দেশ বিদেশ
সর্বদলীয় বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতির ব্যাখ্যা, সীমান্তবর্তী দুই রাজ্যে হাই এলার্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা
৯ মে ২০২৫, শুক্রবার
পাকিস্তানে সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে যান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সরকারের একটি সূত্র অনুযায়ী, ভারত-পাক সীমান্তে কী পরিস্থিতি রয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা করেন ডোভাল।
ওই সূত্রের দাবি, পাকিস্তান যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলিবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে, তা-ও প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়। সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গ্রামগুলো লক্ষ্য করে গোলা এবং গুলিবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। বুধবার গভীর রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুল্লা, উরি এবং আখনুর এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে গুলিবিনিময় হয়েছে। চারটি জেলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মর্টার শেলিং এবং গুলিবর্ষণে তিন নারী ও তিন শিশুসহ কমপক্ষে ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৫১ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের দিকের হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি। পুঞ্চ সেক্টরে বুধবার এক ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে পাক বাহিনীর গুলিতে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী দুই রাজ্য পাঞ্জাব এবং রাজস্থানে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। দুই রাজ্যেই সমস্ত পুলিশকর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুই রাজ্যের সঙ্গে পাকিস্তানের যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বিমান বাহিনীকে। এর পাশাপাশি সীমান্তে সন্দেহজনক কিছু দেখলেই বিএসএফ’কে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শুরু হয় সর্বদল বৈঠক।
এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। সর্বদলীয় বৈঠকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে কীভাবে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে প্রত্যাঘাত করা হয়েছে, তা তুলে ধরা হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠকে দাবি করেন, সিঁদুর অভিযানে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছেন। এই সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য প্রভাব, যেকোনো পাক হামলার জবাবে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, এস জয়শঙ্কর, জে পি নাড্ডা এবং নির্মলা সীতারমনসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, তৃণমূল কংগ্রেসের সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিএমকে’র টিআর বালুর মতো বিরোধী নেতারা। ভারতের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন দলের নেতারা কিছু পরামর্শও দেন। আমরা যখন একসঙ্গে কাজ করছি, তখন সকল নেতাই পরিপক্বতা দেখিয়েছেন। তিনি জানান, অপারেশন সিঁদুরের জন্য সকলেই সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশংসা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, আমরা সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করছি। আমরা কিছু পরামর্শও পেয়েছি। বৈঠক শেষে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, আমরা পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি এবং খাড়গেজি যা বলেছেন তা সঠিক- কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে আলোচনা করা উচিত নয়। সবাই কেবল তাদের সমর্থন দিয়েছে।