খেলা
আবারো বাফুফে’র নির্বাচনে দাঁড়াবেন কাজী সালাউদ্দিন
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ আগস্ট ২০২৪, বুধবারপদত্যাগের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। ৫ই আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ সালাউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি তোলে। সংগঠনটি দুই দফায় বাফুফের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে। রোববার সংগঠনটি কাজী সালাউদ্দিনকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেয়। তবে এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন। মঙ্গলবার কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করবো না। নির্বাচন করবো। নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন কীভাবে?’
ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগ ও রদবদলের হিড়িক শুরু হয়েছে। দাবি উঠেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগেরও।
‘বাংলাদেশ ফুটবল আল্ট্রাস’ সালাহউদ্দিনের সঙ্গে বাফুফের মহিলা উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীরও পদত্যাগ চেয়েছিল। সালাম মুর্শেদী ইতোমধ্যে পদত্যাগ করলেও সালাউদ্দিন তার অবস্থানে অনড়।
আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকেই বিভিন্ন অঙ্গনে চলছে অস্থিরতা। সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নিহতের পাশাপাশি ক্ষমতার লড়াইও। আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল কাজী সালাউদ্দিনের। সেটা মেনে নিয়েই তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, গত সরকারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমি কখনো মন্ত্রী, এমপি হতে চেয়েছি? চাইনি। আমার কাছে ঢাকার মেয়র হওয়ার অফার ছিল। কিন্তু আমি হইনি। আমি ফুটবল নিয়েই থাকতে চেয়েছি আর সেটা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। আমি প্রথমবার যখন নির্বাচন করি ২০০৮ সালে, তখন তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করেছি। বাদল, সালাম, নাবিলরা তো আমার প্যানেলে ছিল না। এভাবে প্রতিবারই আমি ভোটে জিতেছি।’
রোববার ফুটবল সমর্থকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ বাফুফে ভবনের সামনে জড়ো হয়ে সালাহউদ্দিন ও কিরণের পদত্যাগ দাবি করে। তাদের কাজের তীব্র সমালোচনা করে।
তবে সালাউদ্দিন প্রশ্ন তোলেন এই সংগঠন নিয়ে। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, বাংলাদেশ ফুটবল আলটার্সের কী ভূমিকা ফুটবলে? আমি ঘোষণা দিয়েছি ২৬শে অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন হবে। আমি নির্বাচন করতে পারবো কিনা তারা বলার কে? তাদের কে অধিকার দিয়েছে আমাকে হুমকি দেওয়ার?’
সালাউদ্দিন জানান সরে যাওয়া তো দূরের কথা, তিনি পঞ্চমবারের মতন নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করছি না। আমি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। আমি কোনো হুমকির মুখে ফুটবল ছাড়বো না।’
দেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই তারকা বলেন, ‘আমি সাদামাটা মানুষ না। আমার দীর্ঘ ফুটবলের ইতিহাস আছে। আমি জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলাম। আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। আওয়ামী লীগের আমলে ছাড়াও আমি জিয়াউর রহমানের আমলে, খালেদা জিয়ার আমলে, হুসেন মোহাম্মদ এরশাদ ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার, স্বাধীনতা পদক, শেখ কামাল আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছি। আমি নিজের ইচ্ছায় ফুটবল ছাড়বো, কারো হুমকিতে নয়।’
বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘তারা যদি ভীষণ জনপ্রিয় হয়, তাদের নির্বাচন করে আসা উচিত। আমাকে নিয়ে তারা এত উদ্বিগ্ন কেন? আমি যদি ব্যর্থ হই, কাউন্সিলরা আমাকে ভোট দেবে না। আওয়ামী লীগের সংগঠকদের বিরুদ্ধে গিয়ে আমি প্রথম বাফুফে সভাপতি হয়েছিলাম।’
সালাউদ্দিন নিজে থেকে সরে না গেলে নির্বাচন ছাড়া তাকে বদলের সুযোগ নেই। সরকারি হস্তক্ষেপে বাফুফে সভাপতিকে সরাতে গেলে খেলাটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা- ফিফা বাংলাদেশ ফুটবলকে নিষিদ্ধ করতে পারে।