ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

চমেক হাসপাতালে ফিরে আসতে চান আওয়ামী লীগের দাপুটে সেই সর্দার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার

আওয়ামী লীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে কথায় কথায় কর্মচারীদের পেটাতেন তিনি। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভিন্ন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োজিত দালালদের আশ্রয় দেয়া তার মূল কাজ। মেডিকেলের খাবার সরবরাহে ছড়ি ঘোরানো থেকে শুরু করে দোকানপাট থেকে নিয়মিত বখরা আদায় করে সমালোচিত তিনি। তার কথামতো কাজ করে না দিলে কর্মচারীদের ওপর চলতো অত্যাচার। 

এমন নানা শৃঙ্খলা পরিপন্থি অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয় সিলেটে। কিন্তু তার ক্ষমতা এতোই বেশি ৬ মাস না যেতেই পুনরায় তাকে চট্টগ্রামে বদলির আদেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বলছিলাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সর্দার পদে অতীতে কাজ করা গাজী মো. ইলিয়াসের কথা। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর শৃঙ্খলা পরিপন্থি অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে তাকে বদলির সুপারিশ করেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। এ সুপারিশ অনুযায়ী তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু কয়েকমাস যেতে না যেতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও বদলি হয়ে এসেছেন। ইতিমধ্যে ২৫শে ফেব্রুয়ারি তিনি চমেক হাসপাতালে যোগদান করেছেন। তাকে নিয়ে রোগী ও রোগীর স্বজন এবং কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, চমেক হাসপাতালকে আবারও অনিয়মে ডুবাবে সর্দার গাজী ইলিয়াছ। সূত্রমতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করে অফিস আদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়। 

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দিনের একচ্ছত্র প্রভাব খাটিয়ে চলতেন গাজী মো. ইলিয়াস। কথায় কথায় কর্মচারীদের মারধর করা ছিল তার স্বভাব। এসব ঘটনায় তদন্ত হয়েছে অনেকবার। শাস্তিমূলক বদলির সুপারিশও হয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সর্দার পদে চাকরি থাকলেও কখনোই এই দায়িত্ব পালন করেননি গাজী ইলিয়াস। বিভিন্ন ওয়ার্ডে তদবির করা ছিল তার দায়িত্ব। তার কথামতো না চললে কর্মচারীদের ওপর নেমে আসতো অত্যাচার। গত বছরের ৬ই আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এক কর্মচারীর ওপর হামলা করে হাত ভেঙে দেন গাজী মো. ইলিয়াস ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে কমিটি বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতিসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার সত্যতা পায়। কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠি লিখেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত সর্দার শৃঙ্খলা পরিপন্থি বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। চিঠিতে তাকে চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে বদলির জন্য তিনি অনুরোধ করেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, কয়েক মাস যেতে না যেতেই গাজী ইলিয়াছ আবারও এসেছেন চমেক হাসপাতালে। তার যোগদানের পর থেকে অনেকেই ভয়ে আছেন। কথায় কথায় গায়ে হাত  তোলেন, গালিগালাজ করেন এই ইলিয়াস। অভিযোগের বিষয়ে গাজী মোহাম্মদ ইলিয়াসের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. তসলিম উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, সে যদি আবারো অপকর্মে লিপ্ত হয়, অনিয়ম করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। বদলিটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি’র দপ্তর থেকে হয়। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। আমার কথা হচ্ছে- অনিয়ম, দুর্নীতি করলেই ব্যবস্থা নেবো।
 

পাঠকের মতামত

এখন আর এক দলের ছত্রছায়ায় করবে

জনতার আদালত
১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ৬:২৯ পূর্বাহ্ন

Why doesn't the authority fire this crook?

Nam Nai
১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ১:০০ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status