ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

দেশ বিদেশ

প্রতিষ্ঠার কয়েক যুগেও মেলেনি সরকারি বরাদ্দ

জরাজীর্ণ ঘরেই স্বপ্ন বুনছেন শিক্ষার্থীরা

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
৯ মে ২০২৫, শুক্রবার
mzamin

কয়েকটি জীর্ণ কক্ষে গাদাগাদি করে বসে আছে শিক্ষার্থীরা। ঝড়ে উপড়ে নিয়ে গেছে ঘরের চালা। ভেঙে পড়েছে ভাঙা বাঁশের পালা ও টিনের চালাসহ দরজা-জানালা। সামান্য বৃষ্টি হলেই বেহাল অবস্থা হয় ক্লাস রুমের। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন। জরাজীর্ণ ঘরেই ঝুঁকি নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা থাকছেন উদ্বেগে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কুড়াখাল-কুরুণ্ডি দাখিল মাদ্রাসার নিত্যদিনের ঘটনা এসব। জানা যায়, ১৯৯৫ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ৭৮ শতক জমিতে কুড়াখাল-কুরুণ্ডি দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা হলেও সরকারি কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় নতুন শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা হয়নি। অফিস সূত্রে জানায়, ১৯৯৫ সালে এলাকার বিদ্যোৎসাহী নিজ উদ্যোগে ৭৮ শতক জমি দানপূর্বক প্রতিষ্ঠা করেন কুড়াখাল-কুরুণ্ডি দাখিল মাদ্রাসা। ৭ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। গত ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি ও শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু অবকাঠামো উন্নয়নে এখনো সরকারি কোনো বরাদ্দ মেলেনি। যে কারণে শিক্ষার্থী বাড়লেও সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, প্রতি ক্লাসে ৫-৬টি বেঞ্চ বসানোর মতো জায়গা নেই। তার ওপর ছেলে ও মেয়েদের আলাদাভাবে বসানোয় বেঞ্চে ৫-৬ জন করে বসতে বাধ্য হচ্ছে। মাদ্রাসার অফিস সহকারী মো. অলিউল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের দাবি জানিয়েও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে সন্তানদের দূরের মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে যেমন ভোগান্তি বাড়ছে, তেমনি ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায় শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। 

সরজমিন দেখা গেছে, মাদ্রাসাটির ফলে ২ টিনশেড ঘরে মাত্র ৫টি কক্ষে চলছে ৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর লেখাপড়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাঁশের বেড়া আর টিনের চালের ২টি ঘরে কয়েক বছর ধরে কোনো রকমে পাঠদান চালালেও এখন সেগুলোও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই দুরবস্থা বিরাজ চরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রউফ আন্‌ছারুল্ল্যাহ ও মো. রমিজ উদ্দিন এবং স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, তিন কিলোমিটার আশপাশের কোনো গ্রামে কোনো মাদ্রাসা নেই। এ কারণে এলাকার স্বার্থে আমার বাবা মাদ্রাসাটি গড়ে তোলেন। মাত্র ৩ রুমের একটি টিনশেড ঘর দিয়ে যাত্রা শুরু। প্রথম দিকে সমস্যা না হলেও মাদ্রাসা উন্নীত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ায় আসনের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে ৪ জন শিক্ষক নিয়ে এই স্বল্প পরিসরে ক্লাস করানো দুরূহ হয়ে পড়েছে। সমস্যা বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শরণাপন্ন হয়েও কোনো সমাধান পায়নি। অনতিবিলম্বে নতুন শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করা না হলে দুর্বিষহ অবস্থা আরও বাড়বে বলে জানান তারা। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল জসিম উদ্দিন বলেন, ক্লাস রুমগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকবার লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। গত ১৮ বছরে আমি কোনো সরকারি বরাদ্দ পাইনি। জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের আশু সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status