খেলা
১৩ ম্যাচ পর মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে ‘হাসি’
স্পোর্টস রিপোর্টার
৮ আগস্ট ২০২২, সোমবার
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ের শুরুতে ৭১ রানের জুটি দুর্দান্তই বলা যায়। তবে ছন্দ পতন হতেও সময় লাগেনি। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৫০ ছুঁয়ে আউট। এরপর এনামুল হক বিজয়কে দুর্ভাগা বলা যায়। রান আউট হয়ে তিনিও সাজঘরে। এখানে শেষ নয়, মুশফিকুর রহীম ও নাজমুল হোসেন শান্তও ক্রিজে টিকলেন না বেশিক্ষণ। দলীয় ১৪৮ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন। শঙ্কা যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ের ঠিক তখনই দলের হাল ধরলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সঙ্গী হলেন তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব। ব্যাট চালিয়ে ৪১ বলে সমান রান করে আউট হলেন আফিফ। তবে ৮২ বলে ৮১ রানের জুটিতে দলকে ২৫০ ঘরে নিয়ে গেলেন তারা। বাকি সময়টা রিয়াদের ব্যাটেই ভরসা। শুরুটা ধীর গতির হলেও শেষ পর্যন্ত ৮৪ বলে ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন মাহমুদুল্লাহ। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩ ম্যাচ পর অর্ধশতক পেলেন তিনি। ২১১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ২৬তম ফিফটি। দ্বিতীয় ম্যাচে তিনশ’ না হলেও দল বড় পুঁজি পায় তার ব্যাটেই। গতকাল হারারেতে ইনিংস শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৯০/৯-এ। আগের ম্যাচে ৩০৩ রান করেও হার দেখেছিল দল। প্রথম ম্যাচে ৮১ রান করার পর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন লিটন কুমার দাস। দারুণ ফর্মে থাকা এই ওপেনার ছিটকে গেছেন পুরো সফর থেকেই। মাংসপেশিতে টান লাগায় আজ ফিরে আসছেন দেশে। তাই তিন বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়কে আবারো আনা হয় ওপেনিংয়ে। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে তিনি বিজয় তিন নম্বরে নেমে বিজয় খেলেন ৬২ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। গতকালও তার শুরুটা ছিল দারুণ। অধিনায়ক তামিমকে দারুণ সঙ্গও দিচ্ছিলেন। দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি, রান উঠেছে ওভারপ্রতি ৬ এর বেশি। ১০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ইনিংসের ৯ম ওভারে ভিক্টর নিয়াউচিকে চার মেরে জুটির ফিফটি পূর্ণ করেন তামিম। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে বিনা উইকেটে ৬২। তামিমের ৫০ রানের ৪৬ আসে বাউন্ডারি থেকে। হাঁকান ১০টি চার ও একটি ছক্কা। তবে তানাকা শিভাঙ্গার বলে পুল করতে গিয়ে ওই ৫০ রানেই থামেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৬ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন বিজয়ও। নাজমুল হোসেন শান্তর স্ট্রেইট ড্রাইভ বোলার শিভাঙ্গার হাত ছুঁয়ে স্টাম্প ভাঙে। পপিং ক্রিজ থেকে কিছুটা বাইরে ছিলেন বলে রান আউট হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন বিজয়। করেন ২৫ বলে ২০ রান। এরপর দলের হাল ধরতে এসে আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো মুশফিকুর রহীম বেশিক্ষ টিকে থাকতে পারেননি। যদিও একাদশে ফেরা নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে গড়ে তোলেন ৫০ রানের জুটি। কিন্তু ৩১ বলে ২৫ রান করে মুশফিক আউট হলে আবারো বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। একটু পরই শান্ত আউট হন হতশ্রী শট উপহার দিয়ে। রান তোলাতে টাইগারদের শুরুর দাপট হারায় তার ব্যাটে। আউট হওয়ার আগে ৫৫ বলে ৩৭ রান করেন শান্ত। দলে একের পর এক সুযোগ পেলেও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ এখনো তিনি দিতে পারেননি তিনি। তাই একাদশে সুযোগ পেলে তিনি বল নষ্ট করেছেন টিকে থাকার লড়াইয়ে। কিন্তু দলের রানের গতি বাড়াতে পারেননি। শান্ত ফিরলে ধীর গতির ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আফিফের সঙ্গে ৮১ রানের জুটিতেও খোলস বন্দী খাকেন দলের এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তবে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন আফিফ। ৪১ বলে ৪১ করার পর তাকে সাজঘরে ফেরান অফস্পিনার সিকান্দার রাজা। দলের দায়িত্ব নিতে এসে আক্রমণাত্মক শুরু করে বেশিক্ষণ টেকেননি মিরাজও। ১২ বলে ১৫ রান করে আউট হন মিরাজ। এরই মধ্যে রিয়াদ ৬৯ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। এরপরই খোলস ছেড়ে রান তোলায় দ্রুততা দেখান এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের অর্ধেকের বেশি সময় ক্রিজে টিকে রিয়াদ অপরাজিত ছিলেন ৮৪ বলে সমান তিনটি করে চার, ছক্কায় ৮০ রানে। তাইজুল ইসলাম ৪ বলে ৬ ও শরিফুল ইসলাম করেন দুই বলে ১ রান।