ঢাকা, ১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ রমজান ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে যত বাধা

পিয়াস সরকার
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবারmzamin

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে চাপে বিশেষজ্ঞ কমিটি। সাত কলেজের মধ্যে পাঁচটিতে রয়েছে মাধ্যমিক শাখা। আছে দু’টি মহিলা কলেজ। এ ছাড়াও প্রশাসনিক ভবন, নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া নানান বিষয়ে ভাবিয়ে তুলছে কমিটিকে। কলেজগুলোর 
ঐতিহ্য ধরে রাখার বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে তাদের। এ ছাড়াও ভাবাচ্ছে এই কলেজগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকা ১৪০০ শিক্ষক ও ১ লাখ ৬৩ হাজার শিক্ষার্থীকে।
২০০৭ সালে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে অধিভুক্ত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিকল্পনাহীন, অপরিপক্ব এই সিদ্ধান্তের বলি হন লাখো শিক্ষার্থী। নিয়মিত আন্দোলন, সেশনজট, প্রশাসনিক কাজে হীন আচরণের শিকার ছিল নিয়মিত ঘটনা। আন্দোলনের তোড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয় কলেজগুলো। এখন চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে গঠিত কমিটি মতামত নিচ্ছে। স্টেকহোল্ডারদের ১২টি দলের সঙ্গে আলাদা করে বসছে কমিটি। এই কমিটিতে প্রধান হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফয়েজ, সদস্য হিসেবে রয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ এবং ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক সাইদুর রহমান। তাদের প্রতিবেদন দাখিলের সময় দেয়া হয়েছে এপ্রিল পর্যন্ত।

তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করছেন তারা। আগামী শিক্ষাবর্ষে যেহেতু শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয় রয়েছে সেহেতু একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন করা হতে পারে। আবার অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই। সম্ভাব্য ২০৩১ সাল পর্যন্ত বর্তমান শিক্ষার্থীরা এর অধীনে থাকবেন। তবে তাদের সার্টিফিকেশন ও প্রশাসনিক কাজ নিরবচ্ছিন্ন করার কাজে গঠন করা হতে পারে অন্তর্বর্তী কমিটি।

সাতটি কলেজের পাঁচটিতেই রয়েছে মাধ্যমিক। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে ঐতিহ্য। কমিটি চাচ্ছে না মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো বাধা আসুক। আবার দুটি মহিলা কলেজের অক্ষুণ্নতা ধরে রাখবে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অনেকগুলো এসেছে এরমধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’ ও ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনায় নানা বিষয় উঠে আসে। 

কমিটি কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়েছেন কিছু বিষয়ে। যেমন, একক প্রতিষ্ঠানে একক বিভাগ, নাকি বিভাগ হবে একাধিক প্রতিষ্ঠানে। আবার সেক্ষেত্রে মহিলা কলেজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। মহিলা কলেজে একক বিভাগ দিতে পারছেন না তারা। সেক্ষেত্রে আলাদা বিভাগ নির্মাণ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এই বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষক নিয়ে রয়েছে চ্যালেঞ্জ। চিন্তায় রয়েছে একজন শিক্ষক কী একই প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেবেন নাকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাবেন। বেতন কাঠামো নিয়েও ভাবছেন তারা। বর্তমানে থাকা শিক্ষকদেরও রাখতে হবে সমপর্যায়ের ব্যবস্থা। মাধ্যমিক ধরে রাখতে যৌথ নাকি স্বতন্ত্র প্রশাসন সেটাও ভাবাচ্ছে তাদের।

বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, সাতটি কলেজের ঐতিহ্য সংরক্ষণ আমাদের প্রধান লক্ষ্য। মাধ্যমিক শিক্ষার সুনাম রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে। এটা আমরা ধরে রাখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা সন্তোষজনক একটি সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তিনি এই কাজকে দুরূহ উল্লেখ করে বলেন, এখানে নানান ইস্যু রয়েছে পরস্পর বিরোধী। এসবের সমন্বয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। আরেক সদস্য অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান বলেন, সংকট বহুমুখী। দেশে এরকম কোনো মডেল নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সুনাম ধরে রেখে একটি টেকসই মডেল প্রয়োজন। এটি করতে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। 

কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফয়েজ বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পূর্ণরূপে কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত, ইউজিসি জড়িত থাকবে। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি অত্যন্ত যত্মশীল এবং বিবেচনার সঙ্গে কাজ করছি। আমরা একটি ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানোর আশা করি।
 

পাঠকের মতামত

নিউ ইয়র্ক সিটির CUNY ( City University of New York) এর আদলে তৈরি করা যেতে পারে। যেখানে সিটির পাবলিক কলেজ গুলোর আলাদা আলাদা ক‍্যাম্পাস আছে এবং সাবজেক্ট গুলোতেও ভিন্নতা আছে। শুধুমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কে আগের মতো বোর্ডের আওতায় থাকবে। এবং শিক্ষকদের অপশন দিতে হবে তারা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার হিসাবে মাধ্যমিক/উচ্চমাধ‍্যমিক সেকশনে থাকবে না বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে যাবে। যেহেতু এই সব শিক্ষকরা বদলিযোগ‍্য চাকরিতে যোগদান করেছে সেহেতু কলেজের অধীনে থাকলেই কেবল বদলি হতে পারবে।

Abu zafar Rahmatulla
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:৫৪ অপরাহ্ন

আমার মতে , প্রাইমারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অর্থাৎ ক্লাস ওয়ান থেকে এইচএসসি পর্যন্ত একটা শিক্ষা বোর্ড করা উচিত। অতঃপর এসএসসির পরে অনার্স এবং ডিগ্রি , মাস্টার্স পর্যায়ের লেখাপড়া হবে কলেজে। তাহলে ক্লাস ওয়ান থেকে একটা ছাত্র-ছাত্রী এইচএসসি শেষ করে বের হবে। ইন্টারমিডিয়েট ছাত্র-ছাত্রীদের এক্ষেত্রে একটা বড় বাধা দূর হবে । প্রথমত এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীরা দুই বছরের জন্য আবার একটা কলেজে ভর্তির জন্য দৌড়াদৌড়ি করে সেটা আর করতে হবে না। ওয়ান থেকে ১২ ক্লাস পর্যন্ত একটা শিক্ষাবোর্ড এবং ১৩ ক্লাস থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ করা যেতে পারে। ধন্যবাদ।

মিজানুর রহমান
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:০৪ পূর্বাহ্ন

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status