বাংলারজমিন
‘এক পয়সাও আর চাঁদা দিবো না, চাঁদার টাকা ফেরত দিতে হবে’
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবারনারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নবনির্বাচিত সভাপতি মোহম্মদ মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেছেন, ব্যবসায়ীদের ওপর সন্ত্রাস চাঁদাবাজদের হুমকি-ধমকি চলছে। গত কয়েকদিনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ চেম্বার নিজেরাও আক্রান্ত। দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে, ৩ লাখ টাকা দিয়ে মিটিয়েছি। ৭ লাখ টাকার জন্য চাপ আছে। ভয়-ভীতি দেখিয়ে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমই’র কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে। এক পয়সাও আর চাঁদা দিবো না চাঁদার টাকা ফেরত দিতে হবে। চাঁদা দিয়েছি চাঁদা ফেরত চাই। না হলে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শহীদ মিনারে লালকার্ড দেখানো হবে। প্রয়োজনে শহর থেকে বের করে দেবো। দলীয় প্রধানদের লিখিত অভিযোগ দেবো। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের নারায়ণগঞ্জে কোনো স্থান নেই।
গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিকেএমই এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সহ-সভাপতি মোর্শেদ সারোয়ার সোহেলসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। মাসুদুজ্জামান বলেন, কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন কোনোভাবেই চাঁদাবাজি করা যাবে না, দখল করা যাবে না। তারা বহু চেষ্টা করছে কিন্তু স্থানীয় নেতারা মঞ্চে উঠে বলছে কোনোভাবে চাঁদা দেবেন না। আমাদের বলবেন আমরা ব্যবস্থা নেবো। এসব রাজনৈতিক বক্তব্য শেষ করেই মঞ্চ থেকে নেমেই ফোন করে বলে ভাই ঝুটটা দিলেন না? এমন শত শত ফোন আমি পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে পরিস্থিতির শিকার কখনো কখনো। স্বাধীনতার পর থেকে ব্যবসায়ীরা কোনো না কোনোভাবে নির্যাতিত হয়েছে। আমরা শুধু ভয়ে থাকি। কিন্তু দিন শেষে যখন পরিবর্তন হয় তখন আবার আমাদের ওপর দিয়ে ঝড়-ঝাপটা যায়।
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গার্মেন্টস শিল্পে একটি শ্রেণি অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। শ্রমিক ভাইদের বলবো কারও উস্কানিতে পা দেবেন না। এর ফলে আপনারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা বিদেশিদের দ্বারা লালিত-পালিত হয়ে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রীলঙ্কায় যখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলো তখন সেখান থেকে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করে কেউ তার দেশে হয়তো এটা নিয়ে যেতে চাইছে। আমি দেশের নাম উল্লেখ করলাম না। তিনি বলেন, শুক্রবার ইন্ডিয়ার একটি পত্রিকায় এ ব্যাপারে নিউজ ছাপা হয়েছে। তাদের দেশে অনেক অর্ডার যাচ্ছে। তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টসে অরাজকতা করা হচ্ছে। মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের যেকোনো যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া হবে।
সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলদার এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এ দেশের নাগরিক হতে পারে না। তারা এদেশের শত্রু। তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে দেশপ্রেমিক সকল নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন তারা কোনো ধরনের অপকর্ম করতে সাহস না পায়।
দেশের প্রতিটি ভূক্তভোগী প্রতিষ্ঠান সবাই সম্মিলিত ভাবে সর্ব ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি দখলদারি সন্ত্রাসিদের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে এই ঘৃনিত জানোয়ারদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আওয়াজ তুলুন প্রতিরোদ করুন। ছাত্র জনতা দেশবাসী সবাই আমরা আপনাদের পাশে আছি। কোন ভয় নাই।