ঢাকা, ২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

হাঁটুতে আঘাতের পর করণীয়

অধ্যাপক ডা. জি এম জাহাঙ্গীর হোসাইন
১৪ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার

শরীরের বড় ও ওজন বহনকারী জোড়াগুলোর মধ্যে হাঁটু অন্যতম। হাঁটুর জোড়া তিন হাড়ের সমন্বয়ে গঠিত। হাঁটুতে চারটি প্রধান লিগামেন্ট ও দুটি মেনিসকাস (তরুণাস্থি) থাকে। লিগামেন্ট হলো ইলাসটিক টিস্যু, যা এক হাড়কে অন্য হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে, জোড়ায় শক্তি প্রদান করে, হাড়ের নড়াচড়ায় অংশগ্রহণ করে এবং জোড়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে। মেনিসকাস শরীরের ওজন সমভাবে উরুর হাড় থেকে পায়ের হাড়ে সরবরাহ করে, হাড়ের প্রয়োজনীয় নড়াচড়ায় সহায়তা করে এবং জোড়ার দৃঢ় অবস্থা বজায় রাখে। আঘাতে হাঁটুর লিগামেন্ট ও মেনিসকাস ইনজুরি হয়ে থাকে। ইনজুরিতে লিগামেন্ট বিস্তৃত হতে পারে এবং আংশিক বা সম্পূর্ণ ছিঁড়ে যেতে পারে। হাঁটুর আঘাতের জন্য মেনিসকাসের বিভিন্ন ধরনের ইনজুরি ছাড়াও মেনিসকাস আংশিক বা সম্পূর্ণ টিয়ার হতে পারে।
কারণ: হঠাৎ মোচড়ানো গতি। আঘাত, রিকশা থেকে পড়ে গেলে, গাড়ি দুর্ঘটনা, খেলোয়াড়দের মাঝে হাঁটুর মোচকানো ইনজুরিতে ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট টিয়ার বেশি হয়। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় এক স্টেপ ভুল করলে। হাঁটুর বাইরের পার্শ্বে সরাসরি আঘাত। ৭০ শতাংশ ব্যক্তির এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরির সঙ্গে মেনিসকাস ইনজুরি থাকে।
লক্ষণ: তীব্র ব্যথা, পরে আস্তে আস্তে ব্যথা কমে আসে। ব্যথা হাঁটুর বাইরে পার্শ্বে এবং পেছনে অনুভূত হবে। হাঁটু ভাঁজ বা সোজা করতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়, আঘাতের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যেই হাঁটু ফুলে যায়। ফুলা ও ব্যথার জন্য হাঁটু নড়াচড়া করা যায় না। আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারবে। বেশিক্ষণ বসলে হাঁটু সোজা করতে কষ্ট হয়। অনেক সময় হাঁটু আটকে যায়, রোগী হাঁটুকে নড়াচড়া করিয়ে সোজা করে। উঁচু নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে এবং বসলে-উঠতে কষ্ট হয়। হাঁটু অস্থিতিশীল বা ছুটে বা ঘুরে যাচ্ছে, এ রকম মনে হবে। দীর্ঘদিন যাবৎ লিগামেন্ট ইনজুরি থাকলে হাঁটুর পেশি শুকিয়ে এবং শক্তি কমে যায়।
চিকিৎসা: হাঁটুর লিগামেন্ট বিস্তৃত (স্ট্রেস) ইনজুরি ও মেনিসকাসের ক্ষুদ্র ইনজুরি হলে প্রাথমিক চিকিৎসায় ভালো হয়। ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরি হলে নতুন করে লিগামেন্ট তৈরি করতে হয়। এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট তৈরি করা জরুরি। কারণ এটা করলে হাঁটুতে তাড়াতাড়ি ওসটিওআর্থ্রাইটিস হয়ে জোড়া নষ্ট হবে। হাঁটুর বাইরে থেকে টেনডন নিয়ে ছোট দুটি ছিদ্র দিয়ে আর্থ্রোস্কোপ যন্ত্র হাঁটুতে প্রবেশ করিয়ে নতুন লিগামেন্ট তৈরি করা হয়। বড় ধরনের মেনিসকাস ইনজুরি হলে রিপেয়ার বা রিমোভ করা হয়। আর্থ্রোস্কোপিক সার্জারির পর নিয়মিত ও পরিমিত পরিচর্যায় রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
 

লেখক: অধ্যাপক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ হাড় ও জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রোস্কোপিক সার্জন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা। 
চেম্বার: বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল লি., শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা-১২০৭। 
হটলাইন-১০৬৩৩, ০১৭৪৬৬০০৫৮২।

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status