর আগে অনলাইন আল জাজিরার এক খবরে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার কথিত গ্যাং সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দেশ থেকে বের করে না দেয়ার নির্দেশ অমান্য করার কারণে আদালত অবমাননার ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফেডারেল বিচারক জেমস বোয়েসবার্গ বুধবার এমন কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ওইসব ব্যক্তিকে তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়ার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে দেয়া হয়নি। দেশ থেকে বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে ওইসব ব্যক্তিকে তাদের অধিকার চর্চার সুযোগ দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে আদালতের রায় যথাযথ পালন না করার কারণ সম্পর্কে এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে জবাব দিতে সময় দেন বিচারক বোয়সবার্গ।
ওদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে এলিয়েন এনিমি অ্যাক্ট প্রয়োগ করছেন তা এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র তিনবার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি সময়ই তা ব্যবহার হয়েছে যুদ্ধের সময়। প্রথমে তা ব্যবহার করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ওই সময় জাপানি বংশোদ্ভূত লোকজনকে বিচার ছাড়াই আটক রাখা হয়। পরে বন্দিশিবিরে পাঠিয়ে দেয়া হয় হাজার হাজার মানুষকে। জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসন বিষয়ক ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে তিনি আইনি প্রচুর বাধার মুখেও পড়েছেন। ভেনেজুয়েলার গ্যাং ট্রেন ডি আরাগুয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্প অভিযোগে বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে আক্রমণ বা লুণ্ঠনমূলক অনুপ্রবেশ ঘটনানোর চেষ্টা করছে। তারা হুমকি দিচ্ছে। ভেনেজুয়েলার মোট ২৬১ জন এমন সদস্যকে ৮ই এপ্রিল এল সালভাদরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১৩৭ জনকে সরিয়ে দেয়া হয় এলিয়েন এনিমি অ্যাক্টের অধীনে। এই প্রত্যাবর্তন অস্থায়ীভাবে ১৫ই মার্চ আটকে দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তবে ৮ই এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট তার প্রাথমিক রায়ে বলে, এলিয়েন ইনিমি অ্যাক্ট ব্যবহার করে কথিত গ্যাং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তাদের আইনি চ্যালেঞ্জের সুযোগ দিতে হবে। শনিবারের রায়ে বলা হয়েছে, টেক্সাসের উত্তরে ভেনেজুয়েলার যেসব বন্দিকে রাখা হয়েছে তাদের ইংরেজি ভাষায় অত্যাসন্ন প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবাটিজ ইউনিয়ন প্রশাসনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছে, ওইসব ব্যক্তিকে বলা হয়নি তারা আদালতে আপিল করতে পারবেন। ফলে আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া কয়েক ডজন বা কয়েক শত মানুষকে এল সালভাদরে সম্ভাব্য যাবজ্জীবন শাস্তি দেয়া হতে পারে। সেখানে আইনি চ্যালেঞ্জের কোনো বাস্তব সুবিধা নেই। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ক্লারেন্স থমাস ও সামুয়েল আলিতো প্রশাসনের সঙ্গে শনিবার দ্বিমত পোষণ করেছেন।