প্রথম পাতা
দুর্ভাগ্যজনক হার
ইশতিয়াক পারভেজ, নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে
১১ জুন ২০২৪, মঙ্গলবারনিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের দিন জেতা উচিত ছিল পাকিস্তানের। ১২০ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান হারে ৬ রানে। কাল একই ভেন্যুতে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১১৪। ৫০ রানে চার উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই দু’জনের ব্যাটে শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০ রানের। তখনই আম্পায়ার্স কলের শিকার হন তাওহীদ হৃদয়। এরপর জাকের আলী ও রিয়াদ ম্যাচকে নিয়ে গেলেন শেষ ওভারে। কেশব মহারাজের শেষ ওভারে ১১ রান করতে পারলো না বাংলাদেশ। তিনটি ফুলটস দেওয়া বাঁহাতি স্পিনারের বলে ২ উইকেট হারিয়ে করতে পারলো কেবল ৬ রান। প্রথম দুই বলে আসে চার রান। তৃতীয় বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারার চেষ্টা করে লংঅনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন জাকের আলী। পরের বলে দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউ বাতিল হলে বেঁচে যান রিশাদ হোসেন। ওভারের পঞ্চম বলে লো ফুলটসে ছক্কা মারতে গিয়ে একেবারে বাউন্ডারিতে মাক্রামের হাতে তালুবন্দী হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ বলে সুযোগ ছিল তাসকিন আহমেদের সামনে। ছক্কা মারলেই ম্যাচটি জিতে জেতো বাংলাদেশ। ফুলটসে এক রানের বেশি তুলতে পারেননি এই পেসার। শেষ পর্যন্ত ৪ রানের হার। সঙ্গে সঙ্গে নাসাউ জুড়ে যেন নেমে আসে রাজ্যের নিরবতা।
শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর এই ম্যাচ জিতলেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যেতো টাইগারদের শেষ আট। তবে এখনো আশা শেষ হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে নেদারল্যান্ড ও নেপালকে হারাতে পারলেই হবে স্বপ্নপূরণ। কথা থাকে, এই ম্যাচ হারের দায়টা আসলে কার! ম্যাচটি সত্যিকার অর্থে কখন হাতছাড়া হলো? সাকিব ও শান্তর বাজে শটে আউট এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় টাইগাররা। নর্কিয়ার করা অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন সাকিব। শান্তও একই কাজ করেছেন ম্যাচের দশম ওভারের শেষ বলে। ২৩ বলে এক ছক্কায় ১৪ রান করেন শান্ত। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরেন সাকিব। এদের বিদায়ে পঞ্চম উইকেটে তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের লড়াই বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখলেও আম্পয়ারে দুটি সিদ্ধান্তে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটি নিশ্চিত ৪ রান পায়নি টাইগাররা। ইনিংসের ১৭তম ওভারের ঘটনা সেটি। ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পায়ে লেগে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। কিন্তু বোলারের আবেদনে আম্পায়ার আউট দেন। রিয়াদ রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায় বল স্টাম্প মিস করেছে। কিন্তু আম্পায়ার আউট দেওয়াতে ওই ৪ রান যোগ হয়নি বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। শেষ পর্যন্ত হারের ব্যবধান হয়েছে সেই ৪ রানই। আর একটি তাওহীদ হৃদয়ের বেলায়। মাহমুদউল্লাহ বাঁচলেও এ যাত্রায় হৃদয়ের রক্ষা হয়নি আম্পায়ার্স কলের কারনে। আবেদন জোরাল ছিল না রাবাদার। কিন্তু আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ দেন এলবি। রিভিউতে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের চূড়ায় শুধু ছুঁয়ে যেত বলটি। ভাগ্য সহায় না থাকায় ৩৪ বলে ৩৭ রানে ফেরেন হৃদয়। ১৯.৫তম ওভারে কেশব মহারাজের ফুলটসে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পরেন মাহমুদউল্লাহ। ২৭ বলে ২০ রান করেন এই ব্যাটার।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভার করতে আসা বাংলাদেশের তানজিম হাসানের দ্বিতীয় বলে ছক্কা ও তৃতীয় বলে চার মারেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তবে ওভারের শেষ বলে আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিক্সকে খালি হাতে বিদায় দেন তানজিম। নিজের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন তানজিম। ১১ বলে ১৮ রান করা ডি কককে বোল্ড করেন তানজিম। ইনিংসে চতুর্থ ওভারে উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তোলেন তাসকিন। দারুন এক ডেলিভারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক আইডেন মার্করামক ৪ রানের সময় বোল্ড করেন তাসকিন। নিজের প্রথম দুই ওভারে উইকেট নেওয়া তানজিম তার ঝলক অব্যাহত রাখেন। তৃতীয় ওভারে সাকিব আল হাসানের ক্যাচে মিডল অর্ডার ব্যাটার ট্রিস্টান স্টাবসকে খালি হাতে সাজঘরে ফেরত পাঠান তানজিম। পঞ্চম ওভারে দলীয় ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই নিয়ে চতুর্থবার বিশ^কাপে পাওয়ার প্লেতে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট শিকার করলো বাংলাদেশ। তবে এ অবস্থায় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন হেনরিচ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। উইকেট ধরে খেলে ১০ ওভার শেষে দলের রান ৫৭ নেন তারা। ততক্ষণে উইকেটে সেট হয়ে যান ক্লাসেন ও মিলার। ১১তম ওভারে প্রথমবারের মত বোলিং আক্রমণে আসেন স্পিনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ডেলিভারিতে মিলারকে বিদায়ের পথ তৈরি করেছিলেন রিয়াদ। কিন্ত উইকেটের পেছনে মিলারের ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন দাস। জীবন পেয়ে ক্লাসেনকে নিয়ে ১৭তম ওভারে দলের রান ১শ পার করেন মিলার। ডেথ ওভারে মারমুখী হবার পরিকল্পনায় ছিলেন ক্লাসেন ও মিলার। কিন্তু ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ক্লাসেনের উইকেট উপড়ে ফেলেন তাসকিন। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৪ বলে দলের সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ক্লাসেন। পরের ওভারে মিলারকে বোল্ড করেন রিশাদ। ১টি করে চার-ছক্কায় ৩৮ বলে ২৯ রান করেন মিলার। পঞ্চম উইকেটে ৭৯ বলে ৭৯ রান যোগ করেন ক্লাসেন-মিলার। দলীয় ১০৬ রানের মধ্যে ক্লাসেন ও মিলার ফেরার পর ইনিংসের বাকী ১০ বলে ৭ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রানের সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা।
৪ ওভার করে বল করে তানজিম ১৮ রানে ৩টি ও তাসকিন ১৯ রানে ২ উইকেট নেন। ৮ ম্যাচের টি- টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তানজিম। আগের ম্যাচের হিরো রিশাদ ৩২ রানে নেন ১ উইকেট। এ ছাড়া মুস্তাফিজুর রহমান কোন উইকেট না পেলেও ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রান দিয়েছেন।
ভাল খেলেছে। এর চেয়ে ভাল কোন দল খেলতে পারবে না। সব খেলায় জিততে হবে এমন তো কথা নেই। হেরেছে কিন্তু এই হারা তেও গৌরব আছে। আমি এখনো আশাবাদী, আরো ভাল খেলবে আমাদের দল।
দুই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা অসাধারণ পারফরম্যান্স করলেও প্রথম সারির ব্যাটারদের অতিরিক্ত কনফিডেন্স ও অমার্জনীয় ব্যর্থতার কারণে সহজ জয়টা হাত ছাড়া হয়ে গেল, নিউইয়র্কের নাসার স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা অগণিত সমর্থকদের যেমন হতাশা ও লজ্জায় ফেলে দিয়েছে তেমনি বাংলাদেশে লাখ লাখ ক্রিকেট পাগল দর্শকদের আশাহত করেছে কারণ একই স্টেডিয়ামে একদিন আগে হাওয়া ভারতের কাছে পাকিস্তানের পরাজয় থেকে তারা বিন্দুমাত্রও শিক্ষা গ্রহণ করে নেই তাদের ভাবটা এই রকম যেন "দশে মিলে করি কাজ হেরে যেতে নাহি লাজ"।
বাংলাদেশের হারের জন্য সাকিব বাল হাসান কান্ডজ্ঞানহিীন ব্যাটিং ও খালাত ভাই শানন্তের টেস্ট মেজাজের ব্যাটিং ও লিটন দাস দায়ী।
এজন্যই ক্রিকেট খেলাকে অনিশ্চয়তা গৌরবময় খেলা বলা হয়। এখানে যদি কিন্তুর কোন হিসাব নাই। কারণ যদি কিন্তুর হিসাব হলে সাউথ আফ্রিকার জন্যও হবে যদি সাউথ আফ্রিকা আর ২০ টি রান বেশী করতো? তাহলে কি হতো!
শান্তু মিয়া আল শাহ্রিয়ার রোকেনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এই লক্কর ঝক্কর আরো অবস্থা খারাপ করে দিচ্ছে ক্যাপ্টেন হওয়ার কারনে