বাংলারজমিন
বাজিতপুরের সাবেক মেয়র আশরাফের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবারকিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের ছোট ভাই বাজিতপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন আশরাফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৮৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদানসহ ৫ কোটি ৯২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৮ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে নিজ দখলে রাখার অপরাধে দুদক কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে গতকাল মামলাটি রুজু করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে কমিশনের অনুমোদনের পর দুদক প্রধান কার্যালয় ঢাকার উপ-সহকারী পরিচালক মো. জাবেদ হোসেন সজল বাদী হয়ে মামলার এজাহার দাখিল করেন। দুদক কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৬ই জানুয়ারি আনোয়ার হোসেন আশরাফ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় তার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। সেখানে তিনি ৩ কোটি ১৯ লাখ ৭৮ হাজার ১০০ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১ কোটি ৫ লাখ ১৬ হাজার ৪০০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তে নেমে দুদক অভিযোগের বিষয়ে সংগৃহীত ও জব্দকৃত রেকর্ডপত্র যাচাই, ঘটনাস্থল সরজমিন পরিদর্শন করে সুস্পষ্টভাবে আনোয়ার হোসেন আশরাফের নামে মোট ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৮ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখার তথ্যপ্রমাণ পায়। এর মধ্যে মো. আনোয়ার হোসেনের নিজ নামে ৫ কোটি ৭৪ লাখ ১৯ হাজার ৮০৮ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ২ কোটি ১৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অর্থাৎ মো. আনোয়ার হোসেন দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭০৮ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ১০ লাখ ৭৮০ টাকার অস্থাবরসহ মোট ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৮৮ টাকার সম্পদ নিজ নামে অর্জন করে ভোগ দখলে থাকা সত্ত্বেও দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে মো. আনোয়ার হোসেনের ২০১২-২০১৩ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিল করা আয়কর রিটার্নসমূহ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি তার আয়কর রিটার্নে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আয় ও বাজিতপুর পৌরসভার মেয়র হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী ও বিগত দিনের সঞ্চয়সহ মোট ২ কোটি ৭ লাখ ২৬ হাজার ১০০ টাকা আয় এবং পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে মোট ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা ব্যয় প্রদর্শন করেছেন। মো. আনোয়ার হোসেন গত ১৬ই জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের সম্পদ বিবরণী দাখিলের একদিন পূর্বে ১৫ই জানুয়ারি তার বড় ভাই আফজাল হোসেন এর নিকট থেকে জনতা ব্যাংক লিমিটেড রমনা করপোরেট শাখার মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। এই ঋণ বাদে ব্যয়সহ আনোয়ার হোসেনের নিট সম্পদের মূল্য ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৮ টাকা। এক্ষেত্রে মো. আনোয়ার হোসেনের ৫ কোটি ৯২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৮ টাকার সম্পদের বিপরীতে কোনো বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায়নি।