বাংলারজমিন
ইছামতির অবৈধ মাছের ঘের তুলে নিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
১৩ আগস্ট ২০২৪, মঙ্গলবারঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদীর কচুরিপানা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ১১টায় ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলন ও সেইভ দ্যা সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্ট্রোম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা উপজেলার শিকারীপাড়া ইউনিয়নের হাগ্রাদী বাজার এলাকা থেকে এ কার্যক্রম শুরু করেন। প্রায় ৩ কিলোমিটার নদী জুড়ে এ অভিযানে শিকারীপাড়া তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজ, শিকারীপাড়া তারাশংকর কালীশংকর মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, হাগ্রাদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা এলাকার জেলেদের জীবন জীবিকার কথা উল্লেখ করে নদীতে অবৈধ মাছের ঘের তুলে নিতেও আল্টিমেটাম দেয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, নদী সবার। কিন্তু এলাকার এক প্রভাবশালী চেয়ারম্যান নিজেই নদীতে মাছ চাষ করেন। এতে দীর্ঘদিন ধরে নদীকে কেন্দ্র করে জেলেদের জীবন-জীবিকার পথ বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, শিগগিরই নদীকে দখল মুক্ত করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি প্রভাবশালী মহল শিকারীপাড়া দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদীর একটি অংশ দখল করে মাছ চাষ করছে। নদীতে বাঁধ দেয়ায় স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে সেখানে কচুরিপানায় ভরে গেছে। যার কারণে নদীর পানি জনসাধারণ ব্যবহার করতে পারছে না দীর্ঘদিন ধরে।
ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা ইছামতিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইছামতি ও পদ্মার সংযোগস্থল কাঁশিয়াখালী বেড়িবাঁধের সোনাবাজু স্থানে একটি স্লইচগেইট নির্মাণ করা হলে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হবে। এই নদীর উপর নির্ভর করে এই অঞ্চলের কয়েক হাজার জেলে পরিবার রয়েছে তারাও পুনরায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
শিকারীপাড়া ইউনিয়নের হাগ্রাদী গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বলেন, এক সময় প্রবল স্রোত ছিল ইছামতি নদীতে। একটি মহল ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একযুগ ধরে নদীর হাগ্রাদী থেকে শিকারীপাড়া বাজার পর্যন্ত দখল করে মাছ চাষ করে আসছে। এতে তারা লাভবান হলেও নদীর উপর নির্ভরশীল মানুষরা বঞ্চিত হয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় জেলে সমপ্রদায়ের মানুষরা অবহেলিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতা নতুন করে দেশ গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে ইছামতি নদীর কচুরিপানা অবসারণ করে নদীকে আমরা ব্যবহারযোগ্য করতে চাই। সেই সঙ্গে স্থানীয় জেলেরা যেন এখন থেকে নদীতে মাছ মারতে পারে সেই ব্যবস্থাও করবো আমরা। আমরা চাই নদীটি দখলমুক্ত করা হোক।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। যেখানে থাকবে না দুর্নীতি ও ঘুষ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হবে আমাদের বাংলাদেশ। তাই রাস্তাঘাটের পাশাপাশি আমরা নদীর কচুরিপানা অপসারণে সহযোগিতা করছি। আশা করি সকলে মিলে একটি সোনার বাংলা গড়তে পারবো। স্থানীয়রা বলেন, একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে নদীটি একটি অংশ দখল করে মাছ চাষ করছিল। এতে স্থানীয় জেলে পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি নদীতে কচুরিপানায় ভরে পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আজ ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলন ও সেইভ দ্যা সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্ট্রোম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের যৌথ উদ্যোগে কচুরিপানা অপসারণ ও দখলমুক্ত করার যে উদ্যোগ নিয়েছে আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। আশা করি দ্রুত সম্পূর্ণ দখলমুক্ত হবে ইছামতি নদী।
খুবই ভালো উদ্যাোগ। নদীমাতৃক বাঙলাদেশের নদীগুলো দখলদাার, আবর্জনা এবঙ কলকারখানার বর্জ্যে নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায় হয়ে ধুঁকছে। এতে করে পরিবেশের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য এবঙ নদী উপজীব্য স্হানীয় পেশাজীবিরাও চরমভাবে ক্খতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থেই নাব্যতা ফিরিয়ে এনে, দূষণ-দখল মুক্ত করে প্রকৃতি এবঙ পরিবেশের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে হবে। আবারো অভিবাদন এবঙ একাত্মতা জেনো স্বদেশী অনুজেরা