প্রবাস
মালয়েশিয়ার মালাক্কায় হালাল বাণিজ্য মেলা
৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের হালাল অর্থনীতির সুযোগ বাংলাদেশের সামনে
আরিফুল ইসলাম, মালয়েশিয়া
(৩ সপ্তাহ আগে) ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০৯ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মালাক্কা প্রদেশে অবস্থিত মেলাকে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (এমআইটিসি)-এ ২০ থেকে ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী আয়োজিত হালাল বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি দেশের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। এই মেলায় খাদ্য ও পানীয় (ফুড অ্যান্ড বেভারেজ), হালাল ফ্যাশন, হালাল ট্যুরিজমসহ মোট ৯টি ক্লাস্টারে ২৫০টি বুথে পণ্য ও সেবা প্রদর্শিত হয়েছে। মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামিক রিলিজিওন কাউন্সিল (এমএআইএম) প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে।
২১ ডিসেম্বর মালাক্কা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মালাক্কার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সুলাইমান মো. আলী, প্রাদেশিক আইনসভার স্পিকার ওয়াইবি দাতুক ওয়াইরা ইব্রাহিম দুরুম এবং মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশন, কুয়ালালামপুর-এর সহযোগিতায় বরাদ্দকৃত বুথে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান "মৈত্রী" অংশগ্রহণ করে এবং বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় পণ্য প্রদর্শন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন। এ সময় হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তাকে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে অবহিত করেন এবং হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহযোগিতা কামনা করেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার জানান, হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান খাত। বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল বাণিজ্যে পিছিয়ে রয়েছে। মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরে এই খাতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশের হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে কাজ করছে হাইকমিশন। হালাল করিডোর বা হালাল হাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৈশ্বিক ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের হালাল অর্থনীতির সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান "মৈত্রী" কে ধন্যবাদ জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান যাতে এই ধরনের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য হাইকমিশনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। মালয়েশিয়ার পাশাপাশি আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের পরিচিতি এবং বাজার সম্প্রসারণে হাইকমিশন নিয়মিত অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায়।
এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজধানী কুয়ালালামপুরের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলোতেও বাংলাদেশের পণ্যের বাজার তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ১০টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। হালাল বাণিজ্যের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।