দেশ বিদেশ
৬ বছর পর রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু
রাবি প্রতিনিধি
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রবিবার দীর্ঘ ছয় বছর পর শুরু হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ভাইভা বোর্ডের মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ। তবে এবারে শিক্ষক নিয়োগে কেমন পরিবর্তন আসছে? এ নিয়ে চলছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা আলোচনা।
আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ভাইবা বোর্ড শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে সকল বিভাগেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপরেই শুরু হবে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ। তবে শিক্ষক নিয়োগ আগে শেষ করতে চান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২২ সালের নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ই ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ই ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দেয়া হয়। জানা যায়, বিগত সময়গুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের মতো করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এমনকি নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেছে বলে ইউজিসি’র তদন্তেই বেরিয়ে এসেছে। রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে এক হাজার ৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৪০টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় এক হাজার ৫০ জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৮ জন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। মারা গেছেন কিছুসংখ্যক শিক্ষক। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর এক হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি।
সাধারণ কর্মচারীর এক হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে ৯০৯টি পদ শূন্য রয়েছে। বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতি ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক। নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এ অনুপাত কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
নিয়োগ নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির মধ্যে শর্ত দেয়া ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছিলেন। আপাতত সেই অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করব।’