দেশ বিদেশ
১৬ই এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ বিএনপি’র
স্টাফ রিপোর্টার
১০ এপ্রিল ২০২৫, বৃহস্পতিবারজাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ, সংস্কার প্রক্রিয়া, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হলে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ১৬ই এপ্রিল তাদের সময় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই এ বিষয়ে কথা বলবো। আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুর্নিদিষ্টভাবে আগামী ডিসেম্বরের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ অবশ্যই চাইবো। যাতে উনি ক্লিয়ারলি জাতির সামনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় আমরা খেয়াল করেছি। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেষ্ট লেখালিখি হচ্ছে। বিএনপি কি ধর্ম নিরপেক্ষতায় ফেরত গেল? এখানে মিস ইন্টারপ্রেট করা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে দু’টি স্প্রেডশিট আমাদের দেয়া হয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে। এটা আসলে একটা অপূর্ণাঙ্গ বিষয়। কারণ আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবো বলেছিলাম এবং জমা দিয়েছিও। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, যেটার ৪৫ থেকে ৭২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রায় ১০৫টা সুপারিশ আছে। সেটার প্রত্যেকটির অ্যাড্রেস করে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। স্প্রেডশিট যেভাবে হ্যাঁ-না জবাব দিতে বলা হয়েছে, সেটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। সেটা আমরা সেদিনই উল্লেখ করেছি। সালাহউদ্দিন বলেন, স্প্রেডশিটের আইটেম নম্বর ৫, ৬ ও ৭-এ সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে উনারা যেটা বলেছেন-সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কথা বলেছেন, সাম্য মানবিক মর্যাদা ইত্যাদির কথা বলেছেন। কিন্তু বহুত্ববাদসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে আমরা একমত নই এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে, আর সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে আমরা একমত নই। এরপরে আমাদের মন্তব্য দিয়েছি। সেই মন্তব্যটা আর কেউ এখানে উল্লেখ করেনি। মন্তব্যটা হচ্ছে, আমরা সংবিধানের প্রস্তাবনার অংশে, আমরা সংবিধানের প্রস্তাবনার কি চাই- সেটা উল্লেখ করেছি। পঞ্চদশ সংশোধনী পূর্ব অবস্থা বহাল চাই। প্রশ্ন আসতে পারে পঞ্চদশ সংশোধনী পূর্ববর্তী, অর্থাৎ ত্রয়োদশ, চতুর্দশ সংশোধনীতে যা ছিল-মূলত এটা পঞ্চম সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সময়ে যেটা গৃহীত হয়, সেটা বাকশালকে বিলোপ বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। সেই সংবিধানের প্রস্তাবনাকে আমরা এপ্রুভ করি।
সেটাই আমরা বহাল চেয়েছি।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন সেটার মধ্যে আছে, মহান আল্লাহ’র উপরে আস্থা, বিশ্বাস। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র- অর্থাৎ সামাজিক, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার। সেটা আমরা বহাল চেয়েছি। সেই প্রস্তাবনার পুরোটা আমরা ওই ভাবে জবাব দিয়েছি যে, আমরা এটা চাই।
বিএনপি’র এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলো, ৮-৯-১০ এবং ১২, এই অনুচ্ছেদগুলোতে বিধৃৃত আছে, সেই অনুচ্ছেদগুলোর বিষয়ে সংস্কার কমিশন থেকে যে সুপারিশ করা হয়েছে, সেখানেই একই বিষয়গুলো তারা রিপ্রেস করতে চেয়েছেন। যেমন একটা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদি এগুলো বিলুপ্ত করা হোক। এখন বিভ্রান্তি তো এই জায়গায়। আমরা সেখানে বলেছি একমত নই। কিন্তু আমরা এই চাই। আমরা চেয়েছি, পঞ্চম সংশোধনীতে যেটা গৃহীত হয়েছে- যেটা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্ব অবস্থায়, সেটা বহাল করা হোক, সেটা চেয়েছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ন্যাশনাল কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিল, যেটা তারা এনসিসি নামে অবহিত করেছেন। সেই ব্যবস্থাই তো আমরা স্বীকার করি না। এরকম নতুন ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদাবলীতে পদায়ন করে, এগুলো যদি হয় তাহলে আর এক্সিকিউটিভ এবং লেজিসলেচালের (ষবমরংষধঃঁৎব) কোনো গুরুত্ব থাকবে না। সেই ব্যবস্থা আমরা এপ্রুভ করিনি। আর এনসিসির মাধ্যমে জরুরি অবস্থার প্রবর্তনের জন্য যে কথাটা বলেছেন, একে তো আমরা এনসিসি মানি না। দ্বিতীয়, জরুরি অবস্থা জারির সময়ে তারা যে প্রস্তাব করেছেন যে, মানুষের যে সমস্ত মৌলিক অধিকার স্থগিত থাকে সেগুলো স্থগিত থাকবে না। জরুরি অবস্থার মানে কি? জরুরি অবস্থার মানে হলো- কিছু কিছু অধিকার স্থগিত থাকবে। সেজন্য আমরা বলেছি, এটা বাস্তবায়ন নয়। সে বিষয়ে আমরা একমত হতে পারলাম না।