ঢাকা, ৪ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

শেষের পাতা

মহাসপ্তমী আজ

স্টাফ রিপোর্টার
১০ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার
mzamin

মহালয়ায় তর্পণ বিসর্জনের পর মহাষষ্ঠী তিথিতে অশ্বমেথ বৃক্ষের পূজায় আহ্বানের মাধ্যমে শুরু হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। ঢাকঢোল আর কাঁসার বাদ্যে দেবীর বোধন পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। আজ মহাসপ্তমী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে দুষ্টের বিনাশ ও সৃষ্টের পালন করতে বছর ঘুরে আবারো দুর্গতিনাশিনী দশভুজা ‘মা দুর্গা’ এসেছেন মর্ত্যে। দুর্গার এই আগমকে ঘিরে মন্দিরে মন্দিরে প্রতিমা তৈরি, বাঁশ-কাঠের বাহারি সব ডিজাইন ও রঙ-বেরঙের আলোকসজ্জা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা।  
আজ সপ্তমী তিথিতে চক্ষুদানের মধ্যদিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবীর মৃন্ময়ীতে। ভোরে হয়েছে ‘কলাবউ’ স্নান। এরপর নবপত্রিকা প্রবেশের মধ্যদিয়ে শুরু হবে সপ্তমী পুজো। নবপত্রিকার পুজো প্রকৃতপক্ষে শস্যদেবীর পুজো। এই শস্যবধূকেই দেবীর প্রতীক রূপে গ্রহণ করে প্রথমে পুজো করা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হবে। এরপর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য ও চন্দন দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে তিথিবিহীত পূজা। শাস্ত্রমতে আজ মহাসপ্তমী তিথিতে ষোড়শ উপাচারে (১৬ উপাদানে) দুর্গার পূজা করা হবে। 
আগামীকাল সকালে অষ্টমী তিথিতে নতুন বস্ত্র পরিধান করে নির্জলা উপবাস থেকে মন্দিরে মন্দিরে সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সকলে মিলে দেবীকে পুষ্পাঞ্জলি দিবে। অষ্টমীর দিনই হবে সন্ধীপূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা কল্পনা করে জগজ্জননীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে হবে ‘কুমারী পূজা’। এবার নবমী পূজা শেষেই দশমী তিথি পড়ে যাচ্ছে। তাই ১২ তারিখেই দর্পণ বিসর্জনের মধ্যদিয়ে দশমী পূজা সম্পন্ন করা হবে। 
গতকাল সরজমিন রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই দেবী দর্শনে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। সারি সারি বাঁশ বেঁধে নির্ধারণ করা হয়েছে নারী-পুরুষের পৃথক প্রবেশ দ্বার। চলমান পরিস্থিতিতে পুরো মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আনসার, পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এবার সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যদের আলাদা নজরদারি রয়েছে পুরো পুজো প্রাঙ্গণে। নির্বিঘ্নে পুজো পরিচালনার জন্য রয়েছে গোয়েন্দা নজরদারিও। মন্দিরে আগত কবিতা দে বলেন, আমরা পুরো একটা বছর অপেক্ষায় থাকি এই দিনগুলোর জন্য। একে অপরের আনন্দ ভাগাভাগি করার মধ্যদিয়ে পূজার দিনগুলো কখন কেটে যায় টেরই পাই না। 
গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সন্ধ্যারতি, ধূনচী নাচসহ পূজার পাঁচ দিনই থাকছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। রাজধানীর খামারবাড়ী কৃষি ইনস্টিটিউটের দুর্গাপূজা মণ্ডপও বাহারি আলোক সজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। সেখানেও ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষরা। তনিমা সাহা নামে এক দর্শনার্থী বলেন, বছর ঘুরে মায়ের আসার খুশিটা বাঁধন ছেড়া। নতুন কাপড়, হরেক রকম খাবার, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা, অঞ্জলি দেয়া সব মিলে পুজোর কয়টা দিন আনন্দ উৎসবে ঘেরা। এদিকে রামকৃষ্ণ মিশন, বনানী মাঠ, ধানমণ্ডির কলাবাগান মাঠ, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, শাঁখারী বাজার, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী পূজামণ্ডপ, পশ্চিম ধানমণ্ডির দুর্গা মন্দির, আখড়া মন্দির, নিমতলা মন্দির, ফার্মগেট, বনশ্রীসহ রাজধানীর অন্য এলাকাতেও জমকালোভাবে আয়োজন করা হয়েছে দুর্গাপূজার। অলিগলি, রাজপথ সাজানো হয়েছে আলোক সজ্জায়। কাপড়-বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রবেশদ্বার। মন্দিরে মন্দিরে শোভা পাচ্ছে মায়ের প্রতিমা। রঙ তুলির আঁচড়, প্রতীকী অস্ত্র, গহনা, শাড়িতে সজ্জিত করা হয়েছে উমা ও তার সন্তানদের। 
বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেছেন, এ বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপিত হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪০৮টি। এ বছর ঢাকা মহানগরে দুর্গাপূজা হবে ২৫২টি। গত বছর হয়েছিল ২৪৮টি। সে হিসেবে মহানগরে পূজামণ্ডপ চারটি বেড়েছে। এবছর প্রায় এক হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা কম হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বন্যার কারণে ও দুর্গত এলাকায় কোথাও কোথাও পূজার্থীরা এবার পূজার আয়োজন করতে পারেননি। 
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status