কলকাতা কথকতা
আবারও রক্ত ঝরলো ভোটের বাংলায়
সেবন্তী ভট্টাচার্য্য, কলকাতা
(৩ মাস আগে) ২৫ মে ২০২৪, শনিবার, ৮:১৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:৩৭ অপরাহ্ন
নিহত তৃণমূল কর্মী শেখ মইবুল
শনিবার ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে তৃণমূল কর্মীকে হত্যার ঘটনা ঘটল। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মহিষাদলে ওই তৃণমূল কর্মীকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল। অন্য দিকে, এই লোকসভা কেন্দ্রের ময়নায় আরও এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারার অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মহিষাদলের নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম শেখ মইবুল (৪২)।
ঘটনাটি ঘটেছে, মহিষাদলের ধামাইতনগর এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন মইবুল। সে সময় রজনীগঞ্জ বাজার এলাকায় তাঁর সঙ্গে কয়েক জনের বচসা বাধে। কথা কাটাকাটি চলাকালীনই মইবুলের উপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শাসকদলের দাবি, ভোটের মুখে তৃণমূলকে সন্ত্রস্ত করতেই মইবুলকে রাস্তা থেকে খুন করা হল। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের। যদিও পদ্মশিবিরের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তাদের মতে, এই মুহূর্তে এলাকায় তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। নিজেদের মধ্যেই ক্ষমতার দখল নিয়ে ক্রমাগত লড়াই চলতে থাকে। সেই ঝামেলা থেকেই মইবুলকে খুন করা হয়েছে।
অন্যদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমবাজির অভিযোগে ধর্নায় বসলেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার ভোট শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছিলেন অভিজিৎ। কখনও হলদিয়া কখনও নন্দকুমার, বুথ জ্যাম সংক্রান্ত অভিযোগ কানে আসা মাত্র সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভারকে সেদিকে গাড়ির ছোটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কখনও বা পড়েছেন বিক্ষোভের মুখে। ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দার আপ্ত সহায়ক গৌতম কুণ্ডুর বাড়িতে পুলিশের তল্লাশি অভিযানের খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ। এলাকাটি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। পুলিশের কাছে তিনি সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চান। পুলিশ তা দেখাতে পারেনি। এরপরই পুলিশি জুলুমের অভিযোগে বিধায়কের আপ্ত সহায়কের বাড়িতেই ধর্নায় বসে পড়েন অভিজিৎ।
ভোটের দিন আক্রান্ত হলেন খোদ বিজেপি প্রার্থীই! স্রেফ গাড়িতে ভাঙচুর নয়, তাঁকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টিও। কোনোমতে পালিয়ে বাঁচেন বিজেপি প্রার্থী। মাথা ফাটল CISF জওয়ানের। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা। ভোট গ্রহণ চলছিল ঝাড়গ্রাম-সহ ৮ লোকসভা কেন্দ্রে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু।
অভিযোগ, গড়বেতার মঙ্গলপোতা গ্রামে ভোটদানে বাধা দেওয়া হচ্ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। খবর পেয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছন বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু। এরপর তাঁকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। ওঠে, 'গো-ব্যাক' স্লোগান। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে ভাঙচুর চালান বিক্ষোভকারীরা। সঙ্গে প্রার্থীকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টিও! ভয়ে কার্যত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁকে।
এদিকে মেদিনীপুর এবং শালবনির দুটি এলাকায় ভোটারদের 'বিজেপিকে ভোট দানে'র জন্য প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। মেদিনীপুর শহরের কলেজিয়েট স্কুলের বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের বিজেপির বোতামে ভোটদানের জন্য প্রভাবিত করেন বলে অভিযোগ। একই অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরের শালবনির মহিষলোট এলাকায়। সেখানকার একটি বুথেও বাহিনীর বিরুদ্ধে ভোটারদের বিজেপিতে ভোটদানের জন্য প্রভাবিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের পাঁচটি বুথে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটে বিজেপির ট্যাগ লাগানো রয়েছে বলে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল।
ভোটপর্বের মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় তফসিলি জনজাতির এক নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত জওয়ানকে আটক করে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। লোধা সম্প্রদায়ের ওই বধূর অভিযোগ, পানি খাওয়ার নাম করে বাড়িতে ঢুকে তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন ওই জওয়ান। ওই জওয়ান পানি চাওয়ার পরে তিনি পানির বোতল দিয়েছিলেন। পানি খেয়ে তাঁর সঙ্গে অভিযুক্ত জওয়ান আপত্তিকর ব্যবহার করেন।