বাংলারজমিন
চট্টগ্রামে বিতর্কিত মুনিরিয়ার বিরুদ্ধে এবার মাদ্রাসা দখলের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৭ মার্চ ২০২৫, সোমবার
চট্টগ্রামের রাউজানে এবার একটি মাদ্রাসা দখলের অভিযোগ উঠেছে নানা কারণে বিতর্কিত মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির বিরুদ্ধে। ওই মাদ্রাসার সকল কার্যক্রম ওই যুব কমিটির নির্দেশে পরিচালনার হুমকি দিয়েছে তারা। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সকল টাকা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় গত ১০ই মার্চ শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাদ্রাসা সভাপতি জামাল হোসেন। গত ৪ঠা ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে বিনাজুরী এলাকায় কাগতিয়া মাইজপাড়া তালীমুল কোরআন মাদ্রাসা ও দারুল ইয়াতামা নামে এই মাদ্রাসাটিতে ভাঙচুর ও হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে।
জানা যায়, এই ঘটনায় গত ৭ই ডিসেম্বর মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির মুনির উল্লাহ, সোলায়মান, বোরহান, শাহাদাতসহ ১৩ জনের নামে ও অজ্ঞাত ৮/১০ জনের নামে রাউজান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জামাল হোসেন এ অভিযোগ করেন। কিন্তু রাউজান থানা এ ঘটনায় কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ কারণে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে বর্তমানে মাদ্রাসাটির শিক্ষকদের জিম্মি করে রেখেছে সংগঠনটির সদস্যরা। মাদ্রাসার সভাপতি জামাল হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আমি ২৬ বছর ধরে এই মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছি। মাদ্রাসা ভবনটি আমাদের পারিবারিক সম্পত্তির ওপর নির্মিত হয়েছে। হঠাৎ করেই মুনিরিয়া যুব তাবলীগের লোকজন নিজেদের ট্রাস্টি বোর্ডের নামে পরিচালনার কথা বলে দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত ৪ঠা ডিসেম্বর তারা বেআইনিভাবে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে নিজেদের সাইনবোর্ড লাগায়। পাশাপাশি তাদের নির্দেশে মাদ্রাসার সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে হুমকি দিয়ে যায়। তারা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক মাদ্রাসার সমস্ত অর্থ ও হিসাবনিকাশ নিয়ে ফেলে। মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকদেরও জিম্মি করে রেখেছে তারা। জামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের আশ্র?য়ে থেকে এই মুনিরিয়ার লোকজন এলাকায় মানুষের জমি দখল করেছে অনেক। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। এদের কাজই হচ্ছে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক অন্যের জায়গা প্রতিষ্ঠান দখল করা। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তাই আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবরও অভিযোগ জানিয়েছি। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুনিরিয়া যুব তাবলীগ কমিটির মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. আবুল মনসুর বলেন, এই মাদ্রাসাটি বরাবরই কাগতিয়া দরবার পরিচালনা করে আসছে। মাঝখানে ৪-৫ বছর এবিএম ফজলে করিম গণ্ডগোল করার কারণে আমরা যখন দূরে ছিলাম, তখন মাস্টার জামাল মাদ্রাসার সঙ্গে শত্রুতা শুরু করে। এই সুবাধে সে মাদ্রাসা দখল করে নেয় এবং মাদ্রাসার নাম পরিবর্তনসহ অনেককিছু করে ফেলে। সেতো এটা করতে পারে না। মাদ্রাসা তো একটা ট্রাস্টের মাধ্যমে চলে এখন। পাঁচ বছরে এই দুষ্টুমিটা করছে সে। এই মাদ্রাসাটি দরবার থেকে পরিচালিত হয়, অনেক মানুষ এটার অংশীদার।