খেলা
ভারত হারালো নাকি বাংলাদেশ হারলো?
সৌরভ কুমার দাস
২ অক্টোবর ২০২৪, বুধবারতৃতীয় দিনও যখন বৃষ্টিতে ভেসে যায় তখন এই ম্যাচের ফল ড্র ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছিলো না। পরদিন খেলা হতেই ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিং সব হিসাব-নিকাশ বদলে দেয়। চতুর্থ দিন শেষে ম্যাচে ফল আসবে নাকি ড্র হবে সেটা নির্ভর করছিল বাংলাদেশের ব্যাটারদের ওপর। তারা সেই দায়িত্ব নিয়ে বিশ্রি ব্যাটিং করে ভারতকে জয়টা স্রেফ উপহারই দেন। আর তাতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে কানপুরের এই টেস্ট ভারত বাংলাদেশকে হারিয়েছে নাকি বাংলাদেশ হেরেছে! কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। আর ভারতের কাছে সিরিজ হেরেছে ২-০ ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৪৬ রানে। চতুর্থ ইনিংসে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯৫। জয়সোয়ালের ৫১ রানের সুবাদে ৩ উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্য টপকে যায় স্বাগতিকরা। কানপুরে অবশ্য চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড এটি। এর আগে এখানে চতুর্থ ইনিংসে ৮২ রানের বেশি করে যে জিততে পারেনি কোনো দল। ম্যাচে সব মিলিয়ে খেলা হয় ১৭৩.২ ওভার। অর্থাৎ মূলত দুই দিনের বেশ কম সময়ই হয়েছে ম্যাচ আর তাতেও হারলো বাংলাদেশ। শেষদিনে আবার বাকি ছিল আরও ৪৫ ওভার। এভাবে টেস্ট হারার অভিজ্ঞতা কিন্তু আছে এই দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারের। ২০১৯ সালে বৃষ্টিবিঘ্নিত চট্টগ্রাম টেস্টের শেষদিনে রশিদ খান বলছিলেন, বাংলাদেশকে হারাতে মাত্র এক ঘণ্টা দরকার। ১৮ ওভারের কাছাকাছি টিকে থাকলে টেস্টের রেজাল্ট ড্র হতো। ঠিক এক ঘণ্টার আগেই ওই টেস্ট আফগানরা জিতে নেয় বিশাল ব্যবধানে।
প্রথম দিনে খেলা হয় ৩৫ ওভার, ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান করে বাংলাদেশ। এরপর বৃষ্টিতে টানা দুই দিন খেলা হয়নি। ফলে ম্যাচ কার্যত দাঁড়ায় আড়াই দিনের। সেখান থেকেই ম্যাচ হারলো টাইগাররা, আর দেখালো এভাবেও কোনো টেস্ট হারা যায়।
চতুর্থ দিনে একপ্রান্তে মুমিনুল দাঁড়িয়ে থাকলেন, অন্যপ্রান্তে বাকিরা আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত। সেঞ্চুরি পূর্ণ করে মুমিনুলও বিদায় নিলেন। এরপর বোলিং করতে নেমে ভারতের দুই ওপেনারের তোপে যেন বল ফেলার জায়গাই ভুলে যান বাংলাদেশের বোলাররা। হাতে দেড় দিন সময়, ইনিংস বাকি ৩টি! ফল বের করে আনার সব পথই কঠিন। ভারত অবশ্য কঠিন পথকেই সহজ করেছে, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২৭ ওভারে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ টপকেছে। তারা যেকোনো মূল্যে জিততে চেয়েছে, বাংলাদেশ কি চেয়েছে? দলের কাউকে দেখে অবশ্য তা মনে হওয়ার সুযোগ নেই। এই মানসিকতাতেই বাংলাদেশ বরাবর পিছিয়ে যায় বড় দলের সঙ্গে। সাহস, পজেটিভ অ্যাপ্রোচ কিছুই নেই নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক সুইপ শটে অনেক রান করেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে সেই শটেই আউট হলেন আর সেটা দিনের শুরুতেই! প্রথম ইনিংসে শর্ট ফাইন লেগে ফিল্ডার ছিল না, গতকাল সেখানে ফিল্ডার রাখেন ভারত অধিনায়ক। সেখানেই কাটা পড়েন মুমিনুল! এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম মিলে দিনের সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন। যেটা