বিশ্বজমিন
অনার কিলিং, পাকিস্তানি পিতামাতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ইতালিতে
মানবজমিন ডেস্ক
(৮ ঘন্টা আগে) ১৯ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৮:৫৭ অপরাহ্ন

অনার কিলিং বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যা যেন পাকিস্তানের নৈমিত্তিক ঘটনা। ২০২১ সালে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটান ইতালিতে বসবাসকারী পাকিস্তানি এক পরিবার। তাদের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা মিলে হত্যা করে ১৮ বছর বয়সী সামান আব্বাসকে। এ ঘটনায় ওই তার পিতামাতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। শুক্রবার ওই রায় বহাল রেখেছে ইতালির একটি আপিল কোর্ট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। ওই ঘটনায় ইতালির অনেক অভিবাসী হতবাক হয়ে পড়েন। উল্লেখ্য, নিখোঁজ হওয়ার ১৮ মাস পর ২০২২ সালে একটি ফার্ম হাউসে সামানের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ওই হত্যা মামলায় সামানের পিতা শাবির আব্বাস, মাতা নাজিয়া শাহীন ও দুই কাজিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। সামানের চাচা দানিশ হাসনাইনকেও ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর আগে তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। অভিবাসী নারী যারা পরিবারের মতে বিয়ে না করায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের ওপর করা তদন্তের ভিত্তিতে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের রেজিও এমিলিয়ার ওই মামলা বেশ হাই প্রোফাইল মামলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
ইতালির প্রসিকিউটরা দাবি করছেন, সামানকে ২০২১ সালের ১লা মে হত্যা করা হয়। এর কিছুদিন পর তার পরিবার মিলান থেকে পাকিস্তান চলে যায়। পরবর্তীতে তার পিতাকে পাকিস্তান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিচারের জন্য ইতালিতে প্রত্যর্পণ করা হয়। তিন বছর পলাতক থাকার পর গত বছর মে মাসে তার ‘মা’ কে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বিচারের সম্মুখীন হন সামানের চাচা, দুই কাজিন , পিতা ও মাতা। সামানকে কিশোরী বয়সে পাকিস্তান থেকে ইতালি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে দ্রুত পশ্চিমা সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাথার স্কার্ফ নেয়া বন্ধ করে দেন। নিজের পছন্দের ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কেও জড়ান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমিকের সঙ্গে তার ছবিও দেখা যায়। ইতালির তদন্তকারীদের মতে, সামানের প্রেমিকের বিষয়ে জানতে পেরেই চটে যায় তার পরিবার। কারণ তারা তাকে পাকিস্তানে এক কাজিনের সঙ্গে বিয়ে দিতে চান। সামানকে সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ শে এপ্রিল জীবিত দেখা যায়। ইতালি ২০১৯ সালে কোনো ইতালিয় নাগরিক বা বাসিন্দাকে জোর করে বিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে পারিবারিক সহিংসতা আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে।