দেশ বিদেশ
ভারতের সঙ্গে চুক্তির প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক গণতন্ত্র মঞ্চের
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ জুন ২০২৪, শুক্রবারপ্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তিগুলো সার্বভৌমত্ববিরোধী এবং অসম চুক্তি আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আগামী ৫ই জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ‘ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া’ জানাতে এই সংবাদ সম্মেলেনের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতের সঙ্গে হওয়া এসব চুক্তির কোনোটাই বাংলাদেশকে লাভবান করবে না; বরং বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। বাংলাদেশের জনগণ কোনোভাবেই নিজের অর্থ খরচ করে পরের জন্য এই ঝুঁকি নিতে পারে না। ইন্ডিয়ান রাষ্ট্র অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক বিকাশকে রুদ্ধ করতে চায়। কারণ দক্ষিণ এশিয়াকে একটা পিপলস ফেডারেশন ইউনিয়নে পরিণত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু ভারত তা হতে দিতে চায় না। এজন্যই তারা সার্ককে পরিকল্পিতভাবে অকার্যকর করে রেখেছে। আমরা ট্রান্স-এশিয়ান কানেকটিভিটিকে কার্যকর করার পক্ষে কিন্তু শুধুমাত্র ভারতীয় স্বার্থ রক্ষার একপক্ষীয় এই ধরনের উদ্যোগে আশঙ্কা প্রকাশ করছি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু বছর কথাবার্তা হচ্ছে। একমাত্র গঙ্গা চুক্তি ছাড়া আরও যে ৫৩টি যৌথ নদী আছে, সেগুলোর কোনোটা নিয়ে আমরা চুক্তি করতে পারিনি। তিস্তার চুক্তি ২০১১ সালে প্রস্তুত হলেও তা স্বাক্ষর হয়নি। এই চুক্তি বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি। এরসঙ্গে আমাদের উত্তরাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত। এ চুক্তির বিষয়ে ভারতের দিক থেকেও অঙ্গীকার ছিল। কিন্তু এবার ঘোষণায় এ চুক্তি নিয়ে কোনো কিছু উল্লেখ নেই। নদীর অংশীদার হিসেবে পানির হিস্যা আমাদের অধিকারের বিষয়; কিন্তু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই সফরে তিস্তার পানি বণ্টন নয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়েছে। যাদের হাতে তিস্তা ধ্বংস হয়েছে তাদেরকেই তিস্তা ব্যবস্থাপনার অংশীদার করার আলাপ করে এসেছেন উনি।
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের দাসখত দেয়া সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে চীন-ভারতের আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক ব্যাটেল গ্রাউন্ড তৈরি করে ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বের’ সাংবিধানিক পররাষ্ট্রনীতি উপেক্ষা করা হয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ অবিলম্বে দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন্নকারী সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি বাতিল করতে আহ্বান জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোনায়েদ সাকি। এ ছাড়া এতে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি’র) সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।