শেষের পাতা
রাতে অভিযান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভ্যাট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবারব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাতে অভিযান, মোটা অংকের টাকা দাবি, টাকা না পেলে মামলার হুমকি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অফিসের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদের এই তৎপরতায় হয়রান হোটেল-রেস্তরাঁ ব্যবসায়ীরা। এরইমধ্যে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কাছে অভিযোগ এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তার নানা হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছেন ব্যবসায়ীরা।
গত ২৫শে জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শহরের কাউতলীর হোটেল নোওমীর মালিক মো. রাশেদুল হক বাদী হয়ে মামলা করেন ভ্যাট কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করা হয়, অন্যায়ভাবে ওই হোটেল মালিককে ৫ লাখ টাকা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন আবদুল আহাদ। টাকার জন্যে গত ১২ই জুন তার অফিসের এক কর্মচারীর মাধ্যমে হোটেলের ম্যানেজার মো. নূরুল আমিনকে তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। সে সময় ম্যানেজারকে বলেন- ৫ লাখ টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না। বিভিন্ন মামলা- মোকদ্দমা দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপর ২৪শে জুন রাত সাড়ে ১১টায় ভ্যাট কর্মকর্তা আবদুল আহাদ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ১০/১২ জনকে নিয়ে হোটেলে আসেন এবং হোটেল মালিকের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে হোটেলটি বন্ধ করে দেন ভ্যাট কর্মকর্তা আহাদ। যা হোটেলের সিসি টিভি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে ১৩ই জুন কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেস্তরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফকরুল হাসান একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভ্যাট কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদের বিরুদ্ধে। এতে জোরপূর্বক ভ্যাট আদায়ের অভিযোগ করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের তার কার্যালয়ে ডেকে এনে বিক্রির অর্ধেক বা বিক্রির সমপরিমাণ ভ্যাট দেয়ার জন্যে অযৌক্তিক চাপ প্রয়োগ করা হয়। জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া স্মারকলিপিতে ভ্যাট কর্মকর্তার আচরণের কারণে সদর উপজেলার সুহিলপুরের এক ব্যবসায়ী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে ২৬শে জুন ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনও করেন। জেলা রেস্তরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফকরুল হাসান জানান,গত ১লা জুলাই কুমিল্লায় তারা ভ্যাট কমিশনারের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেন। সে সময় ওই কর্মকর্তাকে দ্রুত প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট এর বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু হানিফ মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, মামলা হয়েছে শুনেছি। চাঁদা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমার চাকরি সাড়ে ১৩ বছর। আমার চাকরির রেকর্ড আছে। আমার বিরুদ্ধে আগেও আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। ফেনীতে হয়েছে, চট্টগ্রামে হয়েছে। আন্দোলনের নেতারাই আবার আমি ভালো মানুষ বলে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি হোটেল ও রেস্তরাঁ ব্যবসায়ীদের ভ্যাট প্রদানে নানা অনিয়মের কথাও জানান।