শরীর ও মন
প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করলে নষ্ট হবে স্বাস্থ্য, সতর্কতা হু’র
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ মাস আগে) ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ১:৪০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৮:১২ অপরাহ্ন

৯০ ঘণ্টা কাজের নিদান দিয়ে বিতর্কের মুখে লার্সেন অ্যান্ড টুবরোর চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যম। কিছু দিন আগেই, ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন যার পরই শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। ভারত এবং বিদেশেও তার মন্তব্য নিয়ে শুরু হয় বিস্তর চর্চা। এবার এল অ্যান্ড টি-এর চেয়ারম্যান এস. এন. সুব্রহ্মণ্যম কর্মীদের সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা নিয়েই এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। আর তার এই মন্তব্যে আরও একবার চর্চা শুরু হয়েছে বিভিন্ন সংস্থায় কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যহানি বিষয়ে। সুব্রহ্মণ্যমের পরামর্শ যে স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ঠিক নয় তা জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরাও। ডাক্তারদের দাবি, এলঅ্যান্ডটি-কর্তার প্রস্তাব মেনে কাজ করলে মানব শরীরের বেশিরভাগ অঙ্গ বিকল হয়ে যাবে
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, 'রবিবার বাড়িতে বসে থেকে কতক্ষণই বা স্ত্রী'র মুখ দেখবেন ?' আর এর মাধ্যমেই তিনি বাড়িতে অনেক কম সময় দেওয়ার নিদান দিয়েছেন, আর অফিসেই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতে বলেছেন। এমনকি রবিবারেও তিনি অফিসে এসে কাজের নিদান দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ বেড়ে যায়। হার্টের অসুখে মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ে ১৭ শতাংশ। কাজের চাপে ঘুম কম হলে মেটাবলিক কার্যক্ষমতা কমে, কোলেস্টেরল বাড়ে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়, ওজন বাড়ে, ওবেসিটি হয়, ব্রেনের কার্যক্ষমতা কমে, হজমের গন্ডগোল দেখা যায়। অতিরিক্ত কাজের চাপে স্ট্রেস, উদ্বেগ বাড়ে, যা হার্টের অসুখকে ডেকে আনে।
দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপেলো হাসপাতালের হার্ট ও ফুসফুস প্রতিস্থাপন সার্জন ডা. মুকেশ গোয়েলের মতে, “দীর্ঘ সময় কাজ করলে স্ট্রেস বাড়ে। যার ফলে কর্টিজল ও অ্যাড্রিনালিন হরমোনের মতো স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়। এর জন্য ক্রনিক হাই ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়ায় হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, হার্ট ফেলিওর বেড়ে যায়।'
সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে রক্তবাহী শিরা সরু হয়ে গিয়ে হার্টের রক্ত সংবহন ব্যাহত করে। একইসঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়ে। স্ট্রেস হরমোন বাড়ে। পাশাপাশি অনেকক্ষণ কাজ করলে সঠিক সময় খাবার খাওয়ার ফুরসত হয় না। যার ফলে হাইসুগারের ঝুঁকি বাড়ে। ২০২২ সালে ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে যে, পেশাগত চাপ মানুষের মধ্যে হতাশার জন্ম দেয়। কাজের সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিক চাপ, বিষণ্নতা এবং আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
সূত্র : ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস