অনলাইন
বাজেটে অলিগার্কদের জয় হয়েছে, হেরে গেছে জনগণ: এবি পার্টি
স্টাফ রিপোর্টার
(৫ মাস আগে) ১০ জুন ২০২৪, সোমবার, ৬:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) বলেছে, এতে আইএমএফ এবং ধনবাদী অলিগার্কদের জয় হয়েছে, হেরে গেছে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ। মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, দুর্বল বিনিয়োগ ও খেলাপি ঋণের কোন সুরাহা এ বাজেটে হয়নি। এই বাজেট সরকারের ডামি ও চুরি নীতির ধারাবাহিকতা মাত্র। পাশাপাশি আদালতকে ব্যবহার করে কোটা পুনর্বহালের মাধ্যমে সরকার আবারও নোংরা খেলা শুরু করেছে।
সোমবার রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘দুর্নীতি, কালোটাকা ও ঋণখেলাপি বান্ধব বাজেট প্রত্যাখ্যান এবং বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে’ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন; আওয়ামী লীগ ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছে, তাতে দুই তৃতীয়াংশ সরকারের বেতন ও বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে খরচ হয়ে যাবে। এই বাজেটে খরচের সবচেয়ে বড় খাত হলো বৈদেশিক ঋণ-পরিশোধ খাত। এ খাতে বাজেটের ১৪.২ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। ৪ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে সরকার এই বাজেটে নতুন করে আরও ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা নতুন ঋণ নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
তারা বলেন, উন্নয়নের যে বাজেট রাখা হয়েছে, সেটা পুরাটাই ঋণ নির্ভর। দেখে মনে হচ্ছে, সরকার আইএমএফ থেকে তৃতীয় কিস্তি সুরক্ষিত করতে মরিয়া, ডলারের রিজার্ভ এবং পেমেন্টের ভারসাম্যের উপর চাপ কমাতে সে দিশাহারা। প্রস্তাবিত বাজেট ঋণ ও ঘাটতি ভিত্তিক হওয়ায় এর ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চাওয়া ছাড়া তার আর কোনো বিকল্প নেই। এভাবে ঋণ নির্ভর ঘাটতি বাজেট চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছর পর দেখা যাবে করের সব টাকা দিয়েও ঋণ শোধ করা যাবেনা এবং ঋণ করে ঋণের সুদ শোধ করতে হবে। অর্থাৎ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, দেশ দেউলিয়া হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই স্বৈরাচারী শাসনের অবিরাম লুট ও লুণ্ঠন এভাবে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেশকে চিরস্থায়ী ঋণের ফাঁদে ফেলে দিচ্ছে।
বৈধ আয়কর দাতাদের সর্বোচ্চ কর ৩০ শতাংশ আর অবৈধ কালোটাকার মালিকদের কর ১৫ শতাংশ করার সমালোচনা করে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এটা সরকারের কৌশলগত ডামি ও চুরি নীতির ধারাবাহিকতা। নিজস্ব লোককে দিয়ে তারা যেভাবে বিরোধীদল বানিয়েছে তেমনি দলীয় লোকদের দুর্নীতি-লুটপাটের কালোটাককে বৈধ করে দেয়ার এটা একটা নির্লজ্জ পদক্ষেপ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৭% প্রস্তাব করা হলেও চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে প্রায় ৫.৮%। যদিও সরকারের দেয়া তথ্য ও ডাটা বিশ্বাস করা কঠিন। কারণ তারা সেখানেও নানা ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে থাকে।
রাজস্ব সংগ্রহের পরিকল্পনাকে আকাশ কুসুম ও অবাস্তব আখ্যা দিয়ে তারা আরও বলেন, এনবিআর কখনোই ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারেনি। শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্তদের ওপর করের বোঝা দিন দিন অসহনীয় মাত্রায় বাড়ছে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারি সংস্থাগুলো মূল্যস্ফীতি ৯% বললেও বাস্তবে মুল্যস্ফীতি ২০-৪০%। এই বাজেট বাস্তবায়িতে হলে মূল্যস্ফীতি কমার বদলে আরও বাড়বে, দরিদ্র পরিবার বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি।