দেশ বিদেশ
জামায়াত নেতা আজহারের ফের আপিল শুনানি আজ
স্টাফ রিপোর্টার
৮ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবারমানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগে ফের শুনানি হবে।
গত মঙ্গলবার প্রথম দিনের মতো শুনানি শেষ হয়েছে। সেদিন এটিএম আজহারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলার রিভিউ থেকে উদ্ভূত আপিল মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।
আজকে আমাদের পক্ষের শুনানি প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি ১০ ভাগ শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হবে। এদিন শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনটি এক নম্বর আইটেম হিসেবে কার্য তালিকায় থাকবে।
প্রথম দিনের শুনানিতে যা বলেন: রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে জামায়াতের নেতৃবৃন্দের ফাঁসি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কার্যকর করা হয়েছে বলে আদালতকে জানান শিশির মনির। আজহার সাহেবের ফাঁসি কার্যকর করার জন্যও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে রায় দেয়া হয়েছিল। যাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোনো থানায় একটা সাধারণ ডায়েরিও ছিল না। চাক্ষুস যেসব সাক্ষীর ভিত্তিতে এটিএম আজহারকে সাজা দেয়া হয়েছে সেগুলো বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। এসব সাক্ষীর অনেকেই ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার দূর থেকে দেখেছেন। যা বৈজ্ঞানিকভাবে একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এসব সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ফাঁসি দেয়াটা আইনত ঠিক হয়নি। এমনকি এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ঠিকমতো হয়নি। পুলিশের কাছে দেয়া ১৭ জন সাক্ষী আদালতে এসে সাক্ষ্য দেয়নি। পুলিশের কাছে দেয়া সাক্ষীকে আদালতের সাক্ষী দিয়েছে মর্মে গ্রহণ করা হয়। ফলে আসামিপক্ষ সাক্ষীদের ক্রসচেক করার সুযোগ পায়নি। যাদের ক্রসচেকের সুযোগ হয়েছে, তাদের অনেকেরই আদালতের বক্তব্যের সঙ্গে মামলার আইও’র কাছে দেয়া স্টেটমেন্টের মিল পাওয়া যায়নি। সাক্ষীরা আদালতে না আসা সত্ত্বেও আমাদের কোনো কন্ট্রাডিকশন নিতে দেয়া হয় নাই।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলাম। এ ছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১শে অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। ওই দিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রয়াত খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পাঠকের মতামত
সত্যের জয় হবেই। মিথ্যা নিপাত যাক। এই গুলি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের মিথ্যা মামলায় অনেককে ফাসি দিয়েছে, বাকি আছেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। মহান আল্লাহ উনাকেসহ সবাইকে বেকসুর খালাস দিক এটাই কামনা করছি। আমিন।