শেষের পাতা
ব্রয়লারে স্বস্তি, মাছ-সবজির বাজার চড়া
স্টাফ রিপোর্টার
১২ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
এ বছর রমজান জুড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম ছিল তুলনামূলক সহনীয়। দু’একটি পণ্য ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাজার ছিল
স্থিতিশীল। ঈদুল ফিতরের পর এখনো পুরোপুরি জমে উঠেনি রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলো। তবে ঈদ পরবর্তী সবজি আর মাছের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে মাছ ও সবজি। অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম দুইশ’র নিচে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বেশির ভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়েছে। নতুন করে কিছু কিছু সবজি এখন বাজারে আসছে। যে কারণে দাম কিছুটা বেশি, তবে তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নয়। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার ও মিরপুর-১০ কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি ৮০০ টাকা, খাসি এক হাজার ১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে বড় ইলিশ দুই হাজার টাকা ও ছোট ইলিশ এক হাজার ৩০০ টাকা কেজিতে, রুই মাছ আকার ভেদে ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতলা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়। এ ছাড়া ডিম কেস প্রতি ২৮৫ টাকা এবং হালিতে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। সোনালী মুরগির কেজি এখন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০০ টাকার উপরে।
নবিল হোসেন মাংসের দোকানের বিক্রেতা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, বাজারে গরুর মাংসের দাম বাড়েনি। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ক্রেতা কম। আমরা ডাকাডাকি করে বিক্রি করছি। ফলে দেখা যায় পরিচিত কেউ আসলে একটু কমবেশি রাখা যায়। আমরা দেশি ষাঁড় গরু জবাই করে থাকি।
সবজির বাজার একটু চড়া অন্যান্য দিনের তুলনায়। বিক্রেতারা বলছেন, এখনো সব মানুষ ঢাকায় আসেনি। যার কারণে বাজারে তেমন আগের মতো ভিড় দেখা যাচ্ছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে কাওরান বাজারে ভিড় সবসময় লেগেই থাকে। সবজির বাজারে একটু দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে মৌসুম শেষ বলে জানাচ্ছেন তারা।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, টমেটো ৪০ টাকা, পটল আকার ভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, বেগুন গোলটা ৫০ ও লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, দেশি রসুন ১২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ২৪০ টাকা, পিয়াজ ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কাওরান বাজারে বাজার করতে আসা আফজাল হোসেন বলেন, রমজানে সবজির বাজার স্থিতিশীল ছিল। আমরা আশা করছি ঈদ পরবর্তীতেও বাজার এমনই থাকবে। তবে কিছুটা বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। যে আলু ৪/৫ দিন আগেও ২৫ টাকায় কিনেছি। সেই আলু ৩০ টাকা এখন।
মিরপুর-১০ কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা আলী হযরত বলেন, দাম সব জায়গায় প্রায় একই। তবে মাছের দাম একটি বেশি। তার থেকে মুরগির দাম কমেছে। ব্রয়লারের দাম কমায় মাছের থেকে ব্রয়লার বেশি কিনছি এখন। তবে বাজারে বৈশাখকে সামনে রেখে ইলিশের দাম বাড়ছে।
একই বাজারে আকলিমা খাতুন সুমি বলেন, রমজানে বাজার যেমন ছিল, তেমন থাকলেই স্বস্তি। আমরা গ্রাম ছেড়ে চাকরির সুবাধে ঢাকায় থাকি। অল্প বেতনে স্বামী চাকরি করেন। বাজারে সবকিছুর দাম নাগালের মধ্যে থাকলে তো আমারও ভালো লাগে, তখন বাজার করা নিয়ে বিড়ম্বনা পোহাতে হয় না।
মিরপুর বাজারে সবজি বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, মূলত শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। ফলে ওইসব সবজির সরবরাহ বাজারে তুলনামূলক অনেক কম। এ ছাড়া অনেক সবজির মৌসুম কেবল শুরু হয়েছে। পরিপূর্ণভাবে এসব সবজি বাজারে আসতে শুরু করলে এগুলোর দামও কমে যাবে। মূলত ঈদের সময় বাজারে সবজি সরবরাহের গ্যাপ সৃষ্টি হয়, সেকারণেই সবজির দাম কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে।