অনলাইন
কুয়েটে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষ: আহত অর্ধশত
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
(১ মাস আগে) ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

ছাত্র রাজনীতির নিষিদ্ধ করা নিয়ে সৃষ্ট সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সাথে ছাত্রদলের কর্মীদের সংঘাতে বহিরাগতরা যোগ দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সংঘর্ষে কুয়েটের অর্ধ শতাধিক ছাত্র আহত হয়েছে বলে দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। এদের মধ্য থেকে গুরুতর আহত ১০ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সংঘাতের শুরু হয়ে এ রিপোর্ট লেখার সময় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৫ই আগস্টের পর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অতীতে এই ক্যাম্পাসে রাজনীতির নামে ছাত্রলীগের সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এমনকি তাদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনে একজন শিক্ষক পর্যন্ত মারা যান। বিপ্লব উত্তর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল এখানে আর ছাত্র রাজনীতি ফিরবে না। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সোমবার ছাত্রদল কুয়েটে সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ শুরু করে।
মঙ্গলবার দুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে। পথিমধ্যে ছাত্রদলের কর্মীদের সাথে মুখোমুখি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, এ সময় কুয়েটের পকেট গেট দিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র, রামদা, চাপাতি, লোহার রড নিয়ে প্রবেশ করে। তারা ছাত্রদলের কর্মীদের সাথে একত্রিত হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। মুহূর্তে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা ক্যাম্পাস। সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে ছাত্রদল কর্মীরা পালিয়ে গেলেও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সাথে কুয়েটের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের সাথে নিয়ে পাল্টা হামলা করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপে একের পর শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাদেরকে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে রয়েছেন প্রীতম বিশ্বাস, শাফি, নাফিস ফুয়াদ, সৌরভ, তাওহিদুল, ইউসুফ খান সিয়াম, দেবজ্যোতি, মাহাদি হাসান, নিলয় ও মমতাহীন।
কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে দুপুর ১টায় আমরা সমাবেশ ডেকেছিলাম। সেখানে বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রদল হামলা চালিয়েছে। জানা গেছে, কুয়েটের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জনৈক ইফাজ ছাত্রদলের হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষের শুরুতে ছাত্রদল কর্মীরা বলেছিল, বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোন পুলিশ প্রশাসন ক্যাম্পাসে আসবে না। তোদেরকে রক্ষা করবে কে? এই বলে তারা হামলা শুরু করে। এদিকে সংঘর্ষ শুরুর দীর্ঘ সময় পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, সেনা বাহিনীর সদস্য ও এপিবিএন, বিজিবি ও নৌ কন্টিনজেন্ট সদস্যরা কুয়েটে আসেন। এ সময় ছাত্ররা কুয়েটের মেইন গেট আটকে দিয়ে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। দুপুর ১টায় সংঘর্ষ শুরুর দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে এলো এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মোহাম্মদ নাজমুল হাসান রাজিব বলেন, পরিস্থিতি অতি শিগগিরই নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমার কুয়েটের ভিসি সহ সব পক্ষের সাথে কথা বলেছি। স্থানীয়দের সাথেও কথা হয়েছে। এঁটা আর বড় রূপ নিতে না পারে সেই চেষ্টা করছি।
এদিকে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের সাথে নিয়ে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৮টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ডাক দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
পাঠকের মতামত
কথা ঐটাই নৌকা আর ধানের শীষ দুই সাপের একই বিষ।
বিএনপি এবং ছাত্রদল আওয়ামী ফ্যাসিজমের শূন্যতা পূরণে এখন সর্ব শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিএনপি ছাত্রদলের ভাষা আচার আচরণ যেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদকেও হার মানাবে। আগষ্ট বিপ্লবের সুযোগে বিএনপি তার কৃতিত্ব ছিনতাই করে নিজেদেরকে মহা হিরো হিসাবে জাহির করার অপচেষ্টা লিপ্ত। বৈষম্য বিরোধি আগষ্ট বিপ্লবের মহানায়কদের বীরত্বকে ম্লান করে দিতে হেন কুটিলতা নেই যা বিএনপি ছাত্রদল করছেনা। বিগত ১৭ বছর বিএনপি ছাত্রদল আওয়ামী প্রেসক্রিপশন নিয়ে লোক দেখানো আন্দোলন করেছে যার পরিণতিতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দেড় দশকের বেশী সময় ধরে ক্ষমতা নিয়ে খেলতে পেরেছে। আর এখন ক্ষমতার রাজ্যে বিএনপি অন্তরবর্তি সরকারকে থোরাই গুরুত্ব দিয়ে দাদাগিরীর ভূমিকা নিয়েছে। ক্ষমতা ছাড়াই বিএনপির যদি এমন ভূমিকা হয় ক্ষমতা পেলে বিএনপি কি করবে তা নিয়ে গভীর ভাবনা ভাবতে হবে।
বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্ত্রাসী হলো ছাত্রদল
ছাত্রদল এখন ছাত্রলীগ হয়ে গেছে।
People will soon realize that all political parties in Bangladesh are equally evils.