প্রথম পাতা
ছাগল কাণ্ড
সেই মতিউরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
স্টাফ রিপোর্টার
২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার
ছাগল কাণ্ডে আলোচিত রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তার সঙ্গে প্রথম পক্ষের স্ত্রী লায়লা কানিজ ও পুত্র তৌফিকুর রহমান অর্ণবকেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। গতকাল ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। বিশ্বস্ত সূত্রে দুদক জানতে পারে, মতিউর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। এজন্য সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আবেদন করে দুদক। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
এ বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে দুদকে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে, যারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলেন, মো. মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমান যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সমপ্রতি ঈদুল আজহায় আলোচিত সাদেক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনে আলোচনায় আসা ইফাতকে নিজের সন্তান হিসেবে প্রথমে অস্বীকার করেছিলেন ড. মতিউর রহমান। পরে অবশ্য ইফাতের মায়ের পক্ষের আত্মীয়রা নিশ্চিত করেন ইফাত মতিউর রহমানের ছেলে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সবাই খুঁজতে থাকেন এত টাকার উৎস কী? সামনে আসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নাম। তার ছেলের দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন, মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
এদিকে মতিউর রহমান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই খবরে উল্লেখ করা হয়, প্রভাবশালী এক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গত ২৩শে জুন বিকালে স্থলবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি। ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর থেকে মতিউরের কোনো হদিস মেলেনি। ঈদুল আজহার ছুটির পরে অফিস খুললেও তিনি এখনো যোগদান করেননি। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর ভারতে পালিয়েছেন। ভারত থেকে তিনি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন।
মতিউরের সম্পদ নিয়ে আলোচনার মুখে ২৩শে জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ছাগলকাণ্ডের পর মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে, যা দুদকে তদন্তাধীন রয়েছে। মতিউরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারি এই কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এর মধ্যে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তার নামে-বেনামে সম্পদের তথ্য জানতে মাঠে নেমেছে। প্রাথমিকভাবে তার সম্পদের সত্যতা পাওয়া গেছে।
পাঠকের মতামত
মতিউরের মত লুটেরাদের হাতে আজ মাতৃভূমি অসহায়। শতশত মতিউরেরা মাতৃভূমিকে খুবলে খাচ্ছে।
আমার মনে হয় উনি কোথাও একটু দুষ্টমি করেছেন।
YouTube এ দেখলাম মাথা ন্যাড়া করে উনিও দেশ ত্যাগ করেছেন। মাথা ন্যাড়া করলেও নাম তো ছিল, মুখের চেহারা ও বদল করেন নি । ইমিগ্রেশন সরকারের নির্দেশ মানছে না ।