প্রবাস
ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিজয় দিবস পালিত
বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র: নিকল, আমাদের বিজয় কারো দেয়া উপঢৌকন নয়, ত্যাগের বিনিময়ে অর্জন: মুশফিক
মানবজমিন ডিজিটাল
(৪ সপ্তাহ আগে) ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার, ২:২৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ২:২৯ অপরাহ্ন
আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪তম বার্ষিকী উদযাপন করলো ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। মঙ্গলবার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আসাদ আলাম সিয়াম স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। ২৪’র বিপ্লব পরবর্তী এবারের বিজয় উদযাপন ভিন্ন মাত্রা লাভ করেছে। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে চলেছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত সিয়াম। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রিক অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট নিকোল চিউলিক বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সকল সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পেছনে যে ত্যাগ এবং সংগ্রাম তা পৃথিবীতে এক অনন্য নজির। বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক এবং সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায় উল্লেখ করে এই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে বৃহত্তম অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পাশে আছে এবং গণতন্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নেয়ার সরকারের পদক্ষেপ সমূহকে স্বাগত জানাই। সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংঙ্কেনের সঙ্গে প্রফেসর ইউনূসের ফলপ্রসূ বৈঠকের কথা উল্লেখ করে নিকল বলেন, অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ( ডেজিগনেট) মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল আমাদের পরিচয়, মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমাদের বিজয় কেউ উপঢৌকন হিসেবে তুলে দেয়নি বরং আমাদের অর্জন করতে হয়েছে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে”।
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ এর জুলাইয়ের সফল বিপ্লব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই কখনোই শেষ হয় না। ১৯৭১ সালে আমরা বাইরের শোষণের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম; ২৪’র জুলাই আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।”
তিনি বলেন, “নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের অধীনে আমাদের দেশ একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।”
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজ আমরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং শান্তির প্রতি যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি। আমরা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও অটুট করার অঙ্গীকার করছি।”
অতীতে দূতাবাসে সেবা নিতে আসা বাংলাদেশিরা নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন,আশা করি দূতাবাসে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা এখন থেকে ভালো ব্যবহার পাবেন। তিনি দূতাবাসে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চৌকস কর্মীবাহিনী উল্লেখ করে বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা প্রয়োজনে দূতাবাসে এলে একটি গোলাপ দিয়ে বরণ করতে না পারলেও অন্তত একটা স্মিত হাসি দিয়ে বরণ করুন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র , মানবাধিকার ও শ্রম বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনিকা জেকবসেন, রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক সহ অনেকেই ।
বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে এতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।