ঢাকা, ১২ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ায় বাধার মুখে ঢাকা-সিলেট ৬-লেন প্রকল্পের কাজ বিঘ্নিত

বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

(৩ সপ্তাহ আগে) ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার, ৮:০১ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৫:০৩ অপরাহ্ন

mzamin

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলাধীন শশই এর স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি ও বাধার মুখে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের (৬-লেন) উন্নীতকরণ কাজের বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সড়ক প্রশস্তকরণের কার্যক্রমও কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হওয়া স্বত্ত্বেও বালু উত্তোলন কার্যক্রমে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী শুরু থেকেই বাধা প্রদান করে আসছে বলে অভিযোগ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান CHSIETC-SLGC-PDL JV  এর প্রতিনিধিগণ। 

বিজয়নগর উপজেলাধীন বুধন্তী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শশই গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমান (হাবিব মেম্বার) এর নেতৃত্বে রায়হান মিয়া (সহ সভাপতি, বুধন্তি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ), আনাস মিয়া (সহ সভাপতি, বুধন্তি ইউনিয়ন যুবলীগ), সাহেদ মিয়া (আওয়ামী লীগ নেতা), জামাই বাবুল মিয়া(আওয়ামী লীগ নেতা), মিজান মিয়া (হাবিব মেম্বারের আপন ভাই), সৈয়দ মিয়া, নাসির মিয়া, ফজল মিয়া (লম্বা ফজল), নাজমুল মিয়া, আব্দুল করিম মিয়া, সৈয়দ মিয়া, সাত্তার মিয়া, গং পারষ্পরিক কূটচাল ও ইন্ধন প্রদান করে স্থানীয় কিছু উগ্র জনতা, শশই পশ্চিমপাড়া মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের তাদের অভিভাবকের অজান্তে ফুঁসলিয়ে ও স্থানীয় বখাটে কিশোর গ্যাংদের লেলিয়ে দিয়ে এ কাজে বাধা প্রদান করে আসছে। আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব মেম্বার গংদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ও ইন্ধনে ইতোমধ্যে ড্রেজারে লুটপাট ও ডাকাতি হয়েছে বলে জানা যায়। রাতের আঁধারে ড্রেজার কর্মচারীদের ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন, কাপড়-চোপড় ও টাকা-পয়সা লুট করা হয়। তাদেরকে বেধরক মারধর করা হয়। ড্রেজার স্টাফদের চিকিৎসা গ্রহণ শেষে এক সপ্তাহ পর আবার কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিলে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ড্রেজারের লোকজনের ওপর পুণরায় হামলা চালায়। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোঃ মিনাল বলেন, "আমরা এখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বালু উত্তোলন করতে আসিনি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজনীয় নিয়ম-নীতি মেনে সরকারি অনুমোদনপত্র প্রাপ্ত হয়েই বালু উত্তোলন করতে এসেছি। সরকার রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি খনন করে বালু উত্তোলনের অনুমতি প্রদান করেছেন। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির ক্রমাগত বাধা, প্রাণনাশের হুমকির কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠান ঠিকমত কার্যক্রম শুরুই করতে পারছে না। এমনকি আমরা অনেক আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হচ্ছি। নাজমুল, মিজান মিয়া ও সৈয়দ মিয়া সরাসরি মুঠোফোনে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তাছাড়া হাবিব মেম্বার দেখা করে হুমকির সুরে বলেছেন শশই গ্রামে আমি যা বলব তাই হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নাই তো কি হইছে? আমি দলের পাওয়ারে চলি না। এখানে কাজ করতে হলে আমাকে হিস্যা দিয়েই কাজ করতে হবে। চাঁদা প্রদান না করায় তারা এ কাজে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে যাচ্ছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (বিজয়নগর), অফিসার ইনচার্জ (বিজয়নগর থানা) কে বিষয়টি লিখিত আকারে অবহিত করেছেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারী বিজয়নগর থানায় এ বিষয়ে এজাহার দাখিল করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ১নং বুধন্তি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কায়ুম রাস্টু মিয়া বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক (৬-লেন) এ উন্নীত হলে অত্র অঞ্চলের মানুষজন-এর সুবিধা ভোগ করবে সবচেয়ে বেশি। তাই এ ব্যাপারে সকলেরই সহযোগিতা করা উচিত। তাছাড়া সরকার তো নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য অনুমোদন প্রদান করেছে, কারো জমি থেকে তো উত্তোলন করতে বলেনি। নদীর নাব্যতা ধরে রাখার জন্যও তো নদী খনন জরুরি।" বিভিন্ন খোড়া যুক্তিতে কাজে বাধা প্রদান করার ব্যাপারটি নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বৃহত্তর রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সড়ক নির্মান ও প্রশস্তকরণের কাজ চলমান রাখার নিমিত্তে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের অনুমোদন সাপেক্ষে গত ১৯-০১-২০২৫ ইং তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া (এস. এ. শাখা) হতে জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির ৩১.১০.২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভার ০১ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিজয়নগর উপজেলাধীন তিতাস নদীর বিভিন্ন দাগের বালু উত্তোলনের অনুমতিপত্র প্রদান করে। যার স্মারক নম্বরঃ ৩১.৪২.১২০০.০১২.৪৩.০০৫.২৪-উক্ত অনুমতিপত্রে চুক্তি অনুযায়ী কার্য বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান CHSIETC-SLGC-PDL JV  এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও PDL  এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম কার্যাদেশের মাধ্যমে নির্দেশনাপ্রাপ্ত হন।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status