প্রথম পাতা
অটোরিকশাচালকদের অবরোধ, দুর্ভোগ
স্টাফ রিপোর্টার
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার
মিটারের বেশি ভাড়া আদায় করলে মামলা ও জরিমানার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এদিন রামপুরার বনশ্রী, মিরপুর-১ ও মিরপুর-১৪ নম্বর, গাবতলী মাজার রোড, তেজগাঁও কলেজ রোড, শনির আখড়া, ধোলাইপাড় ও আগারগাঁওসহ বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করেন তারা। এতে বন্ধ হয়ে যায় এসব এলাকার যান চলাচল। সকাল ৬টার পর থেকে সিএনজিচালিত অটোচালকরা সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করে। এতে অফিসগামী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ তীব্র যানজটে পড়ে। মিটারে ভাড়া বৃদ্ধি ও মিটারে না চললে জেল ও জরিমানার আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারী চালকরা। সিএনজিচালিত অটোরিকশা মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত আদায় করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে- বিআরটিএ’র এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করে। তবে গতকাল দুপুরে এই সিদ্ধান্তটি বাতিল করেছে সংস্থাটি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন। তারপর থেকে বিক্ষোভকারীরা সড়কগুলো ছেড়ে দেন। এতে স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
এদিকে, রোববার শবেবরাতের বন্ধের পর প্রথম কার্যদিবসেই সড়কে গণপরিবহন সংকট এবং ধীরগতি দেখা গেছে। ফলে, চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা বিশেষ করে অফিসগামী ও দৈনন্দিন কাজে বের হওয়া মানুষদের জন্য এমন পরিস্থিতি দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ই-টিকিটিং ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য অনেক বাস রঙ করার জন্য সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, ফলে বাসের সংখ্যা কমে গেছে। একইসঙ্গে ই-টিকিটিং ব্যবস্থার ফলে চালক ও সহকারীর আয় কমে যাওয়ায় অনেকে সড়কে বাস নামাচ্ছে না। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের কড়াকড়ির কারণে মামলা হওয়ার ভয়ে অনেক চালক বাস নিয়ে রাস্তায় নামছে না। সরজমিন দেখা গেছে, শবেবরাতের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে নগরবাসী। বাসের অভাবে রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোতে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। বাস সংকটে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আবার বাস সংকটের সুযোগে রিকশা, সিএনজি ও রাইড শেয়ারিং বাইক চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন। যা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিকভাবেও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে গিয়েছেন।
সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সিফাত দাঁড়িয়েছিলেন যাত্রাবাড়ী পকেট গেটে। তিনি ধানমণ্ডি যাওয়ার জন্য সকাল ৯টায় যাত্রাবাড়ী পকেট গেটে এসেছিলেন। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও তিনি কোনো বাসে উঠতে পারেননি। সিফাত বলেন, এক ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি বাস পাচ্ছি না। দাউদকান্দি থেকে এসেছি। ১১টায় আমার অফিসে যেতে হবে। কিন্তু যেই অবস্থা আজকে গিয়ে অফিসের কাজটা করতে পারবো না। সাকিব হোসেন নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বাসে চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যানজট, বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে সড়ক অবরোধ রাজধানীর মানুষের জন্য দুঃসহ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সময়মতো অফিসে পৌঁছানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এখনো আধাঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বাসে উঠতেই পারছি না। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সম্প্রতি ২১টি পরিবহন কোম্পানির ২ হাজার ৬১০টি বাসকে গোলাপি রঙ করে ই-টিকিটিং ব্যবস্থার আওতায় এনেছে। অনেক বাস রঙ করার জন্য সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে বাসের সংখ্যা কমে গেছে। একইসঙ্গে ই-টিকিটিং ব্যবস্থার ফলে চালক ও সহকারীর আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।