দেখে মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশ হয়তো কোনোভাবে ম্যাচটা বাঁচিয়েও ফেলতে পারে। জুটি যখন ৫১ রানের তখনই আত্মহত্যা করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। রবীন্দ্র জাদেজা দিনের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রিভার্স সুইপ খেলে বোল্ড হন তিনি। শান্তর বিদায়ে ভাঙে ৫১ রানের জুটি, শুরু হয় ধস। তিনি যেভাবে আউট হয়েছেন তাতে সেটাকে অপরাধ না বলে উপায় নেই। অথচ তিনি দলের অধিনায়ক! শান্ত ফেরার পর ৩ রানের মধ্যে ফেরেন সাদমান, লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসান। ৫১ রান করা সাদমানকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু যেভাবে অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করলেন তাতে তার মধ্যে ড্রেসিংরুমে ফেরার তাড়া ছিল বলেই মনে হয়। বাকি দু’জনের আউট নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। দুটো বল ছেড়ে ঠিক সেই বলে লিটন খোঁচা দিলেন যেটা একটু লাফিয়ে উঠলো! কি নিদারুণ বিচক্ষণতার অভাব! আর সাকিব তো যেন জাদেজাকে উইকেটটা উপহারই দিলেন!
এরপর মিরাজ ও মুশফিক মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও বড় হয়নি। ২৪ রানের ব্যবধানে জাসপ্রীত বুমরাহর শিকার হন মিরাজ। এরপর টেলএন্ডারদের নিয়ে লড়াইয়ে পালা ছিল মুশফিকের। যেখানে তিনি কার্যত অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। দশম উইকেটে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে ২৫ বলের জুটি হয় মুশফিকের। যেখানে ভারতের এক নম্বর বোলার বুমরাহর ১৩ বল ফেস করেন তাইজুল, জুটিতে একই বোলারের কোনো বলই খেলেননি মুশফিক। অথচ তখন তাইজুলকে আড়াল করে সামনে থেকে লড়াই করার কথা তার।
একাদশ উইকেটেও একই অবস্থা! বেশ কয়েকবারই খালেদ আহমেদকে পুরো ওভার ছেড়ে দিয়েছেন, আগের ওভারের শেষে বলে স্ট্রাইক বদলানোর চেষ্টাও করেননি। লাঞ্চের আগে শেষ ওভার, বুমরাহর ৪ বলে এক চার হাঁকানোর পর পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিলেন খালেদ। লাঞ্চের আগে বাকি ১ বল, মুশফিক সেই বলে বড় শট খেলতে গিয়ে হলেন বোল্ড! ৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। বাংলাদেশ ৩ উইকেট তুললেও সেটা ম্যাচে কোনো প্রভাবই ফেলেনি। চতুর্থ ইনিংসে যেভাবে আউট হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা, তাতে ভারত জিততে চায় নাকি শান্তরা হারতে চায় এটাই ছিল দ্বিধার!
Pl don't hurry Cricket is the only game in the world that will take 5 days more or less to finish...
এই বাংলাদেশ দলকে ভারত পাড়ার দল বানিয়ে লজ্জা দিয়েছে! অবশ্য লজ্জা পেয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট পাগল মানুষরা। নতুবা এতো বাজে ভাবে প্রায় দেড় দিনে একটি দল টেষ্ট ক্রিকেটে হারে কি ভাবে?
আমাদের ক্রিকেটাররা টেস্ট খেলার পরিবর্তে ওয়ানডে মেজাজে খেলেছে। তাছাড়া সতীর্থ খেলোয়াড়,কোচ নিয়ে নানান কথাবার্তা,ভারত ভীতি ইত্যাদির প্রভাবে খেলার ছন্দ-পতন হওয়াটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটই নিষিদ্ধ করা হোক। জনগণের কোটি কোটি টাকার অপচয়।
এটাতো সহজ সমীকরণ! সামনে IPL খেলতে হবে না????
Shk Hasina is there, that's why out of respect they gifted India the match to win...
বাংলাদেশের আজীবনের জন্য টেস্ট ক্রিকেট নিষিদ্ব করা উচিৎ ।