খেলা
চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ‘উড়িয়ে’ আনা আফিফই নায়ক
স্পোর্টস রিপোর্টার
১ মে ২০২৪, বুধবারঢাকা প্রিমিয়ার লীগের মাঝে জাতীয় দলের ক্যাম্প। সেখানে ডাক পেলেন আবাহনীর ১০ ক্রিকেটার। অবস্থা এমন যে, গতকাল শেখ জামালের বিপক্ষে একাদশ সাজানোই দায় টানা ১৩ ম্যাচ জেতা দলটির। অথচ শেখ জামালকে হারালেই চ্যাম্পিয়ন হবে তারা। পরে শেষ দিকে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ৩ ক্রিকেটারকে খেলানোর অনুমতি পায় আবাহনী। তাদের মধ্যে একজন আফিফ হোসেনই পার্থক্য গড়ে দেন গতকাল। তার ফিফটিতে শেখ জামালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ডিপিএলের শিরোপা জিতলো আবাহনী। ডিপিএল লিস্ট এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর পঞ্চম ও সবমিলিয়ে এটা আবাহনীর ২৩তম শিরোপা। গতকাল বিকেএসপি’র ৪ নম্বর মাঠে ডিপিএলের সুপার লীগের ম্যাচে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারায় আবাহনী। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ২৬৭ রান করে শেখ জামাল।
চলতি আসরে এখন পর্যন্ত টানা ১৪ ম্যাচে জয় পেলো আবাহনী। বাকি আছে দুই ম্যাচ, যদিও সেগুলো এখন স্রেফ নিয়মরক্ষার। রান তাড়ায় এদিন ১০ রানে সাব্বির হোসেনকে হারায় আবাহনী। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় মিলে গড়েন ৫০ রানের জুটি। ২১ রান করে নাঈম ফেরার পর আফিফকে নিয়ে আবার এগোতে থাকেন বিজয়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। আগের রাতে চট্টগ্রাম থেকে এসে আজ সকালে মাঠে নেমে শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন আফিফ। উইকেটের চারদিকে শট খেলে আবাহনীকে জয়ের পথে রাখেন তিনি। তার সঙ্গী বিজয়ও ছিলেন দারুণ সাবলীল। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে বিজয় ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি। ফেরার আগে ৮০ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৬৭ রান করেন বিজয়। এরপর অধিনায়ক মোসাদ্দেক এসে সঙ্গ দেন আফিফকে। তবে তিনিও বিদায় নেন কিছুক্ষণ পর। ৮৮ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৮৩ রান করেন আফিফ। তার বিদায়ের পর ৪১ বলে ৫৫ রান প্রয়োজন ছিল আবাহনীর। এরমধ্যে নাহিদুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরলে চাপে পড়ে তারা। যদিও একপ্রান্তে তখনও ছিলেন মোসাদ্দেক। শেষ ওভারে ৯ রান প্রয়োজন হয় আবাহনীর। প্রথম ৪ বলে মোসাদ্দেক নেন ৮ রান। এরপর পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে সব সংশয় দূর করে নিশ্চিত করে ডিপিএলে আবাহনীর আরেকটি শিরোপা। শেষ পর্যন্ত আবাহনীর অধিনায়ক চার ছক্কায় ৫৫ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
শেখ জামালের হয়ে ২ উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া সাকিব আল হাসান, সাইফ হাসান, তৈয়েবুর রহমান ও রিপন মণ্ডল নেন ১টি করে উইকেট। এর আগে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয়া দলটি শুরুটা করে দুর্দান্ত। ১৫ রানেই শেখ জামালের ৩ ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেয় আবাহনীর বোলাররা। আগের রাতেই ঢাকায় ফেরা সাকিব আল হাসান ও সৈকত আলী মিলে শুরুর সেই চাপ সামলান। চতুর্থ উইকেটে দু’জনে মিলে গড়েন ৭২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। ৬৬ বলে ৪১ রান করে সৈকত আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। স্কোরবোর্ডে আরও ২৩ রান যোগ হওয়ার পর দারুণ খেলতে থাকা সাকিবও সাজঘরে ফেরেন। ফেরার আগে ৫৬ বলে ২ চার ও ছক্কায় খেলেন ৪৯ রানের ইনিংস। অথচ ম্যাচের আগের দিনও সাকিবের মাঠে নামা নিশ্চিত ছিল না। এরপর অধিনায়ক নুরুল হাসান ৪১ রানে ফেরার পর দুইশ’র আগে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগে জামালের। কিন্তু এরপর ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালান জিয়াউর রহমান। ৫৮ বলে সমান ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তাতে শঙ্কা কাটিয়ে লড়াকু সংগ্রহ পায় শেখ জামাল। আবাহনীর হয়ে চট্টগ্রাম থেকে উড়িয়ে আনা জুনিয়র সাকিব নেন তিনটি উইকেট। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুলেরও শিকার তিন উইকেট। এ ছাড়া নাহিদুলের শিকার দুটি উইকেট।
তামিম-মুশফিকের ফিফটিতে জয় প্রাইম ব্যাংকের ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে গতকাল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৭ উইকেটে হারায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ফতুল্লায় এদিন গাজী গ্রুপকে ১৮১ রানে আটকে রেখে প্রাইম ব্যাংকের বোলাররা। ৩৬ রানে ৩ উইকেট নেন রাজ, ৪১ রানে ৩টি হাসান মাহমুদ। রান তাড়ায় ৩১.৩ ওভারেই জিতে যায় প্রাইম ব্যাংক। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৭৪ বলে ৭৬ রান করেন তামিম। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। মোহামেডানের রোমাঞ্চকর জয় সুপার লীগে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৮ রানের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বিকেএসপি’র ৪ নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিং করে ২৫৫ রান করে মোহামেডান। মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৮ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ করেন ৫৬ রান। জবাবে ২৪৭ রানে গুটিয়ে যায় শাইনপুকুর।