ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে হেলিকপ্টারে উড়লেন জুলহাস

রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
১০ মার্চ ২০২৫, সোমবার
mzamin

জুলহাস মোল্লা। বর্তমানে টক অব দ্য মানিকগঞ্জ। সমপ্রতি নিজের তৈরি করা আরসি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করার মধ্যদিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দেশ জুড়ে। শিক্ষাগত যোগ্যতায় এসএসসি পাস করা জুলহাস বিমান আবিষ্কার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাটঘর তেওতা গ্রামের এই যুবক এরই মধ্যে গ্রামের মানুষের মাথার মুকুট হয়ে উঠেছেন। যাকে নিয়ে গ্রামবাসীর গর্বের অন্ত নেই। এলাকাবাসীও বুঝতে পারেনি তাদের গ্রামে এমন রত্ন রয়েছে যে কিনা বিমান আবিষ্কারের মাধ্যমে অসাধ্যকে সাধন করতে পেরেছেন। 

সরজমিন প্রতিভাবান যুবক জুলহাসের গ্রামে গিয়ে দেখা গেল অন্যরকম এক চিত্র। বিমান তৈরি করে ইতিহাস সৃষ্টি করা জুলহাসের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা নিজ এলাকার বেশির ভাগ মানুষেরই অজানা ছিল। কিন্তু তার এই কারিশমা প্রকাশ পাওয়ায় ছোট্ট শিশুটিও এক বাক্যে বলে দিতে পারে জুলহাসের বাড়ির ঠিকানা। ৮০ বছরের ওসমান মোল্লা বলেন, আমি অবাক হয়ে গেছি ছোট্ট একটি ছেলে কীভাবে একটি বিমান আবিষ্কার করতে পারলো। আমার ৮০ বছরের জীবনে আমি এমনটা কখনোই দেখিনি। তেওতা  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শরৎচন্দ্র হালদার বলেন, এমন মেধাবী ছেলে আমাদের এলাকায় লুকিয়ে ছিল সেটা এতদিন জানতাম না। সামান্য এসএসসি পাস করা জুলহাসের অবিশ্বাস্য এই আবিষ্কার নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি উৎসাহিত করবে। আসলে প্রতিভা কখন কার ভেতর ফুটে ওঠে সেটা নির্ভর করে আল্লাহর ওপর। জুলহাসের বিমান আবিষ্কার এবং আকাশে উড্ডয়নের কথা শুনে শুধু আশপাশের এলাকার মানুষজনই নন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসে। 

স্বপ্ন পূরণ হলো জুলহাসের: অবশেষে সত্যিকারে  বিমানে ওঠার স্বপ্ন পূরণ হলো যমুনা নদীর পাড়ঘেঁষা  ষাটঘর তেওতা গ্রামের তরুণ উদ্ভাবক জুলহাসের। রোববার দুপুরে তার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন বিমান বাহিনীর সাবেক পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল আল ফারুক। শুধু জুলহাসই নন তার মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে কিছু সময়ের জন্য আকাশে উড্ডয়ন করেন ক্যাপ্টেন আব্দুল আল ফারুক। এ সময় হাজার হাজার উৎসুক মানুষ যমুনার পাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ সময় বিমান বাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, এই মুহূর্তে জুলহাসের কোনো ঝুঁকি নেয়া যাবে না। আপাতত ছোট ছোট ফ্লাই সে করতে পারে। প্রথমে তার টেকনিক্যাল জ্ঞান দরকার। তা না হলে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তাই আবিষ্কারটা নিয়ে তাকে সিস্টেম ওয়েতে এগিয়ে যেতে হবে। জুলহাস যেহেতু বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেছে। সে তো প্রাইভেট পড়াশোনার মাধ্যমে বিমান চালানোর লাইসেন্স পেতে পারে। এ সময় তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা বলেন, আমি প্রথমে রিমোট কন্ট্রোল বিমান বানিয়েছিলাম। এরপর আমার ইচ্ছা হলো আরসি বিমান আবিষ্কার করার। টানা চার বছর গবেষণা করেছি। মাঝে একটি বিমান বানিয়ে ছিলাম কিন্তু সেটি সফল হয়নি। তারপরও হাল ছাড়িনি। টানা এক বছর চেষ্টার পর আমার স্বপ্নের আরসি বিমানটি আবিষ্কার করি এবং আকাশে উড্ডয়ন  করতে সক্ষম হই। এ বিমানটি তৈরি করতে নগদ দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিমানটি সর্বোচ্চ ৫০ ফিট উপরে উঠতে পারে। এর চেয়ে বেশি উড়তে গেলে ঝুঁকিপূর্ণ হবে। জুলহাস বলেন, আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আরও গবেষণা করে জ্ঞান অর্জন করা। দেশের মানুষের জন্য এমন কিছু আবিষ্কার করতে চাই; যা মানুষের কাজে লাগবে।  

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status