প্রথম পাতা
ছাত্রদল-শিবির দ্বন্দ্ব প্রকট
স্টাফ রিপোর্টার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শনিবার
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক সময়ের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে। কোথাও কোথাও অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে দেখা গেছে এই দুই সংগঠনের নেতাকর্মীদের। ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনাও। চলছে দোষারোপের রাজনীতি। ছাত্রদল দায়ী করছে শিবিরকে, আর শিবির দায়ী করছে ছাত্রদলকে। সংগঠন দু’টির কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও পাল্টাপাল্টি পোস্ট দিতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এই সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ছাত্রদলের সভাপতি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদককে বলছেন, ‘শিবিরের ওপর দায় দিয়ে দাও’। ছাত্রদলের সভাপতির এই বক্তব্যকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহযোগিতা ও বন্ধুভাবাপন্ন ছাত্র রাজনীতির পথে অন্তরায় বলে মনে করছে শিবির। সংগঠনটি বলছে, নিজেদের অপরাধমূলক কার্যকলাপের দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপিয়ে দেয়ার যে প্রবণতা ছাত্রলীগের ছিল, তা আজ ছাত্রদলের মধ্যেও বিদ্যমান। এ ধরনের আচরণ ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ এবং সুস্থ ধারার রাজনীতির পরিপন্থি।
ওদিকে, ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আসে ছাত্রশিবির। কয়েকটি বাম সংগঠন এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। এ নিয়ে ছাত্রদলও প্রশ্ন তুলেছে। পরবর্তীতে ৭ই নভেম্বর ‘সিপাহী-জনতার বিপ্লব’ উপলক্ষে বিএনপি’র দলীয় পোস্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সাঁটিয়ে দেয় ছাত্রদল। পোস্টার লাগানোর পর ছাত্রদের মধ্যে এর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তারা এর বিরুদ্ধে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঢাকা এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির সংঘর্ষ এবং ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে সিলেটের এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর টঙ্গীতে ছাত্রশিবিরের ওয়ার্ড সভাপতির ওপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনারও অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আর ছাত্রদল সবসময় শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিশেষ অনুরোধ- ছাত্রশিবিরের উদারতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। ছাত্রশিবির কোনো ব্যক্তি বা দলের পূজা করে না। এক আল্লাহর গোলাম হিসেবে শুধুমাত্র রবের কাছেই মাথানত করে। আর ছাত্রদলকে আমরা শত্রু মনে করি না। আমাদের লড়াই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে সরাসরি কিংবা কৌশলে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি- অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতির ধারায় ফিরে আসুন। কিন্তু বন্ধুপ্রতিম সংগঠনটি আমাদের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট ও তাদের শাহবাগী দোসরদের পরামর্শে অগ্রসর হচ্ছে। যার প্রতিফলন কুয়েটে প্রমাণিত হলো। আজকের ঘটনা আর জুলাই-আগস্টে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
এদিকে, টঙ্গীতে ছাত্রশিবিরের ওয়ার্ড সভাপতির ওপর ছাত্রদলের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের ওয়ার্ড সভাপতি ফজলে রাব্বিকে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ সময় আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ঘটনা জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা মামুন নামে ছাত্রদলের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। মূলত কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ মিছিলে অংশগ্রহণ করার কারণে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এই নির্যাতন চালানো হয়।
পাঠকের মতামত
Please ban students politics in all educational institutions of Bangladesh immediately as a part of political reformation.
গুপ্ত রাজনিতী নিষিদ্ধ করা হোক।৭১ এ গনহত্যায় পাক হানাদার বাহিনী কে সহযোগিতার জন্য জামায়াত -শিবির কে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
২০০১ সাল হতে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ছাত্রদল ও শিবিরের আমলনামা জানুন !
জামায়াত নিজ দলেই চাদাবাজি করে ।
জনাব হজরত আলি, কথা সত্য!
ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির ঐক্যবদ্ধভাবে পেসিবাদের বিরুদ্ধে অতীতে যেভাবে আন্দোলন করেছে সামনের দিনগুলিতেও পারস্পারিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে এবং ঐক্যবদ্ধ ভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার জন্য উপযুক্ত নাগরিক গড়তে ছাত্র রাজনীতিকে এগিয়ে নেবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আমি মনে করি, ফ্যাসিবাদের পতনে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী সংগঠন ছাত্র শিবির এদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা পূরনে সক্ষম হবে।
ছাত্রদল,ছাত্রলীগ ভাই ভাই।
পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন।
বিএনপিমনা হলেও আমি শিবিরকে নিয়ে যতটুকু গবেষণা করেছি, খারাপ খুঁজতে গিয়ে এদের মধ্যে ভালোটাই বেশি পেয়েছি, তাই ছাত্রদলকে উম্মাদ না বাস্তবে ফিরে আসতে হবে।
গুপ্ত সংগঠন নিষিদ্ধ করা উচিত।
আমি মনে করি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবির ১৯৯৬ থেকে অদ্যাবধি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একই সাথে আন্দোলন করেছে জেল জুলুম হয়রানি নির্যাতন গুম খুনের শিকার হয়েছে এদের মধ্যে ছোটখাটো যেটুকু মতভেদ আছে তা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেস করা উচিত।
গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, ছাত্র রাজনীতি সংস্কার হোক।
৭১ এর জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে একটি ভোটও না ।
গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, ছাত্র রাজনীতি সংস্কার হোক।
৪৬ বছরের জীবনে আমার কাছে মনে ছাত্রদল ও লীগ সেম টু সেম।।। শিবির নিরাপদ।। বিশেষ করে শিবির যৌন হয়রানি করবে না।।
পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব সংগঠন বন্ধ করুন।
এদেশের ছাত্ররা গণতন্ত্রের সংজ্ঞা মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশের মাধ্যমে একটা শিক্ষা সনদ যোগাড়ের জন্য; গণতন্ত্র চর্চার জন্য নয়।
সব ছাত্র সংগঠন ভাই ভাই হয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন এবং বিজয়ী হয়েছেন। এখন আলোচনার মাধ্যমে সকল ভুল বোঝাবুঝি সমাধান করে শান্তি পূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কোন বিকল্প নেই। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখতে হলে সবার জন্যই একই নীতি কার্যকর করতে হবে। আর ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেরও প্রয়োজন বলে মনে হয়!
হাসিনা এটার জন্যই অপেক্ষা করছে।