প্রথম পাতা
আইন উপদেষ্টার ব্যস্ত দিন
স্টাফ রিপোর্টার
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবারপ্রথম দিন নিজ কার্যালয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন অন্তর্বর্র্র্র্র্র্র্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। গতকাল সরকারি ছুটির দিনেই তিনি অফিস কার্যক্রম শুরু করেছেন। মতবিনিময় করেছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে। নেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত। সকালে অধ্যাপক আসিফ নজরুল মন্ত্রণালয়ে এলে অনাড়ম্বরভাবে তাকে স্বাগত জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। দিনভর নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে অফিস করেন ড. আসিফ নজরুল। কাজের ফাঁকে পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।
বলেন, মানুষের সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা ও নতুন নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে সমন্বয় করে এই সরকার যতদিন থাকা দরকার, ততদিন থাকবে। বেশিও না, কমও না। সচিবালয়ে সরকারের মেয়াদ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। মেয়াদের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়াদের বিষয়ে এখনো কোনো কথা হয়নি। এ ব্যাপারে দুটি বিষয় অন্তর্বর্তী সরকারের মাথায় থাকবে। একটি হলো রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা থাকবে যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন দেয়া যায়। আবার এ দেশের মানুষের যে সংস্কার আকাঙ্ক্ষা, সেখান থেকে প্রত্যাশা থাকবে, এই সরকার যেন কিছু জরুরি সংস্কার করে যায়।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, অতীতে পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে জনগণকে নির্যাতনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কিছু ভালো মানুষ পাওয়া গেছে। কিন্তু পুরো ব্যবস্থাকে এমনভাবে দাঁড় করিয়েছিল যে ভিন্নমত পোষণকারী ও মৌলিক অধিকার চর্চাকারী মানুষের জন্য এসব প্রতিষ্ঠান আতঙ্কে পরিণত হয়েছিল। এগুলো সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা মানুষের আছে ।
গতকাল বিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করলেও দুপুরের আগে এ নিয়ে আলোচনা ছিল। তার পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রধান বিচারপতির কী করা উচিত এটা উনার বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিলাম। এটা তো ছাত্র-জনতার বিপ্লব। এ আন্দোলনে অসংখ্য ছাত্রের প্রাণ ঝরেছে। এখনো আবু সাঈদ, মুগ্ধ এবং ছয় বছরের একটি শিশু মারা যাওয়ার কথা যখন পড়ি, আমরা খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে যাই। এই আবেগকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, প্রতিনিধিত্ব করছে আমাদের সমন্বয়করা। তিনি বলেন, এত বড় একটা গণআন্দোলন। ১৬-১৭ বছর ধরে জেঁকে থাকা এত শক্তিশালী, নির্মম একটা সরকারপ্রধানকে পালিয়ে চলে যেতে হয়েছে। ওই রকম একটি জায়গা থেকে প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পর, আহ্বান আসার পর প্রধান বিচারপতির কী করা উচিত, এটা উনার বিবেচনার ওপর আমি ছেড়ে দিলাম।
এদিকে বিচার বিভাগের সংস্কারে যা যা করার তা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে বিচার বিভাগে দুঃশাসনের নজির স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আসিফ নজরুল বলেন, আমি আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে আইনগত সংস্কার করে উপযুক্ত জায়গায় উপযুক্ত ব্যক্তিকে পদায়ন করে আমার মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন ব্যাপারে যা যা করার আছে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। আমি এই পজিশনে এসেছি। আমি মনে করি এটা ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব। কীভাবে মিসক্যারেজ অব জাস্টিস হয়েছে, কীভাবে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে আমি জানি, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। উচ্চ আদালতে বিচারকাজ বন্ধ আছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমি অফিসে এসেছি সবার সঙ্গে আলাপ করবো। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চেষ্টা করবো।
সাইবার নিরাপত্তা আইন থাকবে কিনা জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, যেকোনো ধরনের খারাপ আইন কোনটা সংস্কার করা প্রয়োজন, কোনটা বাতিল করা প্রয়োজন সেটা আমরা চিন্তা করে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করবো। আমি সাইবার সিকিউরিটি আইনের আসামি ছিলাম। তাই বুঝতেই পারছেন সাইবার নিরাপত্তা আইনকে ভালোবাসার কোনো কারণ নেই।
ডক্টর আসিফ নজরুল, বিচার বিভাগ কে প্রশাসন থেকে পৃথককরণ আইন প্রনয়ন করতঃ বাস্তবায়ন করুন। ব্যারিষটার ইশতিয়াক সাহেব চেষ্টা করেছিলেন, আমলাদের ঘষামাজার অহেতুক প্রচেষ্টায় ( বাধায়) করতে পারেন নাই। এইবার শেষ সুযোগ ছাত্র জনতা দিয়েছে।