বাংলারজমিন
ভিজিএফ নিয়ে ভেলকিবাজি
নীলফামারী প্রতিনিধি
১৫ জুন ২০২৪, শনিবারপবিত্র ঈদ উপলক্ষে গরিব অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে বিতরণকৃত ভিজিএফ চাল নিয়ে গোটা নীলফামারী জেলায় শুরু হয়েছে ভেলকিবাজি। ওজনে কম দেয়া থেকে শুরু করে কি অনিয়ম নেই এখানে। কোথাওবা প্রকৃত দুস্থরা বঞ্চিত হয়েছেন। কোথাওবা একই পরিবারের সকলেই স্লিপ পেয়েছেন। কোথাওবা চেয়ারম্যান-মেম্বাররা নিজেদের লোকজনদের মাঝে স্লিপ বিতরণ সেরেছেন। কোথাওবা দুস্থের চাল সুস্থের হাতে গেছে। স্লিপ বিক্রির অভিযোগও রয়েছে বিস্তর। তবে একই অভিযোগের তীর দলীয় ভাবে বিতরণকৃত স্লিপের ক্ষেত্রেও। সূত্র জানায়, এ অবস্থা জেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নেই। সূত্র জানায়, নীলফামারী জেলার ৬ উপজেলার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৩১৯ জন এবং ৪ পৌরসভায় ১৩ হাজার ৮৬৩ জন অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে মোট ২ হাজার ৫২১ টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে নীলফামারী সদর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮৭টি স্লিপের বিপরীতে ৫৫০.৮৭০ টন, ডোমারে ৩৪ হাজার ৪০৬টি স্লিপের বিপরীতে ২৪৪.৬০ টন, ডিমলায় ৪০ হাজার ৯১৩ স্লিপের বিপরীতে ৪০৯.১৩০ টন, জলঢাকা উপজেলায় ৪৩ হাজার ২৯৭ স্লিপের বিপরীতে ৪৩২.৯৭০ টন, কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ২৬ হাজার ২০৭ স্লিপের বিপরীতে ২৬২.৭০ টন এবং সৈয়দপুর উপজেলায় ৩৮ হাজার ৩১৯ স্লিপের বিপরীতে ৩৮৪.৯০ টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
এ ছাড়া, নীলফামারী পৌরসভায় ৪ হাজার ৬২১ স্লিপের বিপরীতে ৪৬.২১০ টন, সৈয়দপুর পৌরসভার ৪৬২১ স্লিপের বিপরীতে ৪৬.২১০ টন, ডোমার পৌরসভায় ১৫৪০ স্লিপের বিপরীতে ১৩৮.৬৩০ টন এবং জলঢাকা পৌরসভায় ৩ হাজার ৮১ স্লিপের বিপরীতে ৩০.৮১০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গোটা জেলায় বিতরণ শুরু হয়েছে ভিজিএফ প্রকল্পের বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ভিজিএফ চাল নিয়ে বরাবরের মতো এবারো শুরু হয়েছে নানামুখী তেলেসমাতি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১০ জন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ভিজিএফ নিয়ে মহাফাপড়ে রয়েছেন। তারা বলেন, চাল উত্তোলন থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত পদে পদে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন চেয়ারম্যানরা। গুদাম থেকে চাল তুলতে গেলেই শ্রমিকদের টাকা দিতে হয়। না দিলেই ছেঁড়াফাটা বস্তার চাল কপালে জোটে। মনে হবে দেশের সমস্ত ইঁদুর খাদ্যগুদামে জড়ো হয়েছিল। সমস্ত বস্তা ছেঁড়াফাটা।
বস্তা লোড-আনলোড খরচ, আছে পরিবহন খরচ। আছে বস্তা পাহারার খরচ। আছে তালিকা ও মাস্টাররোল খরচ। আছে বিতরণের খরচ। কিন্তু কোনো খরচই নাকি সরকারিভাবে দেয়া হয় না। তবে বস্তা বেচে আসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। অথচ চেয়ারম্যানদের খরচ নাকি লাখ টাকা ছুঁই ছুঁই।