শেষের পাতা
আনোয়ারের স্বল্প কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করলেন আরিফ
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
সিলেটের বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ৬ মাস আগে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। বিএনপিদলীয় সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পর আওয়ামী লীগ দলীয় এ মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের অনেক কর্মকাণ্ড বেশ প্রশংসিত হয়েছে। কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। এরপরও ভালো’র পাল্লা ভারী। বিশেষ করে হকার পুনর্বাসন করে তিনি নগরের দীর্ঘ দিনের জঞ্জাল দূর করেছেন। অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দূর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। নগরের কয়েকটি কালভার্ট ও ড্রেন নির্মাণ করেছেন। দুই মেরুর বাসিন্দা আনোয়ার ও আরিফ। তবে; সাবেক মেয়রের সঙ্গে আন্তরিকতার কমতি নেই বর্তমান মেয়রের। তার রেখে যাওয়া উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা টানছেন তিনি। রোববার বিকালে সিলেট প্রেস ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন সাবেক ও বর্তমান মেয়র। এ সময় একে অপরের প্রশংসা করেন। বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন; সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। অনেক কাজ রয়েছে। সেগুলো সমাপ্ত করতে তিনি কাজ করছেন। এজন্য তিনি নগরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন। আর অনুষ্ঠানের ফাঁকে অনলাইন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তার বক্তব্যে তিনি প্রশংসা করেছেন বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর। সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বছরের ২১শে জুন। এই সময়ের মধ্যে তিনি তার অন্যতম প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ক্লিন সিলেট ও হকারদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে নগরীকে হকার্স মুক্ত করার কাজে বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন। রাজপথ দখল করে বাণিজ্যের উন্মাদ যন্ত্রণা থেকে এখন নগরবাসী মুক্ত। হকারদের তিনি নিয়ে গেছেন লালদিঘিরপারে। সেখানে তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধার পরিমাণ আগের চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছেন। আর নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার কাজেও আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করছে সিসিক’র পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। আর এ দুটি ব্যাপারে যেমন সচেতন নগরবাসীর দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। তেমনি নজর কেড়েছে সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীরও। তিনি ওই সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, নগরী এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। প্রতিদিনই কাজ হচ্ছে। নালা-নর্দমাগুলো প্রতিদিনই পরিষ্কার করা হচ্ছে। তার দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র পাঁচ মাস হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় সরকারে বর্তমান মেয়রের নতুন যাত্রা। এটিও বুঝতে হবে। তাকে প্রত্যেকটা এলাকা সম্পর্কে জানতে হবে, সমস্যাগুলো বুঝতে হবে। প্রচুর সমস্যা আছে। সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তারপর সমাধান। কাজটি খুব কঠিন। তবে আমি আশাবাদী। আর মন্তব্য করতে হলেও অন্তত একবছর সময় দেয়া দরকার। তিনি বলেন- বর্তমান মেয়রও বলেছেন, অন্যান্য সিটি থেকে আমাদের সিলেটের প্রকল্প গ্রান্ট অনেক কম। এটিও বুঝতে হবে। খাবার পানির সমস্যা সমাধানে আমাদের তিন বছর আগে গৃহীত প্রকল্প অনুমোদন হলে আজ এই সমস্যা থাকতো না। তিনি ব্যবহার করতে পারতেন। আমাদের জলাবদ্ধতা সমস্যাও আছে। তাছাড়া সিটির আয়তনও এখন অনেক বেড়েছে। আমার ছিল মাত্র ২৭টি ওয়ার্ড। আর এখন বেড়ে প্রায় ৪২টি হয়েছে। তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমার চেয়ে প্রশাসনিক সহযোগিতা তিনি বেশি পাবেন বা পাচ্ছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে সরকার প্রধানের সঙ্গে তার একটা গুড রিলেশনশিপ আছে। সেটা আমাদের জন্য একটা বাড়তি প্রাপ্তি। ‘তাকে আমাদের সবাইর সহযোগিতা করা উচিত’- যোগ করেন সাবেক সিসিক মেয়র। ২০১৩ সাল থেকে ১০ বছর সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। ২০২৩ সালে দলীয় বিধিনিষেধ থাকার কারণে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। ২০শে মে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান। আর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন।