খেলা
‘ড্রপিং উইকেট’, একই কাতারে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
ইশতিয়াক পারভেজ, নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) থেকে
(১০ মাস আগে) ১০ জুন ২০২৪, সোমবার, ৩:৫৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৯ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হারের পর বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ হারিয়েছিল বাংলাদেশিরা। অনেকেই রাগে অভিমানে নিজেদের টিকিটগুলো কেনা দামের চেয়েও সস্তায় ছেড়ে দেন। তবে বদলে গেছে চিত্র। নিউ ইয়র্কে এখন টিকিট নিয়ে হাহাকার। আজ নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। খেলা শুরু রাত সাড়ে ৮টায়। ভীষণ শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে টাইগাররা জিতবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে সামনে এসেছে নাসাউয়ের ড্রপিং উইকেট। যেখানে দুই দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য অপেক্ষা করছে সমান চ্যালেঞ্জ। গতকাল এই উইকেটে ভারত ১১৯ রান করেও হারিয়ে দিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। এই উইকেটে আসলে ভাগ্য নির্ধারণ করে দেবে বোলাররাই। আর এই কারণেই হয়তো দুই দলকে একই কাতারে ভাবছেন টাইগারদের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ব্যাটারদের জন্য উইকেট খুব সহজ নয়। এতে আসলে দুই দল এক কাতারে চলে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ বেশ ভালো। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে ওদের সঙ্গে খুব ভালো লড়াই করতে পারবো।’
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে দলে স্বস্তি ফিরেছে। এই জয়ে টাইগারদের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে গোটা নিউ ইয়র্কে যেন সাজসাজ রব। খেলা দেখতে ও মাঠে গিয়ে দলকে সমর্থন জানাতে মুখিয়ে আছেন ভক্ত-সমর্থকরা। প্রথম জয়ে শুধু দেশের ক্রিকেটপ্রেমীই নয়, স্বস্তি ফিরেছে গোটা দলের মধ্যেও। বিষয়টি প্রধান কোচ জানিয়েছেন অকপটেই। হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই ফলাফলে ওরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। একটি ম্যাচ খেলে কাক্সিক্ষত দুটি পয়েন্ট ওরা পেয়েছে। আমাদের জন্য অনেক বড় ম্যাচ ছিল এটি। ম্যাচের আগের সময়টায় প্রচণ্ড চাপ ছিল। তবে ছেলেদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। ওরা ফল পেয়েছে।’
বলার অপেক্ষা রাখে না টাইগারদের অন্যতম দুর্বল দিক ব্যাটিং যা নিয়ে চিন্তা চলে আসে আলাদা ভাবেই। তাই সবকিছু বাদ দিয়ে নিজের শক্তির জায়গা নিয়ে ব্যাটসম্যানদের একটু শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কোচ হাথুরু। তিনি বলেন, ‘আমরা ওদের খেলা নিয়ে, শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে ও ওদের প্রতিপক্ষ নিয়ে কথা বলতে পারি। তবে মাঠে নামার পর ব্যাপারটা পুরোপুরিই তাদের নিজেদের। নিজের খেলা বুঝতে হবে তাদের। এটা টেকনিক্যাল ব্যাপার নয়। তাদের আউটের দিকে তাকালে দেখবেন, নির্দিষ্ট কোনো ধরনে তারা আউট হচ্ছে না। অনেকভাবে আউট হচ্ছে। তাদেরকে আরেকটু শান্ত হতে হবে এবং নিজেদের শক্তির জায়গা ভাবতে হবে। আত্মবিশ্বাস থাকলে নিজেদের শক্তি অনুযায়ী খেলা যায়। ব্যাটারদের জন্য বার্তা হলো, ভালো সময়ের কাজগুলির পুনরাবৃত্তি করো।’
ম্যাচের আগে গতকাল কেন্টিয়াক পার্কে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। সেখানে ড্রপিং পিচে দলের ব্যাটারদের খাবি খেতে দেখা গেছে ভীষণ ভাবে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে দেখেছেন শিষ্যদের ব্যাটিং। তবে প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে না ভেবে নিজের শক্তির জায়গা নিয়ে অটল থাকতে বলেছেন টাইগার কোচ। তিনি বলেন, ‘যে কোনো খেলাতেই নিজের শক্তির জায়গায় অটল থাকতে হয়। যে কোনো ব্যাটারের জন্যই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কন্ডিশন। পরিস্থিতি ও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে কাজটা কঠিন। প্রথমে ব্যাট করলে আমাদের কী করতে হবে, পরে ব্যাট করলে কী করতে হবে, এসব নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা। নিজের শক্তির জায়গায় স্থির থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সেটির বড় অংশই হলো কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।’
তবে চন্ডিকার স্বপ্নটা যে বেশ বড় তা দ্বিতীয় ম্যাচের আগেই খোলাসা করেছেন। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনো যা করেনি তাই করার চিন্তা প্রধান কোচের। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচই চাপের। আমাদের জন্য এটি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। আমরা এমন কিছু করতে চাই, আগে কখনোই যা করতে পারিনি, দ্বিতীয় ধাপে যেতে চাই। সেই লক্ষ্য পূরণের পথে আরেকটি বড় সুযোগ এই ম্যাচ।’