ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

রংপুরে গরমের যন্ত্রণা দ্বিগুণ বাড়িয়েছে লোডশেডিং

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার

তীব্র গরমে পুড়ছে রংপুর। প্রখর তাপে মানুষের হাঁসফাঁস ও যন্ত্রণা আরও বাড়িয়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। টানা এক সপ্তাহ ধরে চলমান এ লোডশেডিংয়ের ফলে বিপাকে পড়ছেন মানুষজন ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলকারখানা ও বিদ্যুৎনির্ভর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্তের ফলে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়াও তীব্র গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বয়স্করা। 
রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৪ ঘণ্টার ১৫ ঘণ্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ। এদিকে সদর, গঙ্গাচড়া পীরগঞ্জ, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ উপজেলাসহ অন্যান্য গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরও শোচনীয়। রংপুরের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকোর) দেয়া তথ্যমতে, রংপুর বিভাগের আওতাধীন পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় বুধবার সকালে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৩১৫ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে ২৬৬ মেগাওয়াট। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন বিদ্যুতের চাহিদা ১২০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে পাওয়া গেছে ৬০-৭০ মেগাওয়াট। অপরদিকে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ৯০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে পাওয়া গেছে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। নগরীর স্টেশন রোডস্থ স্টিল ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী রিয়াজ আলী বলেন, দোকান খুলে সারাদিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাই। অনেক কাজ পড়ে আছে কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকার কারণে তা করতে পারছি না। গ্রাহকরাও ঘুরে যাচ্ছে। কর্মচারী জীবন চন্দ্র বর্মণ বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আয়-রোজগার কমে গেছে। কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। এরইমধ্যে দু’জনকে ছাঁটাই করতে হয়েছে। পায়রা চত্বরের ফটো স্টুডিও ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, বিদ্যুতের দুটি ফিডার থেকে লাইন নিয়েছি তবুও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। সারাদিনে ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাই না। পোশাক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাপড়ের দোকানে এমনিতেই গরম বেশি থাকে, তার ওপরে বিদ্যুৎ নাই। গ্রাহকও আসতে চায় না।
এদিকে নগরীর বাঙ্গীটারী এলাকার গৃহিণী রেবেকা পারভীন টুকটুকি বলেন, আমার ৩ বছর বয়সী মেয়ের জ্বর। আবার নেই বিদ্যুৎ। এ যেন এক অসহ্য যন্ত্রণা।
আরসিসি এলাকার গৃহিণী শাবনাজ বেগম পিংকী বলেন, তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে ৮ মাসের সন্তান ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আবার বিদ্যুৎ না থাকলে রান্নাতেও ব্যাঘাত ঘটছে। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসান বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সেই বিদ্যুৎ গুরুত্ব বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সরবরাহ করছি। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার খুরশীদ আলম বলেন, রংপুরের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে একটি সভা হয়েছে। নেসকো, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতিনিধিরা তাদের চাহিদা ও বিদ্যুতের প্রাপ্তি তুলে ধরেছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের চেয়ে রাতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেশি হচ্ছে।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status