শেষের পাতা
মাগুরার শিশু ধর্ষণ মামলার বিচার শুরু হবে ৭ দিনের মধ্যে
স্টাফ রিপোর্টার
১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার
মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া শিশুর ধর্ষণ মামলার বিচার এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। বিশেষ ব্যবস্থায় বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। সাতদিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু হবে। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
বিগত সময়ের উদাহরণ টেনে আসিফ নজরুল বলেন, অতীতেও ধর্ষণ মামলার বিচারকাজ সাত থেকে আট দিনের মধ্যে শেষ করার নজির রয়েছে। এবারও সাত দিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু করা সম্ভব। এটি করতে পারলে বিচারক দ্রুততার সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারবেন। ড. আসিফ নজরুল বলেন, বেশ কিছু পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য রয়েছে। ডিএনএ টেস্ট পাওয়া যাবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। ফলে আশা করা যাচ্ছে, খুব দ্রুততার সঙ্গে মামলার বিচার হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। সাতদিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু হলে কতো দিনে শেষ হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন উপদেষ্টা বলেন, সাতদিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু হলেও কতো দিনে শেষ হবে, তা বলতে পারছি না। তবে সাত থেকে আট দিনে বিচারকাজ শেষ করার নজির রয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা নতুন একটি আইন করছি। আশা করা হচ্ছে রোববার বা সোমবার নতুন আইন তৈরি করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় শিশু ধর্ষণ ও বলাৎকারের ঘটনার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। আসিফ নজরুল বলেন, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কাজ হবে শিশু ও বলাৎকারের ঘটনার বিচার করা; যাতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া যায়। আগামী রোববারের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের গেজেট প্রকাশ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ, যারা শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়, তাদের বিষয়ে আপনারা সজাগ থাকবেন। এই বিষয়ে কোনো ধরনের নৈরাজ্য বরদাশত করা হবে না। আমাদের কোনো ভুল-ত্রুটি থাকলে সুনির্দিষ্ট করে বলবেন। আমরা নিজেদের জবাবদিহি করবো। শিশু ধর্ষণের বিষয়ে আমাদের কোনো ভুল নেই। ভবিষ্যতে কোনো ভুল হলে সংশোধন করবো। ধর্ষণ ব্যক্তির ঘটনা হলেও রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে। আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, সরকারের বিন্দুমাত্র অবহেলা নেই। সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, সব বিচার রাষ্ট্র করতে পারবে না। কিন্তু কিছু বিচার করতে হয়। সমাজে একটা বার্তা দিতে হয়। মাগুরার শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, দাফনের জন্য গতকালকেই মৃতদেহ হেলিকপ্টারযোগে মাগুরায় নেয়া হয়েছে। মৃতদেহ ও পরিবারের সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার যাবেন। দাফন পর্যন্ত তিনি থাকবেন। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। স্যাম্পল কালেকশন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ১২-১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, সাতদিনের মধ্যে বিচারকাজ শুরু হবে। আসিফ নজরুল বলেন, ধর্ষকদের প্রতিও আমাদের তীব্র ঘৃণা। আমরা সংক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনাদের কোনো পরামর্শ থাকলে জানাবেন। কিন্তু এই বিষয়কে সামনে রেখে কেউ যদি পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের দিকে নজর দেবেন।