প্রথম পাতা
এক্সক্লুসিভ
হান্নানের সম্পদের খোঁজে দুদক
মারুফ কিবরিয়া
২৮ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) শেখ আব্দুল হান্নানের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি লাপাত্তা। বিমান বাহিনীতে থাকা অবস্থায় নামে-বেনামে সম্পদ গড়েছেন বলে একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে। সেসব অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরই মধ্যে রাজধানীতে তার একটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছে অনুসন্ধান দল। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র বলছে, বিমান বাহিনীতে চাকরি থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন শেখ আব্দুল হান্নান। গত ৫ই ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হলেও এবার সম্পদের খোঁজ করছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, সংস্থাটির উপ-পরিচালক তানজির হাসিব সরকারের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন হয় শেখ আব্দুল হান্নানের সম্পদ অনুসন্ধানে। দুদকের কাছে অভিযোগ ছিল রাজধানীর নিকুঞ্জে দুটি ফ্ল্যাটের মালিক সাবেক এই বিমান বাহিনী প্রধান। কিন্তু অনুসন্ধান দল সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে দুটি ফ্ল্যাট নয়। পুরো চারতলা ভবনই শেখ আব্দুল হান্নানের।
দুদকের অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, বিমান বাহিনীর এই সাবেক প্রধানের আরও সম্পত্তি রয়েছে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। সাত তলাবিশিষ্ট এই বাড়িটি শেখ আব্দুল হান্নানের নামে না থাকলেও তিনিই অর্থায়ন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত বাড়িটির মূল্য নির্ধারণ করতে পারেনি দুদক।
অনুসন্ধান দলের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানান, চলতি মাসে অনুসন্ধান শুরুর পরপর জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত চিঠির জবাব আসেনি। তবে শেখ আব্দুল হান্নানের ধারণার বাইরেও অনেক সম্পদ রয়েছে বলে মনে করছে অনুসন্ধান দল।
দুদকের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তা পুরো অনুসন্ধানের জন্য পর্যাপ্ত নয়। চেষ্টা করছি- সব তথ্য এক করে একটি ভালো অনুসন্ধান শেষ করার।
দুদক সূত্র বলছে, বিমান বাহিনীর প্রধান থাকা অবস্থায় পুরনো ১৪টি ভবন এক আদেশে ভেঙে নতুন কাজের আদেশ দেন শেখ আব্দুল হান্নান। আর তার দায়িত্ব দেন একজন ঠিকাদারকে। সেই আদেশে ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি ছিল ‘কমিশন মানি’ ৫-৩০% পর্যন্ত। এ ছাড়া বাহিনীতে নিয়োগেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানের বিরুদ্ধে।
গত ৫ই ফেব্রুয়ারি অর্থ পাচারের অভিযোগে শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান সংবাদ সম্মেলনে।
মো. আক্তার হোসেন বলেন, বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধন, ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন। তার এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুদকের বিশেষ তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আড়ালে চলে যান শেখ আব্দুল হান্নান। দুদকের কর্মকর্তাদের ধারণা বিমান বাহিনীর সাবেক এই প্রধান বর্তমানে কাতারে অবস্থান করছেন। তার এক সন্তান কানাডায় পড়াশোনা করেন।
পাঠকের মতামত
কি অদ্ভুত! সরকার পতনের পরপরই বায়তুল মোকাররমের খতিব,বিমান বাহিনী প্রধানসহ সব মন্ত্রী,আওয়ামী লীগের সব নেতারা আত্মগোপনে চলে গেলো,কতটা অপরাধী হলে এমনটি হতে পারে। কি বিচিত্র এই দেশ,সেলুকাস??
যেমন ছিল দেবী তেমন তার একেকজন দেব!! ভালদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কিন্তু এসব অযোগ্য চোর বাটপারদের হাতের মুঠোয় রাখা যায় ! ভাগ বাটোয়ারাতেও সুবিধা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান এম আজিজের কী খবর? সে তো দুর্নীতিবাজদের গডফাদার।
তার সম্পত্তি জব্দ করা হোক।
Another Sheikh! We don't expect anything better.