দেশ বিদেশ
আনার হত্যা
সবাই গ্রেপ্তার হলেও এখনো ‘মোটিভ’ নিয়ে ধোঁয়াশায় ডিবি
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ জুন ২০২৪, শুক্রবারঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয়া ৭ জনই গ্রেপ্তার হয়েছে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের ফলে কারা আর্থিক, রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে, হত্যার সুনির্দিষ্ট মোটিভ কি সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না ডিবি পুলিশ। ডিবি বলছে, কারা আর্থিক, রাজনৈতিকভাবে লাভবান সেটা আশা করি বের হবে। মোটিভ অবশ্যই আছে। সম্ভাব্য সব কারণ আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, যখনই ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনার খবর আসে তখনই আমরা কিন্তু মাস্টারমাইন্ড শিমুল ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করি। এরপর তানভীর ও শিলাস্তিকে গ্রেপ্তার করি। তারা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এরপর আমরা নিজেরা কলকাতায় গিয়ে সঞ্জিভা গার্ডেন পরিদর্শন করি। এই হত্যাকাণ্ডে আরও জড়িত দু’জনের নাম জানতে পারি।
হারুন অর রশীদ বলেন, ১৩ই মে সকালবেলা এমপি আনার তার বন্ধু গোপালের বাসা থেকে বের হন। বিধান সভার কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে অপেক্ষায় ছিল ফয়সাল। তিনি আনারকে রিসিভ করে লাল গাড়ির কাছে যান। যেখানে অপেক্ষায় ছিল শিমুল ভূঁইয়া। আর অন্যদিকে কলকাতা সঞ্জিভা গার্ডেনের ভাড়া বাসায় অপেক্ষায় ছিলেন মোস্তাফিজ, জিহাদ হাওলাদার। ফয়সাল, শিমুল ভূঁইয়া আনারকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে গেলে রিসিভ করেন শিলাস্তি রহমান ও মোস্তাফিজুর রহমান। তারা নিচে কর্নারের রুমে যান। আনার যখন বুঝতে পারেন তিন চারজনের গতিবিধি, তখন তিনি অনেক কাকুতি-মিনতি করেন, বাঁচার চেষ্টা করেন। দৌড় দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ফয়সাল তার নাকে মুখে ক্লোরোফম ধরে নিস্তেজ করেন। এরপর হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
আনার কিলিং মিশনে ৭ জন অংশ নিয়েছেন, ৭ জনেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। ডিবির হাতে গ্রেপ্তার ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আকতারুজ্জামান শাহীনের বিষয়ে তিনি বলেন, শাহীন মাস্টারমাইন্ড ছিল আছে। তিনি বলেন, তদন্ত থেকে শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আমাদের কাছে শাহীন মাস্টারমাইন্ড। কারণ ওনিই তো তার পাসপোর্ট দিয়ে কলকাতার সঞ্জিভা গার্ডেনের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, বাসা ভাড়া, এসবই তো শাহীন করেছে। শাহীন ১০ই মে দেশে ফিরে এসেছেন। জিহাদ বাদে হত্যার পর একে একে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সবাই দেশে কেউ নেপালে চলে যায়। শিমুল ভূঁইয়া গ্রেপ্তারের পর শাহীন কিন্তু প্রথমে দিল্লি, এরপর নেপাল তারপর দুবাই হয়ে আমেরিকা চলে যান।
যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছেন, হত্যার কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি সম্পর্কে কিছু বলেছে কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, কলকাতার একটি মার্কেট থেকে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি চেয়ার কিনে আনেন। সঙ্গে আনেন ক্লোরোফম। সেই চেয়ারে বেঁধে আনারকে বিবস্ত্র করা হয়। এই কাজগুলো করেছে ফয়সাল। আর হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র সিয়াম এনে দিয়েছিল ফয়সালকে। আমরা সবগুলো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সম্ভাব্য কারণ আমলে নিয়ে তদন্ত করছি। সর্বশেষ গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিবো। জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
আনার হত্যা মামলায় নতুন গ্রেপ্তার দুই আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।