অনলাইন
১৪ বছর পর বৃটেনের জেল থেকে মুক্ত জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
মানবজমিন ডিজিটাল
(৬ মাস আগে) ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘ ১৪ বছরের আইনি নাটকের অবসান। বৃটেনের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন আমেরিকার গোপন সামরিক ফাইল ফাঁস করায় অভিযুক্ত, উইকিলিক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। প্রশান্ত মহাসাগরের একটি মার্কিন অঞ্চল উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদালতে দায়ের করা নথি অনুসারে, জাতীয় প্রতিরক্ষা তথ্য প্রাপ্ত এবং প্রচারের ষড়যন্ত্রের জন্য দোষী সাব্যস্ত হবেন তিনি। যদিও এবার শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাকে। জেল থেকে বেরোতে আমেরিকার আদালতে আত্মসমর্পণ করে গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনের অপরাধ স্বীকার করতে হয়েছে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে।
জানা গেছে, তার কাছে যে সমস্ত গোপনীয় সামরিক তথ্য রয়েছে, তা প্রকাশ করার শর্তেই বৃটেনের জেল থেকে ছাড়া হয়েছে জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জকে। এ সপ্তাহেই মার্কিন আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে তার। তথ্য বলছে মার্কিন আদালতে তিনি দোষীই সাব্যস্ত হবেন। তবে তার সাজা কমে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বৃটেনের কারাগারে ইতিমধ্যেই সেই ৫ বছর কাটিয়ে এসেছেন তিনি। তাই এবার তিনি তার জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি পেতেও পারেন।
অ্যাসাঞ্জ ২০০৬ সালে হুইসেল-ব্লোয়িং ওয়েবসাইট উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১০ সালে তার সংস্থা সারা বিশ্বের বহু বার্তা ফাঁস করে দেয়ায় পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। সেই সময় মার্কিন সরকারের বহু গোপন বার্তাও ফাঁস করে দেয়ায় আমেরিকার কোপে পড়েন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০ সালেই ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সুইডেন সরকার। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে অ্যাসাঞ্জ পাল্টা দাবি করেন, মার্কিন সরকারের একাধিক গোপন বার্তা ফাঁস করে দেয়ার জন্যই তিনি চক্রান্তের শিকার।
২০০৭ সালে ইরাকে একটি মার্কিন হেলিকপ্টার গানশিপের আগুনে বেসামরিক নাগরিকদের নিহত হওয়ার ভিডিও-ও তিনি প্রকাশ করেছিলেন। নিহতদের মধ্যে রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ছিলেন। এই সমস্ত কারণেই তিনি আমেরিকার চক্ষুশূল এবং সুইডেন থেকে তাকে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শেষমেশ লন্ডন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন অ্যাসাঞ্জ। কিন্তু জামিন পাওয়ার পরেই উধাও হয়ে যান। দু'বছর আত্মগোপন করে থাকার পরে, অবশেষে ২০১২ সালে ইকুয়েডরের কাছে রাজনৈতিক পুনর্বাসন পান তিনি। পান কূটনৈতিক রক্ষাকবচও। অবশেষে ইকুয়েডরে তার নাগরিকত্বের মেয়াদ ফুরোয় এবং ২০১৯ সালে তাকে গ্রেফতার করে জেলে ভরে বৃটিশ পুলিশ। শুরু হয়, উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার আমেরিকায় প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া। কিন্তু, লন্ডনের উচ্চ-নিরাপত্তা বেলমার্শ কারাগার থেকেই বৃটেনের আদালতে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ। সেই থেকে একটানা ১৪ বছর ধরে টানাপড়েনের পরে আত্মসমর্পণ করে এবার জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জ ফিরবেন আমেরিকায়।
সূত্র : আলজাজিরা
চোরের সব সময়ই পুলিশের ভয় থাকে । নতুবা তথ্য প্রকাশ করায় এত ভয় কেন ?