শেষের পাতা
শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা, গরু কিনে সন্তুষ্ট ক্রেতারা
পিয়াস সরকার
১৬ জুন ২০২৪, রবিবারছোট একটি পিকআপে গরু তুলছিলেন রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল হোসেন। তিনি দু’দিন গরুর দাম যাচাই করে গতকাল এক লাখ ৮১ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, আমি খুশি। কয়েকটা গরু দামাদামি করে কিনেছি। মোজাম্মেলের মতো গরু কিনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অনেক ক্রেতাই। তবে ছোট গরু যাদের লক্ষ্য তারা বেশ ভুগেছেন। ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা যাদের বাজেট তাদের কিনতে হয়েছে বাজেটের থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেশি দামে। উল্টোদিকে বড় গরু এনে বিপাকেই পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বড় গরুর ক্রেতা হাটে নেই বললেই চলে।
রাজধানীর বৃহৎ কোরবানির পশুর হাট গাবতলীতে গতকাল এই দৃশ্য চোখে পড়ে। ঈদের একদিন আগে ক্রেতা না পেয়ে হতাশ ও লোকসানের শঙ্কায় বিক্রেতারা।
কুষ্টিয়া থেকে ২৮টি গরু এনেছেন আবুল হোসেন। এগুলোর মধ্যে ১৮টি গরু ছোট ও মাঝারি আকারের। এগুলোর মধ্যে ১৪টি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বড় ১০টি গরু নিয়ে যতো বিপত্তি। বলেন, বড় গরুগুলোর দাম ছয় থেকে আট লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। কাস্টমাররা অর্ধেক দামও বলে না। আবার এই গরুগুলো যদি খামারে নিয়ে যাওয়া লাগে তাহলে মাথায় বাড়ি পড়বে।
গাবতলী হাটে গরুর থেকে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। ক্রেতারা দেখেশুনে দামাদামি করে ক্রয় করছেন। পাবনা থেকে গরু নিয়ে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ছয়টা গরু নিয়ে এসেছেন। বিক্রি হয়েছে মাত্র একটি। গরুর দাম বাকি রেখেছেন ১২ লাখ টাকা। আর ধার করেছেন ছয় লাখ টাকা। তিনি বলেন, এখন বাজারের যে অবস্থা তাতে আরও লস দিয়ে ট্রাক ভাড়া করে গরু নিয়ে ফিরতে হবে।
বিক্রেতাদের শঙ্কা থাকলেও ক্রেতারা খুশি। গতকাল দুপুরে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ গরুর দাম ছিল এক লাখ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা। হাটে বৃহদাকার গরুর ক্রেতা খুবই কম। ১০ লাখ টাকা দাম হাঁকানো বড় গরুর সংখ্যাও বেশ। এ ছাড়াও হাটে এসেছে ভেড়া, মহিষ, উট, দুম্বা।
আবার ছাগলের বাজারেও ক্রেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। অনায়সেই ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ছাগল। সিরাজগঞ্জের চরে পালন করা ৩৮টি ছাগল নিয়ে গাবতলী হাটে এসেছেন আলমগীর হোসেনসহ তিনজন। আমার ছাগলগুলোর সাইজ মাঝারি। এই ছাগলগুলো কাস্টমার কেনে বেশি।
২৮ হাজার টাকায় ছাগল নিয়ে রিকশায় করে আদাবরের বাড়িতে ফিরছিলেন কাউসার হোসেন। তিনি বলেন, ছাগল কিনে খুশি। আমার বাজেট ছিল ৩০ হাজার টাকা। দুই হাজার টাকা কমেই ভালো ছাগল পাইছি।
ছোট গরু ছাগলের চাহিদা সব সময়ই বেশি থাকে। যাঁরা পশুপালনের সাথে সম্পৃক্ত তাঁরা বিষয়টি বিবেচনা করে ভবিষ্যতে খাঁটি দেশি গরু ছাগলের উৎপাদন বাড়াবেন বলে আশা করি ইনশাআল্লাহ। পারতপক্ষে বিদেশি কিংবা সংকর জাতের গরু ছাগল এড়িয়ে চলা উচিত বলে মনে করি।