খেলা
হামজাকে নিয়ে যে আশা বাফুফে’র
স্পোর্টস রিপোর্টার
২১ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরীকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার অনুমতি দিয়েছে ফিফা। হামজার জন্য দুয়ার উন্মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের ফুটবলে তার প্রভাব কেমন হতে পারে, তা নিয়েও চলছে নানা জল্পনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তার বন্দনা। এরইমধ্যে হামজা চৌধুরীর প্রসঙ্গ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনিও জানালেন হামজাকে নিয়ে নানা স্বপ্নের কথা। তার বিশ্বাস হামজার দেখাদেখি অন্য প্রবাসীরাও লাল-সবুজের জার্সিতে খেলতে অনুপ্রাণিত হবেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলার ঘটনা নতুন নয়। জামাল ভূঁইয়াকে দিয়ে শুরুটা হয় ২০১৩ সালে। এরপর ২০১৯ সালে বাংলাদেশের হয়ে খেলার ছাড়পত্র পান ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক কাজী। জামাল দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৮৪ ম্যাচ খেলেছেন। অধিনায়কত্বও করেছেন। তারিক কাজীও দলের অপরিহার্য সদস্য। তবে হামজাকে নিয়ে বাড়তি আগ্রহ বা আলোচনার কারণ ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে খেলেছেন, এমন কেউ আগে বাংলাদেশের হয়ে খেলেননি। ২৭ বছর বয়সী হামজা বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটিতে খেলছেন। ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেছেন এবং জিতেছেন এফএ কাপও। এ ছাড়া খেলেছেন ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট ইউরোপা লীগ ও এর পরের ধাপ উয়েফা কনফারেন্স লীগেও। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের মধ্যে এর আগে শুধু তারিক কাজীই ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলেছেন। হামজার জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও তার মা বাংলাদেশি। মায়ের বাড়ি ছিল সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায়। মায়ের সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন, সিলেটেও ঘুরে গেছেন। এমন ফুটবলারের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জয়ের খিদে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে দাবি বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের। গতকাল নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ বলেন, ‘হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন, আমরা অবশ্যই খুশি। হামজার মতো খেলোয়াড় কিংবা সামনে প্রবাসী ফুটবলারদের মধ্যে যারা বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন, তারা জাতীয় দলের মান বাড়াবেন। হামজা অবশ্যই ব্র্যান্ড। তবে আমরা এটা নিয়ে আপাতত ভাবছি না। আমরা জাতীয় দলকে জিততে দেখতে চাই। দলকে জেতার মানসিকতায় নিয়ে যেতে চাই। ব্র্যান্ডটা সবাইকে নিয়েই তৈরি করতে পারব বলে আশা করি।’ হামজা খেললে জাতীয় দলের শক্তি অনেকটাই বাড়বে আশা করে তাবিথ বলেন, ‘দল অনেক শক্তিশালী হবে, এটা নিয়ে সন্দেহ নেই। হামজা যেহেতু ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, তাই দলের রক্ষণটা অনেক গোছানো যাবে। পাশাপাশি অবশ্য আক্রমণভাগও ভালো হতে হবে। প্রবাসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অনেকেই ভালো করছেন। আমি বিশ্বাস করি, হামজা তাদের অনুপ্রেরণা হবেন।’ আগামী মার্চে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ বাংলাদেশের। হামজা সে ম্যাচেই দেশের জার্সিতে অভিষিক্ত হবেন বলে আশা সবার। বাফুফে সভাপতি জানিয়েছেন এশিয়ান কাপ নিয়ে বাফুফে এরই মধ্যে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের প্রস্তুতি কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে নেবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছি। আমরা ওই ম্যাচের আগে প্রীতি ম্যাচ বা প্রস্তুতি ম্যাচ যাই খেলি না কেন, সেটা ক্লোজড ডোর খেলব। বাইরের কাউকে ম্যাচ দেখার অনুমতি দেব না। এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব থেকে একটি দল যাবে গ্রুপ সেরা হয়ে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। প্রথম ম্যাচ ভালো করতে পারলে গ্রুপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার সুযোগ থাকবে।’ তাবিথ জানিয়েছেন আগামী ২৫শে জানুয়ারি প্রিমিয়ার লীগের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হবে। সেটি হবে চার সপ্তাহের।