খেলা
এক বছর না খেলা মালদ্বীপের কাছে হার বাংলাদেশের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৪ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারমালদ্বীপ ফুটবল ফেডারেশনে চলছে অস্থিরতা। ফিফা নিযুক্ত প্রশাসক দিয়ে চলছে দেশটির ফুটবল। অভ্যন্তরীণ সংকটে এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে তারা। এমন সংকটে থাকা মালদ্বীপকে দেশের মাটিতে পেয়েও হারাতে পারলো না বাংলাদেশ। গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফিফা ফ্রেন্ডলি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৯তম মিনিটে মালদ্বীপের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আলী ফাসির। আগামী শনিবার একই স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দু’দল।
এ বছর সাতটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এই সাত ম্যাচে ১৪ গোল হজমের বিপরীতে দিতে পেরেছে মাত্র একটি। মোরসালিনের ওই গোলেই ভুটানকে হারায় বাংলাদেশ। কাল মালদ্বীপের বিপক্ষে পুরো ম্যাচেই নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের। বল পজিশনেও এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোলটিই করতে পারেনি বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। বিশেষ করে শেখ মোরসালিন কমপক্ষে হাফ ডজন গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। ম্যাচে তার যেমন ব্যর্থতা আছে, তেমন সফলতা আছে মালদ্বীপের ডিফেন্ডারদের। সফরকারী দলের গোলরক্ষক হোসেন শারিফও
বাংলাদেশকে হতাশ করেছেন বেশ কয়েকবার। অন্তত গোটা তিনেক নিশ্চিত গোল রক্ষা করেন মালদ্বীপ অধিনায়ক। যার দুটিই ছিল ম্যাচের যোগ করা সময়ে। আর এতেই এক বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরা মালদ্বীপ মাঠ ছাড়ে ১-০ গোলের জয় নিয়ে। নব্বইয়ের দশকের তারকা ক্রিকেটার হালিম শাহ। সাবেক এই ক্রিকেটারের ছেলে কাজেম শাহ কানাডায় ফুটবল খেলতেন। ফুটবলের টানে বছর তিনেক আগে দেশে আসেন। ঘরোয়া ফুটবলে নিজেকে প্রমাণ করে সুযোগ করে নেন জাতীয় দলে। বদলি হিসেবে এরইমধ্যে জাতীয় দলে অভিষেকও হয়েছে তার। গতকাল কিংস অ্যারেনায় ফিফা প্রীতি ম্যাচে প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে সুযোগ পান কাজেম শাহ। পারিবারিক কারণে দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তার জায়গায় কাল অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল ডিফেন্ডার তপু বর্মণের হাতে। বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ হেড কোচ হাভিয়ের কাবরেরা আনিসুর রহমান জিকোর বদলে গোলপোস্টের নিচে মিতুল মারমার ওপর আস্থা রাখেন। ডিফেন্স লাইনে অধিনায়ক তপু বর্মণের সঙ্গী ছিলেন সাদ উদ্দিন, ইসা ফয়সাল ও অভিষিক্ত শাকিল আহাদ তপু। ঘরের মাঠে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলে ধরে বাংলাদেশ, কিন্তু ফিনিশিংয়ের দুর্বলতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিল না রাকিব হোসেন, শেখ মোরসালিনরা। রক্ষণের অসতর্কতায় খেলার ধারার বিপরীতে গোলও হজম করে দল। তাতে মালদ্বীপের বিপক্ষে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ। ১৯তম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে হেডে গোলটি করেন মালদ্বীপের মিডফিল্ডার আলী ফাসির। যদিও ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে মোরসালিনের শট ডিফেন্ডার ইউসুফ হুসেইন কোনোমতে পা দিয়ে আটকান, এরপর তার ফিরতি প্রচেষ্টাও প্রতিহত হয় আরেকজনের গায়ে লেগে। পোস্টের নিচে আনিসুর রহমান জিকোর বদলে নামা মিতুল মারমা শুরুর দিকে ছিলেন স্নায়ুর চাপে। গোল হজমের পর ১৯তম মিনিটেই সমতার দারুণ সুযোগ কড়া নেড়েছিল দুয়ারে। ফাহিমের আড়াআড়ি ক্রস রাকিবের কাছে পৌঁছানোর আগেই ব্লকড করেন গোলরক্ষক, পরে দ্রুত ক্লিয়ার করেন অধিনায়ক সামোহ আলি। এরপর সোহেল রানার শট যায় বাইরে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মোরসালিনের কর্নারে মোহাম্মদ হৃদয় হেড করলে বল যায় সোহেলের পায়ে। বক্সের বাইরে থেকে এই মিডফিল্ডারের বাঁ পায়ে বুলেট গতির শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৬২ মিনিটে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে দলকে বাাচান ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে একাদশে তিন পরিবর্তন আনেন কাবরেরা। সোহেল রানা, ফাহিম ও কাজেম শাহের বদলে মজিবুর রহমান জনি, শাহারিয়ার ইমন, ও চন্দন রায়কে মাঠে নামান এই কোচ। ৬৯ মিনিটে সাদের ক্রসে শাহারিয়ার ইমনের হেড অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। ৭৪ মিনিটে শাহারিয়ার ইমনের সঙ্গে দেয়াা নেয়ায় পর মজিবুর রহমান জনির শট অসাধারণ দক্ষতায় রক্ষা করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক হোসেইন শারিফ।
৮৫তম মিনিটে মোরসালিনের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। যোগ করা সময়ে অন্তত তিনটি গোলের সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের।