ঢাকা, ১১ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ মহরম ১৪৪৭ হিঃ

প্রথম পাতা

সারা দেশে নিহত অন্তত ২৪

রণক্ষেত্র ঢাকা সংলাপ প্রত্যাখ্যান

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার
mzamin

রক্তাক্ত বাংলাদেশ। টালমাটাল পরিস্থিতি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ। কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের দেশ জুড়ে নজিরবিহীন শাটডাউন, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র শক্তি প্রদর্শন। ফোরজি মোবাইলসেবা ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ায় ভয়াবহ এক পরিস্থিতিতে দেশ। নানা শঙ্কা, ভয়, আতঙ্ক, উদ্বেগ আর গুজব। হামলা, সংঘর্ষ, গুলিতে সারা দেশে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। হামলা ও সংঘর্ষে আক্রান্ত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। নজিরবিহীন হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত এই গণমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। হাজার হাজার আন্দোলনকারীর প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়েন। বাড্ডায় এমন অবস্থায় পড়া ৬২ জন পুলিশ সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ছাড়া বিটিভি এলাকায় বেশ কয়েকজন বিজিবি সদস্য অনেকক্ষণ অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের আলোচনার আহ্বান জানানো হয়। দুপুরের পর আইনমন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানান। এর কিছু সময়ের মধ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, শহীদের রক্তের উপর দিয়ে সংলাপ সম্ভব নয়। রাতে অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম এক ঘোষণায় শাটডাউন অব্যাহত থাকবে বলে জানান। নাহিদ ইসলাম যেকোনো সময় তাদের গ্রেপ্তার ও গুম করার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। নির্দেশনা দেন শিক্ষার্থীরা যেন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। গতকাল শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির আগের রাত থেকেই পুলিশের সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন সরকার দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। সারা দেশে বন্ধ ছিল বাস ও ট্রেন চলাচল। সব মিলিয়ে অচল হয়ে পড়েছে পুরো দেশ। 
কোটা সংস্কারের একদফা দাবিতে গত ১৫ই জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর থেকেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। এরপর দফায় দফায় দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অনেকে। পরদিন ঢাকাসহ দেশব্যাপী ছাত্রলীগ-পুলিশের গুলিতে একাধিক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। রাতভর বিক্ষোভের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলগুলো থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেন। ১৮টি হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে প্রশাসন থেকে লিখিত নেন। ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষগুলোতে। গত বুধবার দিনভর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দমাতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএনসহ বিভিন্ন বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে আরও উত্তপ্ত হয় পরিবেশ। দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড  গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। বাদ যায়নি বেগম রোকেয়া হলেও। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ সারা দেশে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষার্থী নেমে আসে রাজপথে। সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে ঢাকায় ১৮, চট্টগ্রামে ২, নরসিংদীতে ২, মাদারীপুরে ১, সিলেটে ১ জনসহ মোট ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজাসহ একাধিক পুলিশ বক্স।    
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ নিহত হয়েছেন ৫ জন। আহত হয়েছেন অনেক আন্দোলনকারী। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি’র সঙ্গে এখানেও যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন। বুধবার সকাল ১০টা থেকে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকায় দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয় কলেজের শত শত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় যাত্রবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায়। উত্তরায় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ৪ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল ২ জন ও ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ১ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। আজমপুরে সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে শিক্ষার্থীদের। এ সময় পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে রাখা হয়। এ ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে উত্তরা-আজমপুর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একজনের মৃত্যু হয়েছে। সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জনের বেশি গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানে যায়। আহতদের মধ্যে যারা গুরুতর, তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে উত্তরায় পুলিশ ও র‍্যাবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে দুজন নিহতের খবর পাওয়া  গেছে। তাদের একজন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। আরেকজন উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে মারা যান। দুই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর আফতাবনগরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। বিকাল ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম শরীফ হাসান। সে রাজধানীর ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের ছাত্র। রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় পুলিশ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজনের নাম দুলাল মাতবর। তিনি পেশায় ড্রাইভার। সংঘর্ষে আহত হওয়ার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সাভারে পুলিশ-ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইয়ামিন (২৪) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। দুপুরে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। নিহত ইয়ামিন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী। এছাড়া ধানমণ্ডিতে ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ফারহান ফাইয়াজ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সাভারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ইয়ামিন (২৪) নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এ ঘটনায় ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক। দুপুরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের মুনসুর মার্টের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়ামিন ঢাকার মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। নরসিংদী জেলখানা মোড়ে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের ছোড়া গুলিতে তাহমিদ তামিম (১৫) ও ইমন মিয়া (২২) নামে দুজন নিহত হয়েছে। তাহমিদ নরসিংদী নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস (এনকেএম) নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নিহত তাহমিদ নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর গ্রামের ডা. রফিকুল ইসলামের ছেলে। বিকাল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে শকুনী লেকের পানিতে পড়ে দীপ্ত দে নামে নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়ির সামনের কাঁচ ভেঙে ফেলেছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে ৬ জনকে। আগুন দেয়া হয়েছে শহরের লঞ্চঘাট পুলিশ ফাঁড়িতেও। ভাঙচুর করা হয় জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, এসপি অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। চট্টগ্রাম নগরীতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিকালে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে একজন হলেন- পটিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র মোহাম্মদ ইমাদ (১৮)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার বয়স ২২ বছর। বিকালে দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 
রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সিলেটে শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সুরমা আবাসিক এলাকায় পুলিশের ধাওয়ায় পানিতে পড়ে রুদ্র সেন নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। 
কুল্লিায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ী বিশ্বরোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  খুলনায় শিববাড়ী মোড়ে অবরোধ করেছেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। অবরোধের কারণে শিববাড়ী মোড়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, শিববাড়ী থেকে সোনাডাঙ্গা, ময়লাপোঁতা, রূপসা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাবনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে পুলিশসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে মিছিলকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন শিক্ষার্থীরা। জয়পুরহাটেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নাটোরে শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নাটোর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে পুলিশ সুপারসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পু‌লিশ টিয়ার‌শেল ও রাবার বু‌লেট ছুড়েছে। এতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সংঘ‌র্ষে পু‌লিশ সাংবা‌দিকসহ ৩০ জন আহত হ‌য়ে‌ছেন। এই ঘটনায় শহ‌রে থমথমে অবস্থা বিরাজ কর‌ছে। ময়মনসিংহে শাটডাউন কর্মসূচিতে অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। মানিকগঞ্জে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য জেলা শহরে জড়ো হওয়ার সময় খালপাড় এলাকায় আসা মাত্রই ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সময় পুলিশ কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সকাল সাড়ে ১০ টার সময় জেলা শহরের খালপাড়া এলাকায় এ ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আন্দোলনকারী বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। 
এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্দোলনকারীদের সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে সংলাপের প্রস্তাবনা দিয়েছে সরকার। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানিয়েছে, রক্ত মাড়িয়ে সংলাপ নয়। সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, রক্ত মাড়িয়ে কোনো সংলাপ নয়। আন্দোলনের আরেক অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমও পৃথক স্ট্যাটাসে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, একদিকে গুলি আর লাশ, অন্যদিকে সংলাপ! আমার ভাইয়ের রক্তের ওপর দিয়ে কীভাবে সংলাপ হতে পারে? এছাড়া আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, গুলির সঙ্গে কোনো সংলাপ হয় না। এই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করার থেকে আমার মৃত্যু শ্রেয়। এর আগে বিকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সরকার রাজি আছে। কোটা নিয়ে আদালতে যখন শুনানি হবে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্রস্তাব দেয়া হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। হামলা ও নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এক বিবৃতিতে বলেন,

 

 

 

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status