ঢাকা, ১ জুলাই ২০২৪, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪ জিলহজ্জ ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

তিস্তা বিরোধ নিয়ে টেলিগ্রাফের সম্পাদকীয়

বাংলাদেশ ভারত তরল সম্পর্ক

মানবজমিন ডেস্ক
২৮ জুন ২০২৪, শুক্রবারmzamin

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তা নিয়ে বিরোধ। একে একটি জটিল সমস্যা বলে আখ্যায়িত করেছে ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ। এতে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে নয়াদিল্লিকে যা করতে হবে তা হলো- জটিল এই সমস্যার বিষয়ে অবশ্যই ঐকমত্যে আসতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এই জটিল সমস্যা হলো তিস্তা। ‘ফ্লুইড টাইস: এডিটরিয়াল অন ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশজ রিলেশন্স ওভার দ্য তিস্তা রিভার ডিসপিউট’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, গত সপ্তাহান্তে নয়াদিল্লি সফর করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। এই সফর একই সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সম্পর্কের জন্য গভীরভাবে প্রতীকী (সিম্বলিক) ও উল্লেখযোগ্য ছিল। তা হলো একে অন্যকে আস্থাশীল অংশীদার হিসেবে প্রয়োজন। তবু এই জটিল বন্ধত্বের গতিপথ নির্ধারণ করতে হবে। জানুয়ারিতে বাংলাদেশে আবার নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনা অন্য একটি দেশে তার প্রথম সরকারি সফর করেছেন।

বিজ্ঞাপন
এটা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নতুন করে শপথ নেয়ার কয়েকদিন পরেই। মোদি পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে মিটিং করতে প্রথম পূর্ণাঙ্গ সফর করেছেন শেখ হাসিনা এবং এটা হয়েছে তার বেইজিং সফরে যাওয়ার কয়েকদিন আগে। তবে নয়াদিল্লি এ বিষয়ে কথা বলতে অপছন্দ করে। শেখ হাসিনার প্রাধান্য দিয়ে প্রথম সফর হিসেবে ভারতকে বেছে নেয়া নয়াদিল্লির জন্য একটি বড় বার্তা। তা হলো- ঢাকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাকে স্থান দেয়। যখন চীন ক্রমাগতভাবে দক্ষিণ এশিয়া এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে তার প্রতিবেশীদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে, তখন ওই বার্তাকে স্বীকার করে নেয়া ও তার প্রতিদান দেয়া ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনায় সামুদ্রিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে একমত হয়েছেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগকে সমৃদ্ধ করার জন্য দুই দেশের মধ্যদিয়ে রেল পরিবহন শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। তা সত্ত্বেও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে দীর্ঘদিন অস্বস্তির উৎস তিস্তা নদী। দুই নেতার মধ্যকার আলোচনায় এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় আশার উৎস হিসেবে বেরিয়ে এসেছে। 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতায় তিস্তার পানি বণ্টন পরিকল্পনা শেলফে তুলে রাখতে হয়েছে প্রতিবেশীকে। কমপক্ষে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পানি বণ্টন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছেন মমতা। অন্যদিকে এই ইস্যুতে দেশের ভেতরে অব্যাহত রাজনৈতিক চাপের মুখে শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা এই নদীকেন্দ্রিক। এই নদীকে ঘিরে বড় রকমের অবকাঠামো পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে চীন।  ঢাকার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার বেইজিং। বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পে কাঁচামালের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী হলো চীন। গার্মেন্ট শিল্প থেকে বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ রপ্তানি রাজস্ব আসে। তিস্তা নিয়ে প্রকৃত এই চাপের অর্থ হলো- ভারতের অনিশ্চয়তার কারণে চীনের প্রস্তাবকে শেখ হাসিনা সাদামাটাভাবে প্রত্যাখ্যান করবেন এমনটা প্রত্যাশা করা যায় না। তিস্তায় অবকাঠামো উন্নয়ন ইস্যুকে খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশে একটি ভারতীয় টিম আসবে। এ বিষয়ে একমত হয়েছেন মোদি ও শেখ হাসিনা। যদি তা সফল হয়, চীন এবং ভারতের মধ্যে বন্ধু বেছে নেয়ার পরিবর্তে তা হবে এই অঞ্চলে নয়াদিল্লির সম্পর্কের জন্য একটি ‘টেমপ্লেট’। তাকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং নিজের উদ্যোগে তা ডেলিভারি দিতে হবে। কিন্তু নয়াদিল্লিকে প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য অবশ্যই মোদি ও মমতাকে জটিল সমস্যার বিষয়ে একমত হতে হবে। সেই সমস্যা হলো তিস্তা।
 

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